সপ্তাহের ব্যবধানে কাঁচাবাজারে বেড়েছে সবজির দাম। প্রতিটি সবজি কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে। সবজির দাম অসহনীয় পর্যায়ে চলে গেছে বলে অভিযোগ করেছেন ক্রেতারা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরবরাহ কম থাকায় দাম বেড়েছে।
শুক্রবার (২৬ জুলাই) সকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজারের পাইকারি ও খুচরা বাজারে বাড়তি দামে সবজি বিক্রি করতে দেখা যায়।
সারা দেশে বন্যা পরিস্থিতির কারণে সবজির উৎপাদন কম হচ্ছে। এ কারণেই সবজির দাম বেড়েছে বলে দাবি করেছেন ব্যবসায়ীরা। অপর দিকে মাছ, মাংস, চাল, আদা, রসুনসহ অন্যান্য নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বাড়েনি বলে জানা গেছে।
কাঁঠালবাগান এলাকার বাসিন্দা জুলহাস উদ্দিন বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, বাজারে সবজির দাম অনেক বেশি। বেগুন, কচুরমুখী ৫০ টাকা কেজি বিক্রি করছে। ভেন্ডি ৪০ টাকায়। আগের সপ্তাহে বেগুন, ভেন্ডি ৩০ টাকা কেজি কিনেছি। পটল গত সপ্তাহে ৪০ টাকা কেজি কিনেছি, আজ ৫০ টাকা চায়। আলু গত সপ্তাহে ৫ কেজি কিনেছিলাম ৮০ টাকা আজকে ১০০ টাকা।
সবজি বিক্রেতা বাবুল বলেন, গত সপ্তাহের চেয়ে এই সপ্তাহে তুলনামূলকভাবে প্রতি কেজিতে ১০-১৫ টাকা বাড়তি। যেমন শসা আমরা ৩৫ টাকা কেজি কিনেছি, বিক্রি করেছি ৪০-৫০ টাকায়। কিন্তু আজকে আমরা কিনেই এনেছি ৪৫ টাকা কেজি, বিক্রি করছি ৫০-৬০ টাকায়। বাজারে সব সবজির দামই বেড়েছে।
সবজির দাম বাড়ার কারণ জানাতে তিনি বলেন, সব এলাকায় বন্যা হচ্ছে, ফসল ডুবে যাচ্ছে, শবজির আবাদ করা যাচ্ছে না। এজন্য দাম বেশি হচ্ছে। বন্যার জন্যই দাম বাড়ছে।
আদা, রসুন, হলুদ পাইকারি ও খুচরা বিক্রি করেন ইয়াকুব। তিনি বলেন, রসুন আগে দাম ছিল ১৬০ টাকা কেজি এখন ১৪৫-১৫০ টাকা কেজি। দুই সপ্তাহ আগে চাইনিজ আদা ছিল ১৪০ টাকা কেজি, এখন ১২৫-১৩০ টাকা কেজি। দেশি আদার দাম বেশি, ২৫০-৩০০ টাকা। হলুদ আগের দামই আছে, শুকনা মরিচ ১৪০-১৫০ টাকা ছিল এখন ১৬০-২০০ টাকা কেজি বিক্রি করছি।
মুরগি ব্যবসায়ী সাইদুল হক বলেন, মুরগির দাম কিছুটা কমেছে এবং আগের মতোই আছে। ব্রয়লার মুরগি ১২৫-১৩০ টাকা কেজি। দেশি মুরগি ৪৫০ টাকা কেজি, পাকিস্তানি লাল মুরগি ২০০ টাকা কেজি।
অন্যদিকে মাছের দামে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের মধ্যে রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। মাছ ব্যবসায়ী মাঈনুদ্দিন বলেন, ইলিশ মাছের দাম কিছুটা কমেছে। এক কেজি সাইজের মাছ ১৩৫০ টাকা থেকে ১৪০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এটা এক সপ্তাহ আগে ছিল ১৬০০ থেকে ১৬৫০ টাকা। অন্যান্য মাছের দামও আগের মতোই আছে। বোয়াল মাছ এখন ৪০০-৫০০ টাকা কেজি, আগে ছিল ৫৫০ টাকা। কোরাল মাছ ৬৫০-৭০০ টাকা কেজি, আগে ছিল ৭৫০-৮০০ টাকা। রুই-কাতলারও দাম নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
পুরান ঢাকার ক্রেতা রাবেয়া আহমেদ বলেন, এখানে মাছের দাম অনেক কম মনে হচ্ছে। যেমন পাঁচ মিশালি মাছগুলো ১০০০ টাকার মধ্যে কিনতাম। কিন্তু এখান থেকে ৩৫০ টাকায় পেলাম।
গ্রিনরোড থেকে আসা ফারজানা আলী রুনা মাছের দাম সম্পর্কে ভিন্নমত পোষণ করেন। তিনি বলেন, ইলিশ মাছের দাম অনেক বেশি। এটার দাম আরও কম হওয়া উচিৎ ছিল, এটা আমাদের দেশের মাছ। একটু কম হলে কেনা যায়। একটা ইলিশ মাছ চাইল ১৩০০ টাকা, আগে ছিল ১১০০ টাকা। পাবদা মাছের দাম কম, কাতল মাছের দাম আগের মতোই রয়েছে। চাল ও গরুর মাংসের দাম আগের মতোই আছে।