চাল, ডাল, পেঁয়াজ ও রসুন এবং নানা রকম সবজির দাম গত সপ্তাহের মতো থাকলেও বেড়েছে মাছের দাম। এতে অস্বস্তিতে পড়তে হচ্ছে ক্রেতাদের।
জানা গেছে, গত দুই থেকে তিন সপ্তাহ ধরে বাজারে মাছের দর চড়া। একই সময়ে বাজারে ইলিশ মাছের যোগান বাড়লেও কমছে না দাম। ইলিশের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে অন্য সব মাছের দামও।
এ বিষয়ে মাছ বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দাম বেশি বলে বছরের এ সময়টায় অনেক ব্যবসায়ী ইলিশ মাছ বিক্রি করেন। এছাড়া ক্রেতাদের পছন্দের তালিকার শীর্ষে ইলিশ থাকায় ব্যবসায়ীরা এ সুযোগ কাজে লাগান। ফলে সব ব্যবসায়ীর ঝোঁক এখন ইলিশের দিকে। তাই অন্য মাছের যোগান কমে গেছে। আর যোগান কমার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে দাম। এছাড়া এবারের বর্ষা মৌসুমে পর্যাপ্ত বৃষ্টি হয়নি দেশে। ফলে মাছের উৎপাদন কম হয়েছে। মাছের দাম বাড়ার এটিও একটি কারণ।
বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর শাহজাদপুর, উত্তর বাড্ডা ও রামপুরা কাঁচাবাজার ঘুরে মাছ বাজারের এ চিত্র চোখে পড়ে।
মাছের খুচরা বাজারের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, তেলাপিয়া ১৬০ টাকা, পাঙ্গাশ ১৭০ টাকা, রুই ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা, শিং ৪৫০ টাকা ও পাবদা ৫৫০-৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ছোট মাছও গত কয়েক সপ্তাহ ধরে চড়া মূল্যে বিক্রি হচ্ছে।
অন্যদিকে এক কেজি ও এক কেজি ২০০-৩০০ গ্রাম ওজনের একেটি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১২শ’ থেকে ১৫শ’ টাকায়। এছাড়া ৮০০-৭০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ সময় ভেদে ৮০০-১০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে ৫০০ ও ৬০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ মাছের দাম কিছুটা কম।
এ বিষয়ে শাহজাদপুর কাঁচাবাজারের মাছ বিক্রেতা মো. জয়নাল বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘ইলিশের মৌসুম এলেই পাল্লা দিয়ে অন্য মাছের দাম বাড়ে। এবারও একই অবস্থা চলছে। ইলিশ মাছ ছাড়া অন্য মাছের যোগানও কমেছে। তাই বাজার কিছুটা চড়া।’
রামপুরা কাঁচাবাজারের মাছ বিক্রেতা মো. হাবিব বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘এখন ব্যবসায়ীরা মাসখানেক ইলিশের ব্যবসা করবেন। সে জন্য অন্য মাছের আমদানি কিছুটা কমে গেছে। বাজারে মাছ কম থাকায় দাম কিছুটা বেশি।’
শাহজাদপুর কাঁচাবাজারে বাজার করতে আসা মো. শহিদ বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘বিক্রেতারা বলছেন, ইলিশ ছাড়া অন্যান্য মাছ কম আসছে বাজারে, তাই দাম বেশি। কিন্তু বাজারে ইলিশ আছে পর্যাপ্ত, তবুও দাম বেশি। আসলে ব্যবসায়ীরা বেশি লাভ করার জন্য ইলিশসহ সব মাছের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন।’
এদিকে খুচরা বাজারে কেজি প্রতি বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়, কাঁচা পেঁপে ২৫ টাকায়, বরবটি ৫০ টাকায়, পটল ৪০ টাকায়, ঢেঁড়স ৩০ টাকায়, চিচিঙ্গা ৪০ টাকায়, গাজর ৫০ টাকায়, কাঁকরোল ৫০ টাকায়, মূলা ৩৫ টাকায়, টমেটো ৭৫ টাকায় ও কাঁচামরিচ ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পেঁয়াজ ৫০-৫৫ টাকা, রসুন ১৪০ টাকা ও আদা ১৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া চাল, ডাল ও তেলের দাম গত কয়েক সপ্তাহের মতোই স্থিতিশীল রয়েছে।
অন্যদিকে মাংসের বাজার রয়েছে অপরিবর্তিত। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৩০-১৩৫ টাকা, লেয়ার মুরগি ১৮০ টাকা, গরুর মাংস ৫৫০ ও খাসির মাংস ৮০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।