জাতীয় রাজস্ব বোর্ডই (এনবিআর) সবচেয়ে বেশি বিতর্কিত বলে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
তিনি বলেন, ‘এনবিআরকে আরো বেশি স্বচ্ছ করতে হবে। এনবিআর স্বচ্ছ হলে বাংলাদেশের সব খাত স্বচ্ছ হবে। এটা আমাদের সবার বিশ্বাস। এনবিআরই সবচেয়ে বেশি বিতর্কিত। কারণ মানুষ এখানে ভয়ে আসে না। ট্যাক্স দেয় না। আমরা নিতে চাই না। নিতে চাইলেও বলি, সরকারকে না দিলে চলবে।’
রোববার (১৩ অক্টোবর) রাজধানীর সেগুন বাগিচায় এনবিআরের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত আয়কর এবং শুল্ক ও ভ্যাট বিভাগের রাজস্ব সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এতে সভাপতিত্ব করেন এনবিআর চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া। এ সময় এনবিআরের সদস্যরাসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় চলতি অর্থ বছরের প্রথম তিন মাসের রাজস্ব আহরণ কমার কারণ ব্যাখ্যা দেওয়া হয়। আগামীতে আর ব্যাখ্যা দেওয়ার কোনো অবকাশ নেই বলে হুঁশিয়ার করে দিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘রাজস্ব আহরণ ভালো করছেন না খারাপ করছেন, তা বোঝা যাবে আগামী তিন মাস পর। গত বছর টার্গেট পূরণ করতে পারেননি। আশা করছি, এ বছর পূরণ করতে সক্ষম হবে এনবিআর।’
‘পৃথিবীর কোনো দেশেই পাওয়ার সেক্টরকে সম্পূর্ণ কর মওকুফের আওতায় রাখা হয়নি। শুধু তাই নয়, কিছু একটা উসিলা পেলে যে কোনো সেক্টরকে ট্যাক্স এক্সজাম্পশন দিয়ে দেই। ঢালাওভাবে বাংলাদেশের মত অন্য কোনো দেশে এতো সেক্টরকে ট্যাক্স এক্সজাম্পশন দেওয়া হয় না,’ যোগ করেন মন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘২০১৮-১৯ অর্থ বছরের বাজেটে যা আছে, তা ভালো করে পড়ুন, দাঁড়ি-কমাসহ হুবহু পালন করবেন। তার বাইরে এসে কোনো সেক্টরের কর সুবিধার জন্য সার্কুলার জারি করবেন না। কাউকে কর ছাড় দেবেন না। প্রয়োজন হলে আগামী বাজেটে তা সংশোধন করা হবে। তারপরও এ বাজেটের বাইরে কোনো পরিবর্তন করবেন না প্রধানমন্ত্রীর সম্মতি ছাড়া। কারণ বাজেট বাস্তবায়ন করতে হলে রাজস্ব আহরণের বিকল্প নেই। রাজস্ব আহরণ না হলে সরকারের উন্নয়ন পিছিয়ে যাবে। বাজেটে কি এমন কিছু আছে যে দেশের মানুষ, অর্থনীতির জন্য হুমকি? সুতরাং সবার সম্মতিতে বাজেট পাশ হয়েছে। আপানারা তা পালন করবেন।’
সংশ্লিষ্ট সবাইকে রেভিনিউ অর্জনের লক্ষ্যে কাজ করার নির্দেশনা দিয়ে আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ‘দেশের চার কোটি মানুষ কর যোগ্য। কিন্তু কর দেয় না। তাদের চিহিৃত করেন। তাদের বিরুদ্ধে কঠোর হন। প্রয়োজনে আরো এক লাখ লোক নিয়োগ করেন। শুধু তাই নয়, রিটার্নধারী অনেকেই আছেন, কর যোগ্য, কিন্তু কর দেন না। তাদের করের আওতায় আনেন। এছাড়াও যেসব লোক দেশের বাইরে গিয়ে শপিং করেন, অথচ কর দেন না, তাদের খুঁজে বের করে করের আওতায় আনেন।’