প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায়ও জীবন বিমা কাজে লাগতে পারে, বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে। তাই প্রাকৃতিক বিপর্যয় জনিত ঝুঁকি মোকাবিলায় বিমা ব্যবস্থা চালুর নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেছেন, প্রাকৃতিক বিপর্যয় জনিত ক্ষতি মোকাবিলায় বাংলাদেশে বিমা প্রয়োগ এখনো কিন্তু তেমন নেই। আমি আশা করি, বিমার সঙ্গে সম্পর্কিত যারা আছেন, তারা এ ব্যাপারে যথাযথ ভূমিকা পালন করবেন। যাতে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঝুঁকিতে থাকা মানুষগুলো বাঁচতে পারে।
মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে ১৫তম আন্তর্জাতিক ক্ষুদ্রবিমা সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ নির্দেশনা দেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা চাচ্ছি, স্বল্প আয়ের মানুষ কিংবা ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের আর্থিক ক্ষতি মেটাতে এবং তাদের জীবনকে নিরাপদ করতে। বিশেষ করে জলবায়ু জনিত ঝুঁকি মোকাবিলার জন্য তাদের বিশেষ বিমার স্কিম করে দিলে তারা অনেকটা নিশ্চিন্ত থাকতে পারবে।নতুন এ পদক্ষেপে শুধু বাংলাদেশ নয়, বরং যেসব দেশে বদ্বীপ রয়েছে, সেসব দেশের জনগণও লাভবান হবে। কোনো কোনো দেশে এ জাতীয় ব্যবস্থা আগেই নেওয়া হয়েছে। আমাদের দেশেও আমরা নিতে পারি। উৎপাদন ও অর্থনীতিকে ঝুঁকিমুক্ত করতে বিমা কোম্পানিগুলোকে আরও কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে, যোগ করেন তিনি।
বিমা কোম্পানিগুলোর মালিকদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শুধু মুনাফা অর্জনের দিকে না তাকিয়ে সমাজের প্রতি যে দায়বদ্ধতা আছে, সেদিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি দেবেন। বিমা শিল্পকে মানবিক কাজে লাগানো একান্তভাবে অপরিহার্য।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী বিমা শিল্পের উন্নয়নে আওয়ামী লীগ সরকার গৃহীত নানা পদক্ষেপের কথাও তুলে ধরেন।
নিজেকে বিমা পরিবারের সদস্য মনে করেন জানিয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৫৮ সালের ৭ অক্টোবর মার্শাল ল জারি হয়। আর ১২ অক্টোবর বঙ্গবন্ধুসহ অনেক নেতাকে গ্রেফতার করা হয়। দীর্ঘ ১৪ মাস কারাগারে থাকার পরে ১৯৫৯ সালের ১৭ ডিসেম্বরে তিনি মুক্তি লাভ করেন। তখন সব দল নিষিদ্ধ ছিল, রাজনীতিও নিষিদ্ধ ছিল। যার ফলে তিনি আলফা ইনস্যুরেন্স কোম্পানির আঞ্চলিক শাখার প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেন। বলতে গেলে জীবনের প্রথম চাকরি জীবন তার শুরু হয়। আমাদের জন্য এটুকু সৌভাগ্য ছিল যে আমরা আমাদের বাবাকে খুব আপন করে কাছে পাই। তিনি যে তখন আলফা ইনস্যুরেন্স কোম্পানিতে চাকরি নিয়েছিলেন, সে সুবাদে বলব, আমিও এ পরিবারেরই একজন সদস্য।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব আশাদুল ইসলাম, ইনস্যুরেন্স ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড রেগুলেটরি অথরিটির চেয়ারম্যান শফিকুর রহমান পাটোয়ারী, মাইক্রো ইনস্যুরেন্স নেটওয়ার্কের চেয়ারম্যান ডরবেল চ্যাম্বেলিন ও মিউনিক রিফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান টমাস লোস্টা। সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ইনস্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শেখ কবীর হোসেন।