বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনে (বিইআরসি) শুরু হচ্ছে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির ওপর গণশুনানি। প্রথম দিনে রয়েছে পাইকারি দর ও সঞ্চালন খরচের প্রস্তাবের ওপর শুনানি।
বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) থেকে শুরু হবে এই গণশুনানি। শুক্র, শনি সপ্তাহিক ছুটির পর আবার রোববার থেকে টানা তিনদিন চলবে গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির প্রস্তাবের ওপর গণশুনানি।
এ শুনানিতে অংশ নিয়ে যে কারো মতামত কিংবা আপত্তি দেওয়ার সুযোগ রয়েছে। প্রথম দিনের শুরুতে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) পাইকারি দাম বৃদ্ধির প্রস্তাবের ওপর গণশুনানি নেওয়া হবে।
বিপিডিবি'র প্রস্তাবে উল্লেখ করেছে এলএনজি আমদানির কারণে গ্যাস দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যয় ৪১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ খাতে মোট ব্যয় বাড়বে ২ হাজার কোটি টাকা। এ ছাড়া কয়লার ওপর ভ্যাট আরোপ করায় কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুতের ব্যয় বেড়ে যাবে। সব মিলিয়ে আসছে ২০২০ সালে বর্তমান দর অনুযায়ী পাইকারি বিদ্যুৎ বিক্রি করলে ৯ হাজার ৫৫২ কোটি টাকা লোকসান হবে। যে কারণে বিদ্যুতের পাইকারি দর ৫ দশমিক ৮৮ টাকা করা প্রয়োজন।
প্রস্তাবে উল্লেখ করা হয়েছে পাইকারি বিদ্যুতের দর ২০১৭ সালের নভেম্বরে ৮ পয়সা কমিয়ে ৪.৮৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়। তখন গড় ব্যয় ছিলো ৫ টাকা ৪৪ পয়সার মতো। বিইআরসি ৬০ পয়সা হারে ভর্তুকি দেওয়ার আদেশ প্রদান করেছিল। নতুন প্রস্তাবে ভর্তুকির বিষয়ে কিছুই বলা হয়নি। সরকারি পুরো টাকা তুলে নেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। বিগত বছরগুলোতে এমন প্রস্তাবের পাশাপাশি বিকল্প সংস্থান হিসেবে ভর্তুতির প্রস্তাব রাখা হতো।
বিপিডিবি তার প্রস্তাবে আরও উল্লেখ করেছে, বিতরণ কোম্পানিগুলোর গড় রেট বিবেচনা করে দেখা গেছে ডিপিডিসি ইউনিট প্রতি ৭.৬৭ টাকা, ডেসকো ৭.৮০ টাকা, বিপিডিবি ৬.৯৪ টাকা, ওজোপাডিকো ৬.৮৯ টাকা, পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড ৬.৩৪ টাকা ও নেসকো ৬.৬০ টাকা হারে দর আদায় করছে। এ বিষয়গুলো বিবেচনায় নেওয়া প্রয়োজন।
ডেসকো ৫.০৬ শতাংশ হারে দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব করেছে। অন্যদিকে ডিপিডিসি প্রস্তাবে বলেছে ২০১৯-২০ অর্থবছরে নীট রাজস্ব প্রয়োজন ১৪৮ কোটি টাকা। অপরেশন এন্ড ব্যবস্থাপনা খরচ ৮০ পয়সা থেকে বাড়িয়ে এই টাকা সমন্বয় করা প্রয়োজন। নতুন করে সঞ্চালন ও পাইকারি দাম বৃদ্ধি হলে সমন্বয় করার প্রস্তাব নিয়ে এসেছে।
সবচেয়ে বড় এই বিতরণ সংস্থা পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড প্রস্তাবে বলেছে, বিগত অর্থ বছরে ব্রেক-ইভেনে ছিলো। চলতি অর্থ বছরেও ব্রেক-ইভেনে থাকবে। নতুন করে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রয়োজন নেই। তবে পাইকারি বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি হলে দাম সমন্বয় প্রয়োজন পড়বে।