আমাদের কথা বুঝতে না পারলে বলতে পারতেন, আমরা বুঝিয়ে দিতাম। আর যদি আমাদের কথা ভুল হয়ে থাকে তাহলে বুঝিয়ে দিতে পারতেন। এভাবে চললে আবার আদালতে যাওয়া ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না।
রোববার (১ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির প্রস্তাবের উপর গণশুনানিতে এমন আক্ষেপ প্রকাশ করেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শামসুল আলম।
তিনি বলেন, আমরা শুধু প্রস্তাব দিয়ে যাবো, আপনারা ফেলে দেবেন। আর আমরা বারবার কোর্টে যাবো, এভাবে চলতে পারে না। এখানে এসে দু'বেলা না খেয়ে থাকতে পারি। কিন্তু কোর্টে গেলে লাখ লাখ টাকা খরচ করবো কিভাবে। আমাদের যুক্তিগুলো গ্রহণ করা হোক। আমি যাদের কথা বলছি তাদের পয়সায় বিইআরসিসহ সকলের বেতন হয়। কিন্তু তাদের যাবার জায়গা নেই।
শামসুল আলম ইজিবাইকের বিদ্যুতে দাম কম রাখার পক্ষে যুক্তি দিয়ে বলেন, এসব যানবাহন সাধারণ জনগণ ব্যবহার করে। তাদের জীবনমান বাড়ানোর প্রয়োজন রয়েছে। তাদের ক্ষেত্রে যদি ব্যাপক দর বাড়ানো হয় তাহলে সেটা হবে দুঃখজনক।
তিনি বিইআরসির কাছে প্রশ্ন রাখেন বিপিডিবি দেওয়া ২০১৭ সালের নির্দেশনা পালন করছেন কি না, এবং তাতে বিইআরসি সন্তুষ্ট কি না। জবাবে বিইআরসি কারিগরি কমিটি না সূচক জবাব দেন।
শামসুল আলম বিপিডিবির দাম বৃদ্ধির প্রস্তাবে বেশ কিছু অসঙ্গতি তুলে ধরেন।
এদিন গণশুনানিতে অংশ নিয়ে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, অপচয় দুর্নীতি, লুটপাটের মহোৎসব করা হচ্ছে। এর দায় কেনো জনগণ বহন করবে। আমি মনে করে যেভাবে চাল, ডাল, পেয়াজ লবণসহ সব ধরনের পণ্যের দাম বাড়ছে, নতুন করে জনগণের উপর বোঝা চাপানো উচিত হবে না। আমি মনে করি দাম বাড়ানোর পরিবর্তে কমানোর যথেষ্ট যৌক্তিকতা রয়েছে। আশাকরি বিইআরসি সেদিকে নজর দেবেন।
আলাল বলেন, আমি ২৮ নভেম্বর শুনানিতে বলেছিলাম কারাগারে না গেলে আবার আসবো। আমার সঙ্গে এবিএম মোশাররফ হোসেন এসেছিলেন। তাকে পুলিশ প্রেসক্লাব থেকে গ্রেফতার করেছে। আমি যতবার গ্রেফতার হয়েছি প্রত্যেকবার পুলিশকে বলেছি আমারতো কোনো মামলা নেই। পুলিশ জবাব দিয়েছে চলেন মামলা কতটা লাগে দিয়ে দিচ্ছি।
সরকারের ঘনিষ্ঠ কিছু কোম্পানিকে উচ্চদরে কাজ দেওয়া হচ্ছে। এতে ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে। এসব দুর্নীতি রোধ করা জরুরি বলে মন্তব্য আলাল।
তার নিজের একটি ঘটনার উদাহরণ দিয়ে বলেন, আমার বাসার সামনে ট্রান্সফরমারের ফিউজ কেটে যায়। আমি ফোন করলে দ্রুত হাজির হয়। কিন্তু সাড়ে ৭ হাজার টাকার বিল ধরিয়ে দেয়। এখানে আমার দায় কোথায়। আমি এখানে এসে অভিযোগ জানালাম, না হলে কোর্টে যতে বাধ্য হবো।
সিপিবি, জিএমইএ সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতারা বিদ্যুতের দাম না বাড়ানোর পক্ষে মতামত দেন।
গণশুনানিতে বিপিডিবি তাদের প্রস্তাবে বলেছে, পাইকারি বিদ্যুতের দাম না বাড়লে দাম বাড়ানোর প্রয়োজন নেই। যদি পাইকারি দাম বাড়ে তাহলে পাস-থ্রু করে দেওয়ার জন্য।