প্রতিবারের মতো এবারও বছরের প্রথম দিন থেকে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা শুরু হয়েছে। তবে মেলার তৃতীয় দিনেও চলছে স্টল নির্মাণ ও মেলা প্রাঙ্গণের ভেতরে রাস্তার সংস্কার কাজ।
অন্যান্য বছর শুরু থেকেই তুলনামূলক গোছানো মনে হলেও এবারের বাণিজ্যমেলা অনেকটাই অগোছালো। মেলা প্রাঙ্গণের ভেতরকার সবগুলো রাস্তার সংস্কার কাজ এখনও চলছে।
সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবারেও (০৩ জানুয়ারি) ক্রেতা-দর্শনার্থীদের ভিড় চোখে পড়েনি বাণিজ্যমেলা প্রাঙ্গণে। এদিন সকাল থেকে রাজধানীতে বৃষ্টি হওয়ায় স্টলগুলো ছিল ক্রেতা সমাগমহীন।
মাসব্যাপী ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা জমে উঠতে মধ্য জানুয়ারি পর্যন্ত সময় লাগবে বলে ধারণা করছেন বিক্রেতারা। এ কারণে অনেক বিক্রেতাই পুঁজি হারানোর শঙ্কা করছেন।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন এবার মেলার প্রধান অন্তরায় হতে পারে মেট্রোরেলের নির্মাণ কাজ। গত বছর মেলার সময় আগারগাঁও, মিরপুর পর্যন্ত নির্মাণ কাজ থাকলেও এবার মেট্রোরেলের নির্মাণ কাজ গুলিস্তান পর্যন্ত গড়িয়েছে। ফলে পুরো রাজধানীজুড়ে রয়েছে তীব্র যানজট। আর এ কারণে ক্রেতা-দর্শনার্থীরা যানজট ঠেলে মেলায় আসতে আগ্রহ হারাতে পারেন।
বাণিজ্যমেলা প্রাঙ্গলে অস্থায়ী শিশুপার্ক বসিয়েছেন সাইফুল ইসলাম বাদশা। প্রথম দুই দিনে মেলায় দর্শনার্থীদের উপস্থিতিতে পুরোপুরি হতাশ তিনি।
বার্তা২৪.কমকে বাদশা বলেন, মেলায় মানুষ আসছে না। এখনও মেলা পুরোপুরি শুরু হয়নি। তাতেই গুলিস্তান থেকে আসতে ৩ ঘণ্টা লেগে যাচ্ছে, মেলা জমে উঠলে মানুষ তো আসতেই পারবে না!
তিনি বলেন, এবার মেলায় শিশুপার্ক দিয়ে চিন্তায় আছি পুঁজি ওঠাতে পারব কি না। মেলায় মানুষ না এলে আমাদের ব্যবসা হবে কিভাবে?
এখনও যে বাণিজ্যমেলা অগোছালো তার প্রমাণ মিললো ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্নতা পরিদর্শক আমিনুর রহমান বিশ্বাসের কথায়।
তিনি বলেন, এখনও অসম্পূর্ণ বাণিজ্যমেলা। অর্ধেক স্টলই প্রস্তুত হয়নি। আমরা ময়লা পরিষ্কার করে যাই কিছুক্ষণ পরই স্টল নির্মাণ কাজের কারণে মেলা প্রাঙ্গণ ময়লা হয়ে যাচ্ছে। যারা স্টল নিয়েছেন তাদের গাফিলতির কারণে মেলার সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে।
মেলায় তিন শিফটে সিটি কর্পোরেশনের ১৩০ জন পরিচ্ছন্নতাকর্মী কাজ করছে। সকালে ১০টার মধ্যে এক দফা পরিস্কার করে দুপুরে ও বিকেলে আবার মেলা প্রাঙ্গণ পরিষ্কার করা হয় বলে জানান তিনি।
তবে বাণিজ্যমেলা এখনও যে অগোছালো সেটা মানতে নারাজ ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার আয়োজক সংস্থা রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)।
সংস্থাটির সহকারী সচিব মোহাম্মদ আবদুর রউফ বার্তা২৪.কমকে বলেন, আমাদের সার্বিক প্রস্তুতি ৯৫ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। যে ৫ শতাংশ বাকি আছে তা আগামী ৭ দিনের মধ্যে শেষ হবে। মেলা শুরুর দিকে একটু অগোছালোই মনে হয়। সপ্তাহ গেলে মানুষ আসবে জমজমাট হবে। আর এবার ৫০ শতাংশ খোলা জায়গা রাখায় ফাঁকা ফাঁকা মনে হচ্ছে।