ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার আজ পঞ্চম দিন। দুপুর থেকেই মেলায় আসতে শুরু করে দর্শনার্থীরা। মাসব্যাপী এ মেলার পণ্য কেনাবেচা এখন পর্যন্ত না জমে উঠলেও, স্টলগুলো ঘুরে দেখছেন ক্রেতা দর্শনার্থীরা। পছন্দ হলে টুকটাক কিনেও ফেলেছেন। অনেকেই আবার পছন্দ করে রাখছেন পরে কেনার উদ্দেশ্যে। এবারের মেলায় অন্যান্য স্টলের তুলনায় বিদেশি প্যাভিলিয়নগুলোর পণ্যের প্রতি ক্রেতাদের আকর্ষণ বেশি দেখা গেছে।
গতকাল (৪ জানুয়ারি) থেকে কার্যক্রম শুরু হওয়া বেশ সাজানো গোছানো তুর্কি প্যাভিলিয়নের প্রতি আকর্ষণ লক্ষ করা গেছে ক্রেতা-দর্শনার্থীদের। বিদেশি এ প্যাভিলিয়নে আকর্ষণীয় মূল্যে ল্যাম্প আর সিরামিকসের বিভিন্ন পণ্য পাওয়া যাচ্ছে।
প্রায় ৯-১০ রকমের পণ্য আলাদা আলাদা ভাগে পুরো প্যাভিলিয়ন জুড়ে স্থান পেয়েছে। এর মধ্যে ব্যাগ, জুতা, সিরামিকস ক্রোকারিজ, কসমেটিকস, বাহারি ল্যাম্প, ওয়াল হ্যাংগিং, ফুড আইটেমসহ বিভিন্ন পণ্য। প্যাভিলিয়নে ঢুকতেই দর্শনার্থীদের চোখ আটকে যাচ্ছে চোখের মনির আকৃতির নীলরঙা পণ্যগুলোর দিকে। টার্কিশরা যা ইভিল আই (শয়তানের চোখ) বা গুডলাক (সৌভাগ্য) হিসেবে বিশ্বাস করে। এই জিনিস বাড়িতে থাকলে শয়তানের কুদৃষ্টি থেকে বাঁচা যায় বলে মনে করেন তারা।
ইভিল আই দিয়ে তৈরি দেয়াল ঘড়ি, ওয়াল হ্যাংগিং, ব্রেসলেট, ফ্রিজের চুম্বক, চাবির রিং সহ বিভিন্ন রকম পণ্য দোকানটিতে শোভা পেয়েছে। বিক্রি হচ্ছে সর্বোচ্চ ৪ হাজার টাকা থেকে সর্বনিম্ন ২০০ টাকার পণ্য। দর্শনার্থীরা অনেকেই একে গুডলাক হিসেবেই কিনছেন আবার অনেকেই দেখতে আকর্ষণীয় বলে কিনছেন।
প্যাভিলিয়নে এই পণ্যের দায়িত্বে থাকা রাজু বলেন, প্রতি বছর এই এক মাস মেলায় আমি তুর্কিস্তানের প্যাভিলিয়নের এই পণ্যের দায়িত্বে থাকি। ১৩ বছর ধরেই যুক্ত আছি। আমরা কাল থেকে কার্যক্রম শুরু করেছি। গতকাল প্রায় ৩০ হাজার টাকার এই পণ্য বিক্রি করেছি। দেখতে সুন্দর বলে দর্শনার্থীরা এতে আকর্ষণ বোধ করে।
এ পণ্যের বিশেষত্ব সম্পর্কে জানতে চাইলে এই বিক্রেতা বলেন, তুর্কিস্তানের স্থানীয়রা বিশ্বাস করেন এটি ঘরে থাকলে সব রকম কুনজর থেকে বাঁচা যায়। তারা এটাকে ইভিল আই বলে। সেখানে প্রত্যেকের ঘরে এই জিনিস থাকে।
ইসরাত নামে আরেক দর্শনার্থী বলেন, আমি শুনেছি এটা গুডলাক হিসেবে ব্যবহার করা হয়। দেখতে আকর্ষণীয় তাই কিনতে চাচ্ছি।
অন্যদিকে এ প্যাভিলিয়নের ল্যাম্পের রঙিন আলোর রাজ্যে দর্শনার্থীদের ভিড় একটু বেশি। কেউ কিনছেন তো কেউ ছবি তুলছেন। আবার কেউ দেখে যাচ্ছেন অন্য কোনো দিন এসে কিনবেন। ২০ শতাংশ ছাড়ে সর্বোচ্চ ১ লাখ এবং সর্বনিম্ন ১ হাজার টাকা মূল্যের ল্যাম্প বিক্রি হচ্ছে।
এ প্যাভিলিয়নের ল্যাম্পের দায়িত্বে থাকা আবদুল কুদ্দুস বলেন, কালকে আমরা বেচাকেনা শুরু করেছি দুই দিনে মোটামুটি ভালই বিক্রি হয়েছে। তবে আরও এক সপ্তাহ গেলে বিক্রি বাড়বে বলে আশা করছি।
ল্যাম্প কিনতে আসা এক দর্শনার্থী বলেন, এই প্যাভিলিয়নের ল্যাম্পগুলো অত্যন্ত আকর্ষণীয়। এগুলো দেখতেই ভালো লাগে। দেখছি পছন্দ হলে কিনবো। যদিও দাম একটু বেশি।