চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে (জুলাই-নভেম্বর) ৮৩ হাজার ৬৯১ কোটি ৯৬ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় করেছে জাতীয় রাজস্ব র্বোড (এনবিআর)। লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী রাজস্ব আদায় হওয়ার কথা ছিল এক লাখ ১০ হাজার ৫৬৮ কোটি টাকা।
অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ২৬ হাজার ৮৭৬ কোটি ৫৭ লাখ টাকা রাজস্ব ঘাটতি রয়েছে বছরের প্রথম পাঁচ মাসে। মাস যতই যাচ্ছে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ থেকে ততই পিছিয়ে পড়ছে এনবিআর। এনবিআরের পরিসংখ্যান মতে, পাঁচ মাসে এনবিআরের রাজস্ব আহরণ প্রবৃদ্ধি হয়েছে পাঁচ দশমিক শূন্য ছয় শতাংশ হারে। যা গত অর্থবছরের একই সময় ছিল সাত দশমিক শূন্য পাঁচ শতাংশ।
পরিসংখ্যান অনুসারে, প্রায় ২৭ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব ঘাটতির মধ্যে আমদানি-রফতানি পর্যায়ে রাজস্ব ১০ হাজার ৮৫১ কোটি ৭০ লাখ, স্থানীয় পর্যায়ে ভ্যাট ১০ হাজার ১৫৬ কোটি ২২ লাখ ও আয়কর-ভ্রমণ কর ঘাটতি রয়েছে পাঁচ হাজার ৮৬৮ কোটি ৬৫ লাখ টাকা।
রাজস্ব আদায় কম হওয়ার জন্য প্রথমে নতুন ভ্যাট আইনকে দায়ী করে এনবিআর। এখন ভ্যাট আহরণের পরিমাণ বাড়লেও ঘাটতি বেড়েই চলেছে।
সংশ্লিষ্টরা বলেন, সঠিকভাবে মনিটরিং আর ফাঁকি রোধে কার্যকর ব্যবস্থা না নেওয়ায় রাজস্ব আদায় কমছে লাফিয়ে লাফিয়ে।
চলতি অর্থবছর রাজস্ব আহরণ বিগত ২৬ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে রয়েছে।
এনবিআরের তথ্য মতে, চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথম মাসে ভ্যাট বেশি আদায় হয় পাঁচ হাজার ৮৪৭ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। আর প্রবৃদ্ধি হয় ১৮ দশমিক ৩২ শতাংশ। প্রথম মাসে ভালো প্রবৃদ্ধি অর্জিত হলেও পরের মাস থেকে আহরণ কমতে থাকে। এ ক্ষেত্রে নতুন আইনকে দায়ী করা হয়। নতুন আইন নিয়ে করদাতারা অনেকটা ধোঁয়াশার মধ্যে পড়ে যান। দিন গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে রাজস্ব আদায়ে এর প্রভাব পড়তে শুরু করে। অর্থবছরের দ্বিতীয় মাস আগস্টে ভ্যাট আহরণ হয় ১১ হাজার ১৯৯ কোটি ৫৪ লাখ টাকা, যা সেই মাসের লক্ষ্যমাত্রার তিন হাজার ৮৫৭ কোটি ৮১ লাখ টাকা কম। আর প্রবৃদ্ধি হয় এক দশমিক শূন্য দুই।
সেপ্টেম্বরে আহরণ হয় ১৭ হাজার ৩৭৩ কোটি ৪৭ লাখ টাকা, যা লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ছয় হাজার ৪২৯ কোটি ১৭ লাখ টাকা কম। আর প্রবৃদ্ধি হয় মাইনাস শূন্য দশমিক ৮৬ শতাংশ। অক্টোবর মাসে আহরণ হয় ২৪ হাজার ৭৫১ কোটি ৫৭ লাখ টাকা, যা লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় আট হাজার ২৫৮ কোটি ৬২ লাখ টাকা কম। আর প্রবৃদ্ধি এক দশমিক ৭৯ শতাংশ। নভেম্বর মাসে ভ্যাট আহরণ হয় ৩২ হাজার ৭৭০ কোটি টাকা, যা লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ১০ হাজার ১৫৬ কোটি ২২ লাখ টাকা কম। আর প্রবৃদ্ধি হয় তিন দশমিক ৫৯ শতাংশ।