দেশে বিশ্বমানের একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ শিপবিল্ডিং ইয়ার্ড নির্মাণ ও সংশ্লিষ্ট খাতে অত্যাধুনিক ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ শিল্প স্থাপনে বিনিয়োগ করবে নেদারল্যান্ডের বিখ্যাত জাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ডামেন গ্রুপ ও সিঙ্গাপুরের উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান জেন্টিয়াম সল্যুশনস।
প্রতিষ্ঠান দু’টির সমন্বয়ে গঠিত যৌথ উদ্যোগ দ্যা জেন্টিয়াম-ডামেন কনসোর্টিয়াম রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল করপোরেশনের (বিএসইসি) সঙ্গে যৌথ বিনিয়োগে পটুয়াখালী জেলার চরনিশানবাড়িয়া মৌজায় এ প্রকল্প বাস্তবায়নে আগ্রহী।
মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) শিল্প মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বিএসইসির সঙ্গে দ্যা জেন্টিয়াম-ডামেন কনসোর্টিয়ামের এক সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। বিএসইসির পক্ষে সংস্থার সচিব ইঞ্জিনিয়ার আবুল খায়ের সরদার, ডামেন গ্রুপের পক্ষে প্রতিষ্ঠানটির এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের পরিচালক রোল্যান্ড ব্রিনি এবং জেন্টিয়াম সল্যুশনসের পক্ষে প্রতিষ্ঠানটির কো-চেয়ারম্যান ইকতেদার হাসান মুরাদ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।
এ চুক্তির আওতায় প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট এলাকায় প্রাক-সমীক্ষা যাচাই করা হবে। এর ভিত্তিতে দ্রুত যৌথ বিনিয়োগে শিপবিল্ডিং ইয়ার্ড নির্মাণ ও সংশ্লিষ্ট খাতে অত্যাধুনিক ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ শিল্প স্থাপন করা হবে।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন- শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, শিল্পসচিব আবদুল হালিম, বাংলাদেশে নেদারল্যান্ডের ডেপুটি হেড অব মিশন জেরোয়েন স্টেগস্সহ শিল্প মন্ত্রণালয়, বিএসইসি এবং চুক্তি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
উল্লেখ্য, দেশের দক্ষিণ অঞ্চলে কর্মসংস্থান ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড জোরদার করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় পায়রা সমুদ্র বন্দরের কাছাকাছি পটুয়াখালী জেলার চরনিশান বাড়িয়ার মৌজায় জাহাজ নির্মাণ ও রিসাইক্লিং শিল্পজোন ঘোষণা করা হয়েছে। ১০৫ একর জমির ওপর এ শিল্পজোনে জাহাজ নির্মাণ এবং সংশ্লিষ্ট ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ শিল্প গড়ে তোলা হচ্ছে।
বিশ্ব অর্থনৈতিক তথ্য বিশ্লেষণী সংস্থা ‘বিজনেস ওয়্যার’র হিসাব অনুযায়ী ২০২৬ সাল নাগাদ সারা পৃথিবীতে জাহাজ ক্রয়খাতে ৬৫০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি খরচ হবে। জাহাজ ক্রয়ের ক্ষেত্রে পরিবেশবান্ধব জাহাজ বিশ্ব চাহিদার শীর্ষে থাকবে। একই সময়ে সমুদ্রগামী ছোট জাহাজ ও ভ্যাসেল শিল্পের বিশ্ব চাহিদা বেড়ে প্রতিবছর ৪০০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হবে। বিশ্ব জাহাজের মোট চাহিদার ১ শতাংশ যোগান দিতে পারলেও বাংলাদেশ এখাত থেকে বছরে কমপক্ষে ৪ বিলিয়ন ডলার আয়ে সক্ষম হবে। একই সঙ্গে পরিবেশবান্ধব সবুজ জাহাজ নির্মাণ শিল্প বিকাশের মাধ্যমে এসডিজি ২০৩০, রূপকল্প ২০৪১ এবং ডেল্টা পরিকল্পনা ২১০০ এর লক্ষ্যগুলো অর্জন সহজ হবে।