বাজারে পর্যাপ্ত দেশি পেঁয়াজ থাকার পরও পেঁয়াজের দাম এখনও ১০০ টাকা ওপরেই রয়েছে। কেজি প্রতি দেশি পেঁয়াজ ১৪০ টাকায়, বার্মিজ পেঁয়াজ ১৩০ টাকায় এবং পাকিস্তানি পেঁয়াজ ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ১৫ দিন আগেও পেঁয়াজের দাম ছিল ১০০ টাকার ওপরে।
সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজার ঘুরে এমন চিত্রই দেখা যায়।
সবজির বাজার ঘুরে দেখা যায়, শীতকালীন সবজির দাম মোটামুটি গত সপ্তাহের মতই আছে। পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকায় দাম বাড়েনি সবজির। বাজারে প্রতি পিস বড় ফুলকপি ও বাঁধাকপি ৩০ টাকা করে, কাঁচকলা হালি ৪০ টাকা, লাউ ৮০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৩০ টাকা এবং পেঁয়াজের কলি ১০ টাকা আঁটি বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতি কেজি নতুন আলু বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকায়, মুলা ৩০ টাকায়, শালগম ৪০ টাকায়, বরবটি ৫০ টাকায়, কচুর লতি ৬০ টাকায়, বেগুন ৬০ থেকে ৭০ টাকায়, শিম ৫০ টাকায়, কাঁচা পেঁপে ৩০ টাকায়, টমেটো ৫০ টাকায়, কাঁচা মরিচ ১২০ টাকায়, গাজর ৫০ টাকায়, করলা ১১০ টাকায় এবং শসা ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সাপ্তাহিক বাজার করতে আসা মো. ইমরান শেখ বার্তা২৪.কমকে বলেন, বাজারে প্রতিটা জিনিসের দাম বাড়তি। সকাল, বিকেল আর সন্ধ্যায় বাজারে পণ্যের দাম একেক রকম চান ব্যবসায়ীরা। কোনো পণ্যই ন্যায্যমূল্যে কিনতে পারি না। যথাযথ নজরদারি না থাকায় এমনটা হচ্ছে।
এদিকে মাংসের বাজারে দেখা যায়, গত সপ্তাহের মত মাংসের দাম একই রকম রয়েছে। প্রতি কেজি গরুর মাংস ৫৫০ টাকা, খাসির মাংস ৯০০ টাকা এবং বকরির মাংস ৮০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়ে প্রতি কেজি ১২০ থেকে ১২৫ টাকা, কক মুরগি ১৮০ টাকা, পাকিস্তানি মুরগি ২২০ টাকা, দেশি মুরগি ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা, পাতি হাঁস প্রতি পিস ৬০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
কারওয়ান বাজারের মাংস ব্যবসায়ী রাসেল বার্তা২৪.কমকে বলেন, চাহিদা বেশি আর যোগান কম থাকায় শীতে খাসির মাংসের দাম কিছুটা বেশি। তবে গরুর মাংসের দাম আগের মতই রয়েছে।
মাছের বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি তেলাপিয়া ১৮০ টাকা, কৈ ১৮০ টাকা, শিং ৬০০ টাকা, টেংরা ৫০০ টাকা, সরপুঁটি ২০০ টাকা, বড় সাইজের রুই ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা, সাইজ ভেদে চিংড়ি ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা, রূপচাঁদা ৮০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে বাজারে পর্যাপ্ত ইলিশ থাকা সত্ত্বেও এ সপ্তাহে দাম কিছুটা বাড়তি। প্রতিটি এক কেজি সাইজের ইলিশের হালি ৩৬০০ টাকা এবং এর চেয়ে কিছুটা ছোট ইলিশ ২৪০০ টাকা হালি বিক্রি হচ্ছে।
মুদির বাজার ঘুরে দেখা যায়, গত সপ্তাহের মত একই রকম রয়েছে চালসহ সব ধরনের মুদি পণ্যের দাম। প্রতি কেজি মিনিকেট চাল ৬০ টাকা, মান ভেদে নাজিরশাইল ৬০ থেকে ৮০ টাকা, বিআর-২৮ ৩৮ টাকা, স্বর্ণা ৩৩ টাকা, পুরনো চিনিগুঁড়া ১১৫ টাকা এবং নতুন চিনিগুঁড়া চাল ৯৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর তেল, চিনি, আটা, ময়দা ও ডিমের দাম একই আছে।
এদিকে বাজার করতে আসা সোহান রহমান অভিযোগ করে বার্তা২৪.কমকে বলেন, বাজার যে কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণে নেই, তার বড় প্রমাণ পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে না আসা। দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ থাকা সত্ত্বেও এখনও পেঁয়াজের দাম ১০০ টাকা নিচে আনতে পারল না। সেই সঙ্গে চাল, রসুনসহ আরও কিছু পণ্য বিক্রি হচ্ছে বাড়তি দামেই। সব মিলিয়ে কম আয়ের মানুষের মুখে ভাত তোলা বেশ কঠিন হয়ে যাচ্ছে।
কারওয়ান বাজারের মুদি ব্যবসায়ী মোহাম্মদ হায়দার আলী বার্তা২৪.কমকে বলেন, মুদি পণ্যের মধ্যে সবচেয়ে অস্থির রয়েছে মসলার বাজার। তাছাড়া কমছে না চালের দামও। প্রতিদিনই কোনো না কোনো পণ্যের দাম বেড়েই চলেছে। আমরা খুচরা বিক্রেতা, আমাদের কিছুই করার নেই। যে দামে কিনে আনি, তার চেয়ে কিছুটা লাভে বিক্রি করি।