কোম্পানির টাকায় পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান কিংবা পরিচালকরা তাদের বাড়ির দারোয়ান, গৃহকর্মী ও গাড়িচালকদের বেতন দিতে চাপ দেন বলে জানিয়েছেন ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিলের (এফআরসি) নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন আহমেদ।
বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) আগারগাঁওয়ের বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মাল্টিপারপাস হলে ‘ফিন্যান্সিয়াল স্টেটমেন্ট অ্যানালাইসিস অ্যান্ড ডিটেকশন অব ফ্রড’ বিষয়ক সেমিনারে প্যানেল আলোচকের বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান ড. এম খায়রুল হোসেন। বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও বাংলাদেশ একাডেমি অব সিকিউরিটি মার্কেটিংয়ের (বিএএসএম) ডিজি মো. মাহবুবুল আলম, বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ফরহাদ আহমেদ, বিএসইসির পরিচালক কামরুল আনাম খান, সিডিবিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও শুভ্র কান্তি চৌধুরী, সিএমজেএফের প্রেসিডেন্ট হাসান ইমাম রুবেল এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘পরিচালকদের চাপে তাদের গৃহকর্মীর খরচও অনেক কোম্পানির ব্যয় হিসেবে দেখানো হয়। এছাড়া বাজার খরচ, চালকদের বেতনও কোম্পানির ব্যয় হিসেবে দেখানো হয়। এরপরও নিরীক্ষকের আপত্তি না তোলার ঘটনা ঘটছে।’
অভিজ্ঞতার আলোকে মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘অডিটর নিয়োগ দেওয়ার ক্ষেত্রে কোম্পানির চেয়ারম্যান সিএফওকে বলেন যে কাকে নিরীক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিচ্ছ, সে কথা শুনবে তো? এটা হলো নিরীক্ষক নিয়োগের প্রথম শর্ত। এ সমস্যাটি নিয়ে আমরা ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিলে আলোচনা করেছি।’
‘ফিন্যান্সিয়াল স্টেটমেন্ট একটি কোম্পানির আয়না। ওই স্টেটমেন্টের মধ্যে কোম্পানির সব তথ্য থাকে। কিন্তু কোম্পানিগুলো যে তথ্য তুলে ধরে, তাতে বিনিয়োগকারীদের অনাস্থা, অবিশ্বাস ও ভয় রয়েছে। এছাড়া কোম্পানির মালিক ও নিরীক্ষকের মধ্যে যোগসাজোশের একটি সমস্যা রয়েছে। যাদের সঙ্গে সর্ম্পক ভালো, কোম্পানিগুলো তাদের নিরীক্ষা করতে দেয়। কারণ এ বাংলাদেশ একটি ছোট জায়গা। এখানে ৩৭০ জন চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট ১৫৯টি অডিট ফার্ম দিয়ে নিরীক্ষার কাজ করেন। কাজেই এরা কোনো না কোনোভাবে কোম্পানির সঙ্গে সম্পৃক্ত,’ যোগ করেন তিনি।
মহিউদ্দিন আরও বলেন, ‘আর্থিক হিসাবে কৃত্রিম বা অসত্য তথ্য দেওয়ার কাজে প্রফেশনাল অ্যাকাউন্টেন্টরা জড়িত। কোম্পানির চেয়ারম্যানদের চাপে তারা এ কাজ করেন।’