ট্যানারিতে চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণে ব্যস্ত শ্রমিকরা

ব্যবসা-বাণিজ্য, অর্থনীতি

ইসমাইল হোসেন রাসেল, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট,বার্তা২৪.কম | 2023-08-27 11:39:23

হেমায়েতপুরে চামড়া শিল্প নগরী, সাভার: সাভারের হেমায়েতপুরে চামড়া শিল্প নগরীতে সংগ্রহ করা নতুন চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণে ব্যস্ত সময় পার করছেন ট্যানারি শ্রমিকরা। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে এখানে নতুন চামড়া নিয়ে নিয়ে আসছেন ব্যবসায়ীরা।

শুক্রবার (২৪ আগস্ট) চামড়া শিল্প নগরী ঘুরে দেখা গেছে, বিভিন্ন এলাকা থেকে সাভার চামড়া শিল্প নগরীতে নতুন চামড়া নিয়ে আসা এবং প্রক্রিয়াজাত করা হচ্ছে। শ্রমিকরাও ব্যস্ত সময় পার করছেন।

কারখানার কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতি বছরের কোরবানির ঈদের সময়ই ট্যানারিগুলো তাদের সারা বছরের চাহিদার অধিকাংশ চামড়া সংগ্রহ করে থাকে। প্রতিবারের মতো এবারও তারা দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে নতুন চামড়া সংগ্রহ শুরু করেছে। তবে নতুন চামড়া নিয়ে আসা ও প্রক্রিয়াজাতকরণে তেমন কোনও সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে না বলেও জানান তারা।

অ্যাপেক্স ট্যানারি লি: এর কর্মকর্তা আব্দুর রহমান বার্তা২৪.কমকে বলেন, প্রতিবছরের মতো এবারো আমরা তিন থেকে চার লাখ চামড়া সংগ্রহ করব। ঈদের দিন থেকে আজ পর্যন্ত প্রায় ছয় হাজার চামড়া সংগ্রহ করেছি। বাকি চামড়া আড়ৎগুলোতে লবণ দিয়ে রাখা হয়েছে। দু'একদিনের মধ্যে এগুলো আসা শুরু হবে।

সরকারি দামে চামড়া ক্রয় করা হচ্ছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যেহেতু মাঠ পর্যায়ে কম মূল্যে চামড়া সংগ্রহ করা হয়েছে তার কিছুটা প্রভাব এখানেও থাকবে। তবে অনেক ব্যবসায়ী না বুঝে অতিরিক্ত দামে চামড়া কিনে নিয়ে আসেন তারা কিছুটা লোকসানে পরবে।

চামড়া বিক্রি করতে আসা ব্যবসায়ীরা জানান, বিগত বছরগুলোর তুলনায় অনেক কম দামেই চামড়া বিক্রি করতে হচ্ছে। অনেক চামড়ার লবণের দামও পাওয়া যাচ্ছে না।

চামড়া বিক্রি করতে আসা মাওলানা মুফতি সানাউল্লাহ জানান, চামড়ার কোন সঠিক দামই আমরা পাচ্ছি না। অনেক চামড়ার লবণের দামই উঠছে না। ন্যায্য মূল্য পাবো কি-না তা নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। দেখা যাচ্ছে, মহিষের চামড়া গত বছরও অনেক টাকায় বিক্রি হয়েছে। কিন্তু এবার একশ' টাকায়ও কিনতে চাইছে না। অথচ এই চামড়ার লবণে প্রায় দেড়শ টাকা খরচ হয়েছে।

বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের (বিএইচএসএমএ) সভাপতি হাজী মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন বার্তা২৪.কমকে বলেন, ঢাকায় এখন পর্যন্ত তিন থেকে সাড়ে তিন লক্ষ চামড়া সংগ্রহ করা হয়েছে। সারাদেশে গরু, মহিষ ও খাসির চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা প্রায় এক কোটি।

সরকারি মূল্যে চামড়া ক্রয়ের ক্রয়-বিক্রয়ের বিষয়ে তিনি বলেন, সরকার কোন মূল্য নির্ধারণ করে দেয় না। সরকার মধ্যস্থতা করে দেয়। সরকার আমাদেরর তিন পক্ষ নিয়ে বসে, পরে আলোচনার মাধ্যমে মূল্য নির্ধারণ করে দেয়। সে অনুযায়ী চামড়া কেনাবেচা হচ্ছে। আর মৌসুমী ব্যবসায়ীরা মনে করে  চামড়া কিনলেই এক হাজার টাকা লাভ। কিন্তু সেটা না পেলেই তারা বলে লোকসান হয়েছে।

প্রগতি লেদার কমপ্লেক্সের সুপারভাইজার মো: সেলিমুজ্জামান বার্তা২৪.কমকে বলেন, আমাদের ট্যানারিতে প্রচুর চামড়া আসছে। আগামীকাল থেকে আরো অনেক চামড়া আসবে। এখন পর্যন্ত আমাদের কারখানায় আট হাজার চামড়া এসেছে। আমাদের লক্ষ্যমাত্রা ৩০ হাজার চামড়া। আমরা সরকারি দামেই চামড়া কিনছি। তবে বাজারে চামড়ার দাম আগের বছরের তুলনায় অনেক কম।

ইউসুফ লেদার করপোরেশনের সুপারভাইজার ওহিদুল্লাহ বলেন, আমরা লবণজাত চামড়া পরে সংগ্রহ করব। এবার চামড়ার দাম কম, আমরাও কম দামেই চামড়া কিনতে পারব বলে আশা করছি। চামড়া যত কমে কিনতে পারব ততো বেশি সংখ্যক চামড়া আমরা কিনব।

এদিকে চামড়া শিল্প নগরীর সড়কগুলোর বেহাল অবস্থার কারণে তাদের পরিবহন যাতায়াতে নানান সমস্যায় পড়তে হচ্ছে কলে জানিয়েছেন অনেকে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর