ঢাকা: দেশের চামড়া শিল্পের জগতে যেন চলছে অশনিসংকেত। ঈদ-উল-আজহার পর থেকেই চামড়ার দাম কমা নিয়ে চলছে আলোচনা সমালোচনা। আর এই চলমান অস্থিরতার নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বাৎসরিক চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রফতানিতে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষও বলছে ফের হ্রাস পেতে পারে চামড়া রফতানির আয়।
বর্তমানে দেশের মোট রফতানিতে পোশাক শিল্পের পড়েই রয়েছে চামড়া শিল্পের অবস্থান। কিন্ত গত অর্থ বছরে এই চামড়া শিল্পের রফতানি আয় কমেছে ১২ দশমিক ০৩ শতাংশ। চলতি অর্থ বছর শেষেও এই রফতানি আরো কমতে পারে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ইপিবি থেকে জানা যায়, ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে ২০১৬-১৭ অর্থ বছরের তুলনায় চামড়া রফতানি আয় কম হয়েছে ১৪৯ মিলিয়ন ডলার। যার ফলে ইতমধ্যেই চামড়া শিল্প রয়েছে চাপের মধ্যে। ২০১৬-১৭ অর্থ বছরের চামড়ার রফতানি আয় হয়েছিলো ১ হাজার ২৩৪ মিলিয়ন ডলার। তাই সে দিকে খেয়াল রেখেই চামড়া রফতারি লক্ষ্যমাত্রা ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে নির্ধারণ করা হয় ১ হাজার ৩৮০ মিলিয়ন ডলার। কিন্তু গত অর্থ বছরে লক্ষমাত্রার ২১ দশমিক ৩৪ শতাংশই রফতানি আয় অর্জন করতে পারেনি সংশ্লিষ্ট খাতটি। আর তাই চলতি অর্থবছরে গত অর্থ বছরের তুলনায় লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে ১ হাজার ১২৪ মিলিয়ন ডলার।
২০১৮-১৯ অর্থ বছরের প্রথম মাসেও চামড়া রফতানি কমেছে গত অর্থবছরের তুলনায় ২১ দশমিক ৭৩ শতাংশ। গত অর্থবছরের জুলাই মাসে চামড়া রফতারি আয় ছিলো ১১৬ দশমিক ৪৭ মিলিয়ন ডলার যা বর্তমান অর্থবছরের প্রথম মাসে এসে কমে দাঁড়িয়েছে ৯১ দশমিক ১৬ মিলিয়ন ডলার।
বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএ) তথ্য অনুযায়ী, চামড়া শিল্পখাতের বর্তমান চলমান পরিস্থিতিতে আবারো কমতে পারে রফতানি আয়। কারণ ইতিমধ্যে সংগৃহীত চামড়ার প্রায় ২০ শতাংশই নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। যার ফলে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে রফতানিতেও। ২০১৮-১৯ অর্থ বছরের রফতানির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন তো দূরের কথা পূর্বের বছরের রফতানি আয় ধরে রাখা সম্ভব হবে কিনা তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে বিটিএ।
এসব বিষয়ে বিটিএ সভাপতি শাহীন আহমেদ বার্তা২৪.কমকে বলেন, কোরবানির পশুর চামড়ার দাম নিয়ে বর্তমানে যে অস্থিরতা বিরাজ করছে তার নেতিবাচক প্রভাব অর্থবছর শেষে রফতানিতেও পরবে এটা স্বাভাবিক বিষয়। আবারো কমতে পারে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের রফতানি আয়। কারণ লবণের দাম বৃদ্ধির পর চামড়া প্রক্রিয়াকরণে বাধার সৃষ্টি হচ্ছে। অনেক চামড়া নষ্ট হয়ে গিয়েছে। তারপরও চামড়ার দাম কম বলেও পাইকারি চামড়ার ব্যবসায়ীরা দাবি করছেন সেক্ষেত্রে কিছুটা নেতিবাচক প্রভাবতো পড়বেই রফতানিতে।
অন্যদিকে বাংলাদেশ স্কিন অ্যান্ড হাইড মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হাজী দেলোয়ার হোসেন বলেন, বর্তমানে চামড়া শিল্পখাতে যে অস্থিরতা বিরাজ করছে তার দায় নিতে হবে ট্যানারি মালিকদের। আর বছর শেষে রফতানি আয় কম হলেও দায় নিতে হবে বিটিএ’কে। কিন্তু ক্ষতিগ্রস্থ হবে এই শিল্পের সংশ্লিষ্ট সবাই।