করোনাভাইরাস মহামারীর ‘তৃতীয় ঢেউ’ আঘাত হানতে শুরু করায় সংক্রমণ আবারও বেড়েই চলছে। তাই সরকারি, বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কিন্টাগার্টেনে ছুটি আরেক দফা বেড়েছে। সরকারের নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী ২২ মে পর্যন্ত ছুটি থাকবে।
আজ রোবাবর দুপুরে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে শিক্ষার্থীদের সুরক্ষার জন্য আগামী ২২ মে ২০২১ পর্যন্ত সব ধরনের সরকারি, বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কিন্টাগার্টেনের ছুটি বাড়ানো হয়েছে।
‘এ সময়ে নিজেদের ও অন্যদের করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে সুরক্ষার লক্ষ্যে শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ বাসস্থানে অবস্থান করবে। পাশাপাশি অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমও অব্যাহত থাকবে।’
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ কর্তৃক সময়ে সময়ে জারিকৃত নির্দেশনা ও অনুশাসনসমূহ শিক্ষার্থীদের মেনে চলতে হবে। শিক্ষার্থীদের বাসস্থানে অবস্থানের বিষয়টি অভিভাবকবৃন্দ নিশ্চিত করবেন এবং স্থানীয় প্রশাসন তা নিবিড়ভাবে পরিবীক্ষণ করবেন।
সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকগণ তাদের নিজ নিজ শিক্ষার্থীগণ যাতে বাসস্থানে অবস্থান করে নিজ নিজ পাঠ্যবই অধ্যয়ন করে সে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট অভিবাবকদের মাধ্যমে নিশ্চিত করবেন।
গত বছরের ৮ মার্চ প্রথম করোনা রোগী শনাক্তের পর ১৭ মার্চ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়। ধাপে ধাপে আট দফা ছুটি বাড়ানো হয়েছে। ২৭ ফেব্রুয়ারি সরকার সিদ্ধান্ত নেয় ৩০ মার্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার। শবেবরাতের ছুটির কারণে এক দিন পিছিয়ে ৩১ মার্চ খোলার সিদ্ধান্ত হয়।
এর মধ্যে দেশে করোনার সংক্রমণ বাড়তে শুরু করে। টানা ছয়দিন সাড়ে তিন হাজারের ওপরে রোগী শনাক্ত হয়েছে।
এর মধ্যে রোববার করোনার সংক্রমণ পাওয়া গেছে ৩ হাজার ৯০৮ জনের শরীরে। শনিবার ৩ হাজার ৬৭৪ জনের শরীরে এই ভাইরাস শনাক্ত হয়। শুক্রবার করোনা শনাক্ত হয় ৩ হাজার ৭৩৭ জন, বৃহস্পতিবার রোগী শনাক্তের সংখ্যা ৩ হাজার ৫৬৭, বুধবার শনাক্তের সংখ্যা হাজার ৫৫৪ জন ও মঙ্গলবার ৩ হাজার ৫৬৮ জন।
শনাক্তের পাশাপাশি বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যাও। এমন অবস্থায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে সরকার।
এ বিষয়ে রোববার এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা স্কুল-কলেজ খুলতে চেয়েছিলাম। কিন্তু হঠাৎ করে সংক্রমণ বেড়ে গেল। তাই এখন না খুলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে ঈদের পরে খুলব।
‘এর মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের হল আমরা মেরামত করার ব্যবস্থা নিয়েছি। তাছাড়া আমাদের অন্যান্য কাজগুলোও চলতে থাকবে। অগ্রযাত্রা যেন অব্যাহত থাকে এজন্য যা করার আমরা করব।’