খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর হিসেবে নিয়োগ পেলেন প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় আইন ১৯৯০ এর (১১)১ ধারা অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলর মোঃ আবদুল হামিদ খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরেস্ট্রি এন্ড উড টেকনোলজি ডিসিপ্লিনের শিক্ষক প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেনকে চার বছর মেয়াদে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর নিযুক্ত করেছেন।
সোমবার (২৪ মে) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে এ আদেশ জারি করা হয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মোঃ মাহমুদুল আলম স্বাক্ষরিত ওই প্রজ্ঞাপনে (নং-শিম/শাঃ১৮/৮খুঃবিঃ১/৯৭(অংশ-১)/১৬৪) স্মারকে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর পদে প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেনকে নিয়োগ দেওয়া হয়। তিনি হলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২তম ভাইস-চ্যান্সেলর এবং এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্য থেকে নিযুক্ত দ্বিতীয় ভাইস-চ্যান্সেলর।
প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন মঙ্গলবার (২৫ মে) আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্বভার গ্রহণ করবেন বলে রেজিস্ট্রার কার্যালয় থেকে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১তম ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান এর মেয়াদ গত ২৮ জানুয়ারি শেষ হয়। এরপর ৮ ফেব্রুয়ারি ভাইস-চ্যান্সেলর রুটিন দেওয়া হয় প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোসাম্মাৎ হোসনে আরাকে। এ হিসেবে প্রায় ৪ মাস পর খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় পেলো নতুন পূর্ণাঙ্গ ভাইস-চ্যান্সেলর।
খুবির নবনিযুক্ত ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন এর সংক্ষিপ্ত জীবনবৃত্তান্ত : খ্যাতনামা গবেষক শিক্ষক খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনিযুক্ত ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন ১৯৭২ সালের ২২ আগস্ট বাগেরহাট জেলার মোড়েলগঞ্জ উপজেলার মধ্য কচুবুনিয়া গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বাগেরহাট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৮৭ সালে এসএসসি, বাগেরহাট সরকারি পিসি কলেজ থেকে ১৯৮৯ সালে এইচএসসি, ১৯৯৩ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্সটিটিউট অফ ফরেস্ট্রি এন্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স থেকে বনবিদ্যায় স্নাতক (সম্মান), ১৯৯৮ সালে মালয়েশিয়ার পুত্রা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ম্যানগ্রোভ ইকোলজির উপর স্নাতকোত্তর এবং ২০০৪ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একই বিষয়ের উপর পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৯৯ সালে তিনি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাষক পদে যোগদান করেন। ২০০১ সালে তিনি সহকারী অধ্যাপক, ২০০৫ সালে সহযোগী অধ্যাপক এবং ২০০৯ সাল থেকে ফরেস্ট্রি এন্ড উড টেকনোলজি ডিসিপ্লিনে অদ্যাবদি অধ্যাপক পদে দায়িত্বরত আছেন। তাঁর ১০৫টি গবেষণা নিবন্ধ আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। এখন পর্যন্ত তাঁর প্রকাশিত পুস্তকের সংখ্যা ৩টি, অনুবাদ ২টি। দেশি ও বিদেশি সংস্থার অর্থায়নে ২৬টি গবেষণা প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছেন তিনি। তাঁর উদ্যোগ ও নেতৃত্বে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে দেশের মধ্যে প্রথম সয়েল আর্কাইভ স্থাপন হয়েছে। প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য, ফরেস্ট্রি এন্ড উড ডিসিপ্লিনের বিভাগীয় প্রধান, বোর্ড অব এ্যাডভান্স স্ট্যাডিজের সদস্য, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সহ-সভাপতিসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন।
প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ সাবেক সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী ডাঃ মোঃ মোজাম্মেল হোসেন ও সাবেক প্রধান শিক্ষিকা মিসেস জাহানারা বেগম এর একমাত্র পুত্র। তাঁর পিতা-মাতা গত কয়েক বছরের ব্যবধানে ইন্তেকাল করেন। তাঁর সহধর্মিনী ইসমত আরা শিরীন চৌধুরী একজন গৃহিনী। তাঁরা এক সন্তানের জনক-জননী। তাদের একমাত্র কন্যা তাসফিয়াহ মাহমুদ খুলনার সরকারি মজিদ মেমোরিয়াল সিটি কলেজের শিক্ষার্থী।
খুবির নবনিযুক্ত ভাইস-চ্যান্সেলরকে অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর ও ট্রেজারার।