মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কমায় দীর্ঘদিন পর আজ (১২ সেপ্টেম্বর) সরকারি নির্দেশনায় সারা দেশের মতো কুষ্টিয়ার প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হয়েছে।
শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি মেন শুরু হয়েছে শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে স্বশরীরে পাঠদান। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলায় শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ বিরাজ করছে।
শিক্ষার্থীদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রবেশের সময় ফুল দিয়ে বরণ করে নেন শিক্ষক-কর্মচারীরা। শরীরের তাপমাত্রা মাপার পর প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে সাবান দিয়ে হাত ধুইয়ে শ্রেণি কক্ষে প্রবেশ করানো হয়। এছাড়াও শ্রেণি কক্ষে পাঠদান শুরুর আগে করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে করনীয় বিষয়ে আলোচনা করা হয়।
প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মচারীদের মাস্ক পরাসহ শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন কঠোরভাবে নজরদারিতে রেখেছেন শিক্ষা বিভাগের কর্মকর্তারা।
কুষ্টিয়া সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে সকালে পরিদর্শনে আসেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম, জেলা শিক্ষা অফিসার জায়েদুর রহমানসহ সংশ্লিষ্টরা। এসময় তারা শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলেন ও শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে করোনার সচেতনতা বিষয়ক নানান দিক নির্দেশনা প্রদান করেন।
মিরপুর উপজেলার বলিদাপাড়া বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাদিয়া বলেন, অনেকদিন পর স্কুলে এসে খুব আনন্দ লাগছে। স্কুল খুলে দেওয়ায় আমরা আবার শিক্ষার্থীরা মিলে পড়াশোনা শুরু করবো।
কুষ্টিয়া সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোজাম্মেল হক বলেন, শিক্ষার্থীদের নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে এবং সকল প্রকার স্বাস্থ্যবিধি মেনেই ক্লাস নেওয়া হচ্ছে।
সহকারী শিক্ষক নাদিরা খানম বলেন, দীর্ঘদিন পর আজকে প্রথম দিনে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ৮০ শতাংশ। স্কুলে একটা আনন্দ বিরাজ করছে। শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবকসহ উল্লসিত আমরা সবাই।
তিনি বলেন, আমাদের স্কুলের প্রধান ফটক বেলুনের গেট করে সেখান থেকে ফুল, স্যানিটাইজার ও মাস্ক দিয়ে বাদ্য বাজিয়ে আনন্দঘন পরিবেশে প্রবেশ করানো হচ্ছে সকল শিক্ষার্থীদের।
উপমা নামের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী বলেন, কতদিন স্কুলে আসা হয়নি। দেখা হয়নি, প্রিয় শিক্ষকসহ সহপাঠীদের। আজকে স্কুলে এসেই মনটা আনন্দে ভরে গেলো। মনে হচ্ছে আজকে আবার সেই প্রথম দিনের মতো নতুন করে স্কুলে আসলাম।
কুষ্টিয়া জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক এফতেখাইরুল ইসলাম বলেন, সরকারি নির্দেশনা অনুসারেই আমরা বিভিন্ন ভাগে ক্লাস নিচ্ছে, শিক্ষার্থীদের তাপমাত্রা ঠিক আছে কিনা তা পরীক্ষা করেই কেবল বিদ্যালয়ের গেট দিয়ে প্রবেশ করাচ্ছি। এছাড়াও স্বাভাবিক সকলের পরিবারের খোঁজ নিচ্ছি সকল শিক্ষার্থীর পরিবার করোনামুক্ত কিনা?
এদিকে, বন্যাকবলিত হওয়ায় দৌলতপুরে বেশকিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠদান বিরত রাখা হয়েছে। বন্যার পানি নেমে গেলেই এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠদান শুরু হবে।