নতুন শিক্ষা কারিকুলাম ও পরীক্ষা পদ্ধতি বাতিলসহ ৮ দফা দাবিতে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে ‘সম্মিলিত শিক্ষা আন্দোলন’ ও ‘সম্মিলিত অভিভাবক সমাজ’ নামে ফেসবুকভিত্তিক দুই সংগঠন। এতে প্রায় শতাধিক অভিভাবক যোগ দিয়ে সরকারের কাছে তাদের দাবি জানান।
শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এই মানববন্ধন ও সমাবেশ করেন তারা।
সংগঠনটির আহ্বায়ক রাখাল রাহা ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক নাসির আহমেদসহ প্রায় শতাধিক সংগঠক, শিক্ষক ও অভিভাবক মানববন্ধনে যোগ দেন।
এ সময় নতুন কারিকুলাম বন্ধের দাবি জানিয়ে রাখাল রাহা বলেন, একটি কারিকুলাম প্রণয়নে বিভিন্ন মহলে আলোচনা এবং শিক্ষার্থীদের জন্য উপযোগী কি না সেটি ভাবার প্রয়োজন ছিল। সংসদে ও মন্ত্রিপরিষদে এ কারিকুলামে আলোচনা হওয়ার প্রয়োজন ছিল। কিন্তু এসব হয়েছে কি না আমরা জানি না। যদি হতো তাহলে এমন কারিকুলাম প্রণয়ন করা হতো না।
তিনি বলেন, আমাদের আহ্বান থাকবে অবিলম্বে আমাদের শিক্ষার্থী ও জাতি ধ্বংসের এই কারিকুলামের প্রকল্প বন্ধ করুন। দেশের পরবর্তী প্রজন্মকে বাঁচাতে হলে এ কারিকুলাম বন্ধ করার বিকল্প নেই।
ভিকারুন্নেসা নুন স্কুলের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক পরিচয়ে একজন বলেন, বাংলা, ইংরেজি, অংক, ধর্ম শিক্ষা- এই ৪টি বিষয় প্র্যাক্টিকাল শেখার জিনিস নয়। আমরা চাই অন্তত এই চার বিষয়ে পরীক্ষা পদ্ধতি চালু করা হোক। নতুন কারিকুলামে যেভাবে শিক্ষার্থীদের ডিভাইস নির্ভর করা হয়েছে আমরা সেটি নিয়ে শঙ্কিত।
সম্মিলিত শিক্ষা আন্দোলনের দাবিগুলো হলো- ‘শিক্ষানীতি বিরোধী’ নতুন কারিকুলাম সম্পূর্ণ বাতিল করতে হবে, নম্বরভিত্তিক দুটি সাময়িক লিখিত পরীক্ষা (৬০ নম্বর) চালু রাখতে হবে এবং ধারাবাহিক মূল্যায়ন হিসেবে ৪০ নম্বর রাখতে হবে, নবম শ্রেণি থেকেই শিক্ষার্থীর আগ্রহ অনুযায়ী বিষয় নির্বাচনের সুযোগ অথবা বিজ্ঞান বিভাগ রাখতে হবে, ত্রিভুজ, বৃত্ত, চতুর্ভুজ ইত্যাদি নির্দেশক বা ইন্ডিকেটর বাতিল করে নম্বর ও গ্রেডভিত্তিক মূল্যায়ন পদ্ধতি রাখতে হবে, সবসময় সব শিখন, প্রোজেক্ট ও অভিজ্ঞতাভিত্তিক ক্লাসের ব্যয় সরকারকে বহন করতে হবে এবং স্কুল পিরিয়ডেই সব প্রোজেক্ট সম্পন্ন হতে হবে, শিক্ষার্থীদের দলগত ও প্রোজেক্টের কাজে ডিভাইসমুখী হতে অনুৎসাহিত করতে হবে এবং তাত্ত্বিক বিষয়ে অধ্যয়নমুখী করতে হবে, প্রতিবছর প্রতি ক্লাসে নিবন্ধন ও সনদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিল করতে হবে, প্রাথমিক ও জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষা চালু রাখতে হবে এবং এসএসসি ও এইচএসসি দুটি পাবলিক পরীক্ষা বহাল রাখতে হবে, সবসময় সব শ্রেণিতে নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়নের আগে অবশ্যই তা মন্ত্রিপরিষদ ও সংসদে উত্থাপন করতে হবে।