এইচএসসি, আলিম ও সমমান পরীক্ষা-২০২৩ এর ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। এবার পাসের হার ৭৮ দশমিক ৬৪ শতাংশ। শুধু এইচএসসিতে পাসের হার ৭৫ দশমিক ৯০ শতাংশ। মোট পাস করেছেন ১০ লাখ ৬৭ হাজার ৮৫২ জন পরীক্ষার্থী। পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন ১৩ লাখ ৫৭ হাজার ৯১৫ জন পরীক্ষার্থী। আর পরীক্ষায় অংশ নিতে ফরম পূরণ করেছিলেন ১৩ লাখ ৭৫ হাজারেরও বেশি পরীক্ষার্থী।
রোববার (২৬ নভেম্বর) সকাল ১০টায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সকল শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যানগণ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ফলাফল হস্তান্তর করেন। এরপর দুপুর আড়াইটায় রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে সংবাদ সম্মেলন করে ফলের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। এ সময় শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল উপস্থিত ছিলেন।
এগিয়ে বরিশাল, পিছিয়ে যশোর
বোর্ডভিত্তিক ফলাফলে পাসের হারে সবার ওপরে বরিশাল বোর্ড। এ বোর্ডে পাসের হার ৮০ দশমিক ৬৫ শতাংশ। পাসের হারে সবচেয়ে পিছিয়ে যশোর। এ বোর্ডে পাস করেছেন ৬৯ দশমিক ৮৮ শতাংশ পরীক্ষার্থী। দেশের বাকি ৭টি সাধারণ বোর্ডের মধ্যে ঢাকা বোর্ডে পাসের হার ৭৯ দশমিক ৪৪ শতাংশ, রাজশাহী বোর্ডে ৭৮ দশমিক ৪৬ শতাংশ, কুমিল্লা বোর্ডে ৭৫ দশমিক ৩৯ শতাংশ, চট্টগ্রাম বোর্ডে ৭৪ দশমিক ৪৫ শতাংশ, সিলেট বোর্ডে ৭৩ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ। এছাড়া ময়মনসিংহ ও দিনাজপুর বোর্ডে ৭০ দশমিক ৪৪ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছেন।
ফলাফলে এগিয়ে ছাত্রীরা
এবারের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলে এগিয়ে আছেন ছাত্রীরা। চলতি বছর উত্তীর্ণ ১০ লাখ ৬৭ হাজার ৮৫২ হাজার পরীক্ষার্থীরা মধ্যে ছাত্রী ৫ লাখ ৬৮ হাজারের বেশি ও ছাত্র ৫ লাখ ২৮ হাজারের বেশি জন। এইচএসসি ও সমমানে মোট পাসের হার ৭৮ দশমিক ৬৪ শতাংশ। পাসের হারেও এগিয়ে ছাত্রীরা। ছাত্রীদের পাসের হার ৮০ দশমিক ৫৭ শতাংশ। ছাত্রদের পাসের হার ৭৬ দশমিক ৭৬ শতাংশ। এবার এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় ১০ লাখ ৬৭ হাজার ৮৫২ জন শিক্ষার্থী অংশ নেয়। এর মধ্যে ছাত্রী ৫ লাখ ৬৮ হাজারের বেশি। এছাড়া ছাত্র ৫ লাখ ২৮ হাজারের কিছু বেশি।
এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় ছাত্রীদের থেকে বেশি সংখ্যক ছাত্র অংশ নিয়েছিলেন। পরীক্ষায় অংশ নেওয়া মোট ১৩ লাখ ৫৭ হাজার ৯১৫ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ছাত্র ৬ লাখ ৮৯ হাজার ও ছাত্রী ৬ লাখ ৬৮ হাজার। তবে উত্তীর্ণের সংখ্যা ও পাসের হারে ছাত্রীরাই এগিয়ে।
কমেছে জিপিএ-৫
এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় ৯২ হাজার ৩৬৫ শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছেন। ২০২২ সালে জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন ১ লাখ ৭৬ হাজার ২৮২ জন। গতবারের তুলনায় এবার এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় জিপিএ-৫ কমেছে। এ বছর জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমেছে ৮৩ হাজার ৯১৭ জন। পাসের হারও এবার কিছুটা কমেছে। গতবার পাসের হার ছিল ৮৫ দশমিক ৯৫ শতাংশ। এবার এইচএসসি ও সমমানে সব বোর্ডে পাসের হার ৭৮ দশমিক ৬৪ শতাংশ।
পুনর্নিরীক্ষণের সুযোগ
পরীক্ষায় কেউ কাঙ্ক্ষিত ফল না পেলে তা পুনর্নিরীক্ষণের জন্য আবেদন করতে পারবে। ২৭ নভেম্বর থেকে পুনর্নিরীক্ষণের জন্য আবেদন শুরু হবে, যা চলবে ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত। অনলাইনে ঘরে বসেই আবেদন করা যাবে। বোর্ড তার উত্তরপত্র যাচাই-বাছাই করে আবেদন নিষ্পত্তি করবে। ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের এক বিজ্ঞপ্তিতে ফল পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন প্রক্রিয়ার বিস্তারিত জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, শুধুমাত্র টেলিটকের প্রিপেইড নম্বর থেকে ফল পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন করা যাবে।
আবেদন করবেন যেভাবে
প্রথমে মোবাইলের মেসেজ অপশনে গিয়ে RSC লিখে স্পেস দিয়ে বোর্ডের নামের প্রথম তিনটি অক্ষর লিখতে হবে। এরপর স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে আবার স্পেস দিয়ে বিষয় কোড লিখে ১৬২২২ নম্বরে এসএমএস করতে হবে। উদাহরণ: RSC DHA 123456 174 লিখে ১৬২২২ নম্বরে পাঠাতে হবে। একাধিক বিষয়ের উত্তরপত্র পুনঃনিরীক্ষণের ক্ষেত্রে কমা দিয়ে সাবজেক্ট কোড এসএমএস করতে হবে। যেমন- ১৭৪, ১৭৫, ১৭৬।
এসএমএস সেন্ড হলে টেলিটক থেকে পিন নম্বরসহ কত টাকা কেটে নেওয়া হবে, তা জানিয়ে একটি ফিরতি এসএমএস আসবে। পিন নম্বরটি সংগ্রহ করে রাখতে হবে। এরপর এতে সম্মত হলে আবারও মেসেজ অপশনে RSC লিখে স্পেস দিয়ে YES লিখে স্পেস দিয়ে ‘পিন নম্বর’ লিখে স্পেস দিয়ে নিজস্ব মোবাইল নম্বর (যেকোনো অপারেটর) লিখে ১৬২২২ নম্বরে সেন্ড করতে হবে। উদাহরণ: RSC<>YES<>PIN-NUMBER<>MobileNumber লিখে ১৬২২২ নম্বরে পাঠাতে হবে।
আবেদন ফি
বোর্ডের বিজ্ঞপ্তি তথ্যানুযায়ী- প্রতি পত্রের ফল পুনঃনিরীক্ষার ফি ১৫০ টাকা। সে হিসেবে এইচএসসির প্রতি বিষয়ের (প্রথম ও দ্বিতীয়পত্র) পুনঃনিরীক্ষণের আবেদনের জন্য ফি ৩০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। কারণ দুই পত্রের বিষয়ের ক্ষেত্রে দুটির জন্যই একসঙ্গে আবেদন করতে হবে।