শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে শিক্ষকদের অতীত প্রশিক্ষণের ভিডিও ছড়িয়ে দিয়ে অপপ্রচার করা হচ্ছে। এসব বিষয় আমাদের শিক্ষাক্রমের অংশ নয়, আমাদের ক্লাসের অংশ নয়। অতীতে আমাদের শিক্ষকদের দীর্ঘ প্রশিক্ষণের ফাঁকে বিনোদনের জন্য তাদের অংশগ্রহণে এসব ভিডিও তৈরি করা হয়েছিলো। সেগুলো এখন ছড়িয়ে দিয়ে একটি বিশেষ গোষ্ঠী অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। অনেকে আবার অপপ্রচার করার জন্য নতুন করে এসব ভিডিও তৈরি করছে।
রোববার (৩ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ডা. দীপু মনি বলেন, আগামী দিনের বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আমাদের সন্তানদের গড়ে তুলতে হবে। তাদেরকে প্রায়োগিক শিক্ষার উপযোগী করে গড়ে তুলতে হবে। প্রযুক্তির জগতের জন্য আমাদের সন্তানদের প্রযুক্তি বিষয়ে গড়ে তুলতে হবে। তারা যাতে উদ্ভাবন করতে পারে তাদের মধ্যে সে মনোভাব তৈরি করতে হবে। আমাদের শিক্ষার্থীদের মাঝে অনুসন্ধিৎসা গড়ে উঠুক, আমরা সেটাকে উস্কে দিতে চাই। সে অনুযায়ী আমাদের নতুন শিক্ষাক্রম তৈরি করা হচ্ছে।
নতুন শিক্ষাক্রম বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা বিভিন্ন গবেষণার মাধ্যমে নতুন শিক্ষাক্রম তৈরি করেছি। প্রায় ৮'শ এর বেশি বিশেষজ্ঞের সাথে পরামর্শ করেছি। বিভিন্ন পর্যায়ে পাইলটিং করেছি। ২০১৭ থেকে ২০২৭ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ এগারো বছরের দীর্ঘ প্রক্রিয়ায় ধাপে ধাপে এটি বাস্তবায়ন করা হবে। আমাদের বইগুলো এখনো পরীক্ষামূলক সংস্করণ। এখানে পরিবর্তন-পরিমার্জনের সুযোগ রয়েছে। এসময় তিনি নতুন শিক্ষাক্রম বিষয়ে অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য সকলের প্রতি অহ্বান জানান।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বই পড়ার অভ্যাসকে আমরা একটি সামাজিক আন্দোলনে রুপ দিতে চাই। আমরা প্রাথমিকভাবে ১৫ হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠাভ্যাস কার্যক্রম শুরু করছি। আগামী ১-২ বছরে ৩৩ হাজার প্রতিষ্ঠানে এই কার্যক্রম পৌঁছে দিতে চাই।
তিনি আরও বলেন, আমরা এমন একটা যুগ পার করে এসেছি যেখানে পরীক্ষার হল থেকে বের হলেই অভিভাবকরা জিজ্ঞাসা করতো ‘কয়টা প্রশ্ন কমন পরেছে?’। যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা কমন প্রশ্ন বলে দিতে পারতো সে প্রতিষ্ঠানকে সেরা বলা হতো। আমরা সে মুখস্তনির্ভর পড়া থেকে বের হতে চাই। শিক্ষার্থীদের সম্পূর্ণ বই পড়া ও বুঝে পড়ার অভ্যাস তৈরি করতে হবে। আমরা দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে একই মানের হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।