ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রোকেয়া হলের প্রাধ্যক্ষ, হল সংসদের ভিপি, জিএস এবং ছাত্রলীগের কয়েকজন নেত্রীর বিরুদ্ধে ২১ লাখ টাকা নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার টিএসসিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযাগ করেন কয়েকজন শিক্ষার্থী।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ভালনারেবিলিটি স্ট্যাডিজ বিভাগের ছাত্রী শ্রবণা শফিকসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন। এসময় তাদের সাথে ছাত্র ফেডারেশন এবং ছাত্র ইউনিয়নের নেতারাও একমত পোষণ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, রোকেয়া হলে নিরাপত্তা প্রহরী, পরিচ্ছন্নতাকর্মীসহ কয়েকটি পদে নিয়োগ দিতে তিন ব্যক্তির কাছ থেকে মোট ২১ লাখ টাকা নিয়েছেন ছাত্রীলীগ নেত্রীরা।
সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থী শ্রবণা শফিক অভিযোগ করে বলেন, ‘অফিস সহায়ক পদে হলের এক কর্মচারীর ছেলেকে এবং বাগানের এক মালির ছেলেকে মালি পদে নিয়োগ দেওয়ার কথা বলে যথাক্রমে ৮ ও ৫ লাখ করে টাকা নিয়েছেন হল সংসদের ভিপি ইসরাত জাহান ও জিএস সায়মা প্রমি। আর নিরাপত্তা প্রহরী পদে নিয়োগ দিতে এক ব্যক্তির কাছ থেকে ৮ লাখ টাকা নিয়েছেন হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি লিপি আক্তার, সাধারণ সম্পাদক শ্রাবণী ইসলাম ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপ-সম্পাদক ইশাত কাশফিয়া।’
এ সময় হল সংসদের সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) ফাল্গুনী দাসের সঙ্গে হলের এক কর্মচারীর কথোপকথনের রেকর্ডও সাংবাদিকদের কাছে দেন তারা। এছাড়া হল প্রাধ্যক্ষের তাৎক্ষণিক অপসারণ ও হল সংসদ বাতিল ঘোষণা করার দাবি জানান তারা।
শ্রবণা শফিক অভিযোগ করে বলেন, ‘আজ দুপুরে প্রাধ্যক্ষের কার্যালয়ে গেলে হল শাখা ছাত্রলীগের দুই শীর্ষ নেত্রী ও ছাত্রলীগের প্যানেল থেকে নির্বাচিত হলের ভিপি ও জিএস প্রাধ্যক্ষের সামনে আমাকে লাঞ্ছিত করেন। এ সময় প্রাধ্যক্ষও ছাত্রলীগ নেত্রীদের পক্ষে অবস্থান নেন।’
এদিকে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে হল সংসদের ভিপি ইসরাত জাহান এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উল্লেখ করে বলেন, ‘ব্যক্তিগত আক্রোশের কারণেই আমার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ করা হচ্ছে।’
আর রোকেয়া হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক জিনাত হুদা বলেন, ‘অভিযোগ তদন্তে আমরা পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি করেছি। কমিটির পক্ষ থেকে অভিযোগকারীসহ সবাইকে ডাকা হয়েছে। তবে অভিযোগের পক্ষে কেউ কোনো দালিলিক প্রমাণ দিতে পারেননি। এমনকি শিক্ষার্থীদের লাঞ্ছিত করার অভিযোগও সত্য নয়।’
উল্লেখ্য, গত ২৫ জুলাই রোকেয়া হলে চারটি পদে কর্মচারী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে অফিস সহায়ক পদে একজন, বাগানের মালি পদে একজন, নিরাপত্তা প্রহরী পদে তিন জন ও পরিচ্ছন্নতাকর্মী পদে তিন জনকে নিয়োগ দেওয়া হবে বলে উল্লেখ করা হয়। গত ৩১ জুলাই আবেদনের শেষ দিন ছিল। আর ১ সেপ্টেম্বর এসব পদে আবেদনকারীদের মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।