সাংসদ হতে চান জনগণের আফছার!

বিবিধ, নির্বাচন

ফরহাদুজ্জামান ফারুক, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-25 22:56:49

ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য হিসেবে পরপর দুইবার ভোটযুদ্ধে জয়ী হয়েছেন। এরপর ইউপি সদস্য থেকে সরাসরি চেয়ারম্যান পদে লড়াই। সেই লড়াইয়ে সবাইকে তাক লাগিয়ে গলায় পরেন বিজয়ের মালা। এরপর তাকে আর কে ঠেকায়। একটানা তিনবার সফল চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হন তিনি।

সফল এই জনসেবকের নাম আফছার আলী। বর্তমানে তিনি ইউনিয়ন পরিষদের গণ্ডি ছেড়ে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

আফছার আলী রংপুরের পীরগাছা উপজেলার অনন্তরাম দশগাঁও গ্রামের মরহুম আব্দুল আজিজের ছেলে। ১৯৫৬ সালে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা আব্দুল আজিজ ১৯৬৩ সালে ৭নং পীরগাছা ইউনিয়ন পরিষদের ৮নং ওয়ার্ডের (দশগাঁও) ইউপি সদস্য ছিলেন। বাবার যোগ্য উত্তরসূরি হিসেবে আফছার আলী ১৯৮৩ এবং ১৯৮৮ সালে ওই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর জনগণের ভালোবাসা ও সমর্থনে ১৯৯৭ সালে প্রথম, ২০০২ সালে দ্বিতীয় এবং ২০১১ সালে তৃতীয়বারের মতো ৭নং পীরগাছা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে ২০১৪ সালে পীরগাছা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হন।

১৯৭৮ সাল থেকে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির উপজেলা সাধারণ সম্পাদক হিসেবে রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থেকে দলটির হাল ধরেন। প্রায় চার দশকের মতো সময় ধরে রাজনীতিতে মিশে একাকার হওয়া আছফার আলী এখন সফল চেয়ারম্যান। এবার সেই জায়গা থেকে আরও বড় পরিসরে নিজেকে বিলিয়ে দিতে সংসদ সদস্য পদে লড়াই করতে বিএনপির দলীয় মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দিয়েছেন। দলের প্রথম সারির নেতাদের একটি বড় অংশের কাছে এক নামে পরিচিত আফছার চেয়ারম্যান এখন মনোনয়ন পেতে জোর লবিং চালাচ্ছেন। তার প্রচেষ্টাকে ঘিরে রংপুর-৪ (পীরগাছা ও কাউনিয়া) আসনের রাজনৈতিক নেতা-কর্মী ও সাধারণ ভোটারদের মাঝে কৌতূহল সৃষ্টি হয়েছে।

আফছার আলী ২০০৬ সাল থেকে রংপুর জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ও উপজেলা বিএনপির সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছেন। সর্বদা হাসি-খুশি এই মানুষটি ১৯৮৭ সালে মোহাম্মদ আলী দাখিল মাদরাসা, ১৯৯৯ সালে রাজবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয় এবং ২০০৮ সালে মণ্ডলবাড়ি হাফেজিয়া মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করেন। এছাড়াও তিনি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ-মাদরাসার সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এলাকার সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে সচেতন মহলের অনেকেই তাকে শিক্ষানুরাগী সেবক মনে করেন।

পীরগাছা উপজেলার তাম্বুলপুর ইউনিয়নের আমজাদ হোসেন জানান, চেয়ারম্যান হিসেবে আফছার হাজীর জনপ্রিয়তা অনেক বেশি। তিনি বিএনপি করলেও মানুষ তাকে দলের চেয়ে সেবক হিসেবে বেশি ভালোবাসেন। এ কারণে তিনি ইউপি সদস্য থেকে পর্যায়ক্রমে ইউপি চেয়ারম্যান হয়ে শেষ পর্যন্ত উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের চেয়ারে বসতে পেরেছেন।

আন্নদানগর ইউনিয়নের নূর হোসেন জানান, জনসেবায় আফছার হাজী তার দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে সংসদ সদস্য পদে নির্বাচন করার যে স্বপ্ন দেখছেন তা সফল হবার মতোই। যদি দল তাকে মূল্যায়ন করে, তাহলে এমনো হতে পারে ইউপি সদস্য থেকে সংসদ সদস্য হয়ে যাবেন তিনি।

এ ব্যাপারে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী পীরগাছা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আফছার আলী বলেন, ‘আমার ব্যক্তিগত কোনো চাওয়া-পাওয়া নাই। এলাকার উন্নয়ন ও জনসেবার ব্রত নিয়েই বাপদাদার দেখানো পথেই আছি। জনগণের ভালোবাসা ও দোয়া নিয়ে এলাকার সার্বিক উন্নয়নের আগ্রহ থেকেই সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য বিএনপি থেকে দলীয় মনোনয়ন জমা দিয়েছি। দল আমাকে মনোনয়ন দিলে জনগণ আমাকেই নির্বাচিত করবে। তবে দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে আমি স্বতন্ত্র বা বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করব না।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর