চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির হাবিব-সিরাজের সঙ্গে যুদ্ধ হবে ভূমিমন্ত্রীর!

বিবিধ, নির্বাচন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-09-01 23:21:59

পাবনা-৪ (ঈশ্বরদী, আটঘরিয়া) আসনে ২০০১ সালে বিএনপি থেকে মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে কুড়াল প্রতীকে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেছিলেন হাবিবুর রহমান হাবিব। আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি এবার ওই আসন থেকে বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন। একই সঙ্গে মনোনয়ন পেয়েছেন তার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি, সাবেক সাংসদ সিরাজুল ইসলাম সরদার।

এদিকে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, পরপর চারবারের সাংসদ ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ আসন্ন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন। বিএনপির চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী হাবিব-সিরাজ এই দুইজন থেকে একজনের সঙ্গে ভোট যুদ্ধে অবতীর্ণ হতে হবে তাকে।

জানা যায়, ১৯৯১ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছিলেন বর্তমান বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা, কেন্দ্রীয় নেতা হাবিবুর রহমান হাবিব। সেবারের নির্বাচনে তার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিজয়ী হন বিএনপির প্রার্থী সিরাজুল ইসলাম সরদার। ১৯৯৬ সালে বিএনপি থেকে মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে আওয়ামী লীগে যোগ দেন স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের নায়ক হাবিবুর রহমান হাবিব। বেশ কয়েক বছর আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত থেকে বিএনপিতে যোগ দেন তিনি। সবশেষ ২০০৮ সালেও তিনি বিএনপির মনোনয়ন পাননি।

আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পাবনা-৪ (ঈশ্বরদী, আটঘরিয়া) আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেয়ে গত বুধবার তা ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে দাখিল করেন হাবিবুর রহমান হাবিব, সিরাজুল ইসলাম সরদারসহ আরও দুজন।

স্থানীয় ভোটারদের ভাবনা, আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়া ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফকে বিএনপির হাবিবুর রহমান হাবিব নতুবা সিরাজুল ইসলাম সরদারের সঙ্গে ভোটে যুদ্ধে লড়তে হবে। নির্বাচনের দিন যতটা ঘনিয়ে আসছে, এ আসনের সাধারণ ভোটারদের মধ্যে বিএনপির প্রার্থী নিয়ে বেশ জল্পনা কল্পনা শুরু হয়েছে। বিএনপির প্রার্থী চূড়ান্ত করার ওপরেই নির্ভর করছে এ আসনের জয়-পরাজয়।

স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা বলছে, আওয়ামী লীগের প্রার্থী শামসুর রহমান শরীফকে ঠেকাতে হাবিবুর রহমান হাবিব বা সিরাজুল ইসলাম সরদারের যেকোনো একজনই যথেষ্ঠ। তবে পরীক্ষিত ভাবে সচেতন নেতাকর্মীদের ধারণা, আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী, বর্ষীয়ান নেতা, বারবার নির্বাচিত সাংসদকে পরাজিত করতে হলে বিএনপির প্রার্থী সিলেকশনে ভাবনা-চিন্তা করেই এগোতে হবে।

এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন বিএনপি নেতা জানান, হাবিব বা সিরাজ মূলত দুজনেই ঢাকা কেন্দ্রীক। নির্বাচন এগিয়ে আসলেই তারা এলাকায় প্রকাশ্যে চলে আসেন। বিগত দিনগুলোতে খুব বেশি সরব ছিলেন না বিএনপি থেকে মনোনয়ন পাওয়া এ দুই প্রার্থী।

তবে বিএনপির বিশ্বস্ত সূত্র দাবি করছে, কেন্দ্রীয় নেতা বা চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হলেও হাবিবুর রহমান হাবিবের জন্য ধানের শীষের ফসল ঘরে তোলা খুব দুঃসাধ্য হবে। অন্যদিকে সিরাজুল ইসলাম সরদার এই আসন থেকে সাংসদ নির্বাচিত হন, দুঃসময়ে জেলা বিএনপির সভাপতির পদে থাকলেও দীর্ঘদিন ধরে দলীয় কর্মকাণ্ডের বাইরে ছিলেন। যা নিষ্ক্রিয় বলা যায়। প্রার্থী যিনিই হবেন, তাকে মাঠে মনোনিবেশ করতে হবে ব্যাপক ভাবে। আর এমন দাবি বিএনপি ঘরানার ভোটারদের।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ইতোমধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির অধ্যাপক আবু তালেব মণ্ডল ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নেতা মাওলানা আব্দুল জলিল তাদের মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থীর দাবি- জোটের কারণে বারবার তারা সরে এসেছেন। তবে এবার তারা আশাবাদী, জোটগত ভাবেই তাদের প্রার্থীকে এই আসনে নির্বাচনের সুযোগ দেবে বিএনপি।

আওয়ামী লীগের একাধিক নেতাকর্মীর সঙ্গে আলাপকালে তাদের দাবি- সুষ্ঠু ভোট হবে। ভোটাররা তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগে ভোটকেন্দ্রে যাবে। আর সচেতন ভোটারদের ভোটেই আওয়ামী লীগের প্রার্থী শামসুর রহমান শরীফ বিপুল ভোটে বিজয়ী হবেন। তবে বিএনপির প্রার্থীর ব্যাপারে তারা বেশ হিসাব নিকাশ কষছেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর