মুন্সীগঞ্জ-১: আ.লীগের ভোটও পাবেন বিএনপির আব্দুল্লাহ!

বিবিধ, নির্বাচন

মুজাহিদুল ইসলাম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-09-01 22:28:02

মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান থেকে: দল মত নির্বিশেষে সকলের পছন্দের মানুষ মুন্সীগঞ্জ-১ আসনের বিএনপির মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ আবদুল্লাহ। দানশীল, পরোপকারী ও মিষ্টি ব্যবহারে মুগ্ধ শ্রীনগর ও সিরাজদিখান নির্বাচনী এলাকার ভোটাররা।

অপরদিকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী চূড়ান্ত না হওয়ায় বাড়তি সুবিধা পাবেন বিএনপির এই মনোনীত প্রার্থী। আওয়ামী লীগের ভোটারদেরও পছন্দের মানুষ তিনি।

শনিবার (১ ডিসেম্বর) সকালে মুন্সীগঞ্জ-১ আসনের সিরাজদিখান বাসাইল ইউনিয়নের ব্যবসায়ী, তরুণ, কৃষক, নারী এমনকি বয়স্কদের মুখেও শোনা গেল আব্দুল্লাহের প্রশংসা।

এদিকে অনেকের ধারণা আওয়ামী লীগ জোট থেকে বিকল্পধারা বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মাহী বি চৌধুরী মনোনয়ন পেতে পারেন। এছাড়াও জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলামও জমা দিয়েছেন মনোনয়ন পত্র। আওয়ামী লীগ থেকে নুরে আলম চৌধুরী, ডা. বদিউজ্জামান ভূঁইয়া, মহিউদ্দিন আহমেদ, গোলাম সারওয়ার চৌধুরীসহ একাধিক প্রার্থী মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন। অপেক্ষায় আছেন পরবর্তী সিদ্ধান্তের।

প্রার্থী আওয়ামী লীগের যেই হোক না কেন এই আসনটি বিএনপির ঘাঁটি। ৯০ এর পর থেকে বিএনপি মনোনীত প্রার্থীরাই বিজয়ী হয়েছেন। তাই এবারো তার ব্যতিক্রম হবে না বলেও জানান স্থানীয় ভোটাররা।

বাসাইল ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য হারুন বেপারী বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘সুষ্ঠু নির্বাচন হলে বিএনপি ভোট বেশি পাবে। এর কারণ হচ্ছে এই সরকারের সময়ে রাস্তাঘাটের কোনো উন্নয়ন হয়নি। সম্পদশালী কেউ এমপি হলে এলাকার উন্নয়নে বেশি কাজ করতে পারবে। আব্দুল্লাহ দল মত নির্বিশেষে সকলের উপকার করেন। এ জন্য আমরা অর্থনৈতিকভাবে প্রভাবশালী নেতা হিসেবে আবদুল্লাহকে ক্ষমতায় দেখতে চাই।’

বাসাইল বাজারের এক বেকারিতে ১০ বছর ধরে চাকরি করেন মহিবুল। তিনি জানান, ছাত্রলীগ-যুবলীগের উচ্ছৃঙ্খল আচরণে অনেকেই ক্ষুব্ধ। দোষ-গুণ দুদলেরই আছে। তারপরও বিএনপি থেকে যদি আব্দুল্লাহ প্রার্থী হন, তবে তিনি ভোট পাবেন।

এছাড়া বি. চৌধুরী রাষ্ট্রপতি ও মাহি বি. চৌধুরী সাংসদ হলেও এলাকার উন্নয়নে কোনো অবদান রাখেননি বলেও জানান স্থানীয়রা।

রাঙ্গাবালিয়া গ্রামে ঢুকতেই কথা হয় কয়েকজন আলু চাষির সঙ্গে। বার্তা২৪.কমকে তারা জানান, চাষিদের উন্নয়নে যিনি কাজ করবেন এমন প্রার্থীকেই তারা দেখতে চান জনপ্রতিনিধি হিসেবে। এই সরকার কৃষকের উন্নয়নে কাজ করেনি বলেও মত এক চাষির।

আক্তার হোসেন নামে এক চাষি জানান, এইবার দাম না পেলে আলুর চাষ ছেড়ে দিতে হবে। সরকার সার বীজ, ডিজেল ও কীটনাশকের দাম বাড়িয়েছে। কিন্তু ফসলের দাম বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়নি। সারে ভর্তুকি দিয়ে চাষিদের পাশে থাকবে এমন প্রতিনিধিকেই ভোট দেবেন তিনি।

বাসাইল ইউনিয়নের মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো. সিরাজুল ইসলাম জানান, রাস্তাঘাটের অবস্থা নাজুক। আওয়ামী লীগ সরকার দুই মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পরও কোনো উন্নয়ন হয়নি। এখানকার জনগণ আর ভুল করবে না।

এখানকার তরুণ কয়েকজন ভোটারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেবে এমন প্রার্থীকেই ভোট দেবেন তারা।

আওয়ামী লীগের এক সমর্থককে দেখা যায় মোহাম্মদ আবদুল্লাহের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হতে। পেছনের এক দৃষ্টান্ত তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আবদুল্লাহ অনেক ভালো লোক। তিনি কখনো দল বিবেচনা করেন না। আমি এক সময় চাকরির জন্য তার গাজিপুর কারখানায় যাই। সেখানে এক কর্মচারী বলে আওয়ামী লীগের লোক আসছে। তখন আব্দুল্লাহ বলেছিলেন, আওয়ামী লীগ কী ওর শরীরে লেখা আছে? তার কাছে কেউ সাহায্যের জন্য গেলে খালি হাতে ফেরান না।’

মুন্সীগঞ্জের এই আসনে মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ ছাড়া আরও দুজন প্রার্থী রয়েছেন। একজন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, অপরজন বিএনপির সেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর শরাফত আলী সপু। ২ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই ও ৯ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের পর দল কাকে চূড়ান্ত প্রার্থী করবে তা দেখতে আরও কিছু সময় অপেক্ষা করতে হবে এখানকার ভোটারদের।

এ সম্পর্কিত আরও খবর