কাদের সিদ্দিকীর গলার কাটা ‘সোনার বাংলা’র ঋণ

বিবিধ, নির্বাচন

রেজা-উদ্-দৌলাহ প্রধান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট,বার্তা২৪ | 2023-09-01 19:46:02

টানা তিনবার নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার স্বপ্ন ভেস্তে গেল বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর। তাঁর প্রতিষ্ঠান ‘সোনার বাংলা প্রকৌশলী সংস্থা প্রাইভেট লিমিটেড’-এর ঋণের বোঝা এখন গলার কাটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি ঋণ খেলাপি হওয়ায় এবারো তিনি নির্বাচনে অযোগ্য হয়েছেন।

একাদশ সংসদ নির্বাচনে প্রার্থিতার জন্য বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরোত্তম টাঙ্গাইল-৮ (সখীপুর-বাসাইল) ও টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসন থেকে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। ব্যাংকে ঋণ খেলাপির অভিযোগে তার মনোননয়পত্র বাতিল করা হয়েছে।

টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসকের সভাকক্ষে যাচাই বাছাই চলাকালে কাদের সিদ্দিকীর ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠান সোনার বাংলা প্রকৌশল সংস্থা ঋণ খেলাপির তালিকায় আছে বলে অগ্রণী ব্যাংক টাঙ্গাইল শাখার সহকারী মহাব্যবস্থাপক মো. নাজিম উদ্দিন রিটার্নিং কর্মকর্তাকে জানান।

এ সময় রিটার্নিং কর্মকর্তা কাদের সিদ্দিকীর বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার বলার তেমন কিছু নেই। অনেক বড় অর্থশালী মানুষ সালমান এফ রহমানের চার হাজার ৫৪৩ কোটি টাকা ২৫ বছরের জন্য বিনা সুদে ব্লক করা আছে। এটা সত্য যে ব্যাংক আমাদের কাছে টাকা পায়। আমরা সে টাকা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত আছি।’

জানা গেছে, সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠানটি যাত্রার শুরু থেকেই বিতর্কের মধ্যে পড়ে। চুক্তি অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করতে পারেনি সোনার বাংলা প্রকৌশলী সংস্থা। যথাসময়ে কাজ শেষ করতে ব্যর্থ হওয়ায় প্রতিষ্ঠানটিকে একাধিকবার জরিমানাও করা হয়। নানাভাবে বিতর্কিত হওয়ায় প্রতিষ্ঠানটিকে কালো তালিকাভুক্ত করার সুপারিশ করেছিল আওয়ামী লীগ সরকারের সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সেন্ট্রাল ইনফরমেশন ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, কাদের সিদ্দিকী দীর্ঘ সময় ধরেই একজন ঋণ খেলাপি। তার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স সোনার বাংলা প্রকৌশলী সংস্থা অগ্রণী ব্যাংক থেকে ১০ কোটি ৮৮ লাখ টাকার ঋণ নিয়ে তা আর শোধ করেনি। সময়ের হিসাবে কাদের সিদ্দিকীর কাছে ব্যাংকের পাওনা দাঁড়ায় ২০ কোটি টাকার বেশি। কিন্তু স্বাধীনতা সংগ্রামে তার অবদানকে বিবেচনা করে সুদ মওকুফের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো অগ্রণী ব্যাংক।

পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্তক্রমে, তাঁর নয় কোটি টাকা সুদ মওকুফও করা হয়। কিন্তু তারপরও সময়মতো আসলের কিস্তি না দেওয়ায় তিনি ঋণ খেলাপি থেকে যান।

সার্বিক বিষয় নিয়ে জানার জন্য বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলেও তাকে পাওয়া সম্ভব হয়নি। তবে মনোনয়নপত্র বাতিলের পর দুপুরে টাঙ্গাইলে তিনি বলেন, ‘যতক্ষণ পর্যন্ত আমার বোন (শেখ হাসিনা) সরকার থাকবেন ততক্ষণ পর্যন্ত আমাকে মনে হয় ইলেকশন করতে দেওয়া হবে না। এ জন্য আমি খুশি। আমার নির্বাচনে দাঁড়ানো আর না দাঁড়ানো কোনো বড় কথা না।’

ঋনের কথা সত্য জানিয়ে কাদের সিদ্দিকী আরো বলেন, ‘প্রকৃত পক্ষে ব্যাংক আমার কাছে ১৯ লক্ষ টাকা পায়। সেই টাকা পর্যায়ক্রমে তিন কোটি, তার পর সাত কোটি সর্বশেষ সেই টাকা নয় কোটি ৫৬ লক্ষ ৯১ হাজার ৩০ টাকা হয়েছে।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর