সরকার ক্রমশ দেশকে রক্তপাতের দিকে ঠেলে দিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপির) চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) অলি আহমদ।
'সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশকে বিনষ্ট করে জনগণের মাঝে ভয়, উদ্বেগ, উৎকণ্ঠার পরিবেশ তৈরি করছে সরকার।' বর্তমান পরিস্থিতি পাকিস্তান এবং স্বৈরশাসকের আমলের চেয়ে বলেও খারাপ বলে মন্তব্য করেন তিনি।
সোমবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুর সোয়া তিনটায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের বঙ্গবন্ধুর সম্মেলন কক্ষে ২০ দলীয় জোট ও ঐক্যফ্রন্টের উদ্যোগে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে কর্নেল অলি বলেন, 'আমরা প্রতিহিংসামূলক রাজনীতি বিশ্বাস করি না। ২০ দলীয় জোট এবং ঐক্যফ্রন্ট আলাদা কোনো ডিমান্ড নিয়ে একত্রিত হয়নি। আমরা মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি। আমি এবং শহীদ জিয়াউর রহমান সর্বপ্রথম চট্টগ্রাম থেকে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে বিদ্রোহ শুরু করি। কিন্তু সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে মিথ্যা মামলা দেওয়ার জন্য কোনো একটি ঘটনা সংঘটিত করে ৫০ জনের নামে মামলা ঠুকে দিচ্ছে।'
২০ দলীয় জোটের এ মুখপাত্র আরো বলেন, 'একটা সময় আমাদের সবাইকে চলে যেতে হবে। এ চলে যাওয়া যেন সম্মানের হয় তা আমাদের উপলব্ধি করতে হবে। বিচারকরা আল্লাহর প্রতিনিধি। পুলিশকে বলব আপনারা আমাদের শত্রু না। আপনারা জনগণের স্বার্থে কাজ করুন।'
এ সময় সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি, ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ দলীয় জোটের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান নির্বাচনের পরিবেশ চেয়ে বলেন, 'সরকার বুলেটের মাধ্যমে জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিতে চায়। দেশে বিরোধী দলের জন্য এক আইন আর সরকারের জন্য আরেক আইন বলবৎ রয়েছে। সরকার কর্মী সভা, পোস্টার করে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করলেও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। উল্টো বিএনপির নেতা-কর্মীদের বাসায় বাসায় গিয়ে হামলা, ভয়-ভীতি প্রদর্শন করা হচ্ছে। আমরা নির্বাচনের পরিবেশের মাঝে থাকলেও নতুন করে মামলা দেওয়া হচ্ছে।'
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও চট্টগ্রাম-১১ (বন্দর-পতেঙ্গা) আসনের প্রার্থী আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, 'প্রতীক বরাদ্দের পরেও সরকার ভয়ভীতি পরিবেশ সৃষ্টি করছে। আমরা সংবিধান, গণতন্ত্র ও জনগণের কল্যাণে এক হয়ে কাজ করতে চাই। উৎসবমুখর ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে নির্বাচন প্রচার, গণসংযোগে যেতে চাই। কোনো রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসকে বরদাশত করব না। সরকার নির্বাচনী প্রচারণায় কোনো ধরনের বাধা প্রয়োগ না করে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরিতে ভূমিকা রাখবে।'
সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রাম-৯ (কোতয়ালী) আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী ও নগর বিএনপির সভাপতি ড. শাহাদাত হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্করসহ গ্রেপ্তারকৃত নেতা-কর্মীদের মুক্তি দাবি করেন।
সংবাদ সম্মেলনে কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান ও চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী) আসনের ২০ দলীয় জোটের প্রার্থী মেজর জেনারেল সৈয়দ মোহাম্মদ ইব্রাহিম বীরপ্রতীক, চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনে দক্ষিণ জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট জাফরুল্লাহ চৌধুরী, চট্টগ্রাম-৮(বোয়ালখালী-চান্দগাঁও) আসনে বিএনপির সহসভাপতি আবু ছুফিয়ান, ঐক্যফ্রন্ট প্রার্থী সরওয়ার জামান নিজাম, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সহসভাপতি নুরুল আলম, চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি) আসনের আজিমুল্লাহ বাহার ও নগর বিএনপির সভাপতি ড. শাহাদাতের নির্বাচনের সমন্বয়কারী বদরুল আনোয়ার উপস্থিত ছিলেন।