সুধাসদনে নির্বাচনী কার্যক্রম তদারকি করবেন শেখ হাসিনা

বিবিধ, নির্বাচন

রেজা-উদ্-দৌলাহ প্রধান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-21 10:01:55

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আর বাকি মাত্র ১৮ দিন। ইতোমধ্যে প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ হয়ে গেছে। নির্বাচনী প্রচারণাও শুরু। বুধবার (১২ ডিসেম্বর) থেকে আনুষ্ঠানিক নির্বাচনী প্রচারণায় নামছে আওয়ামী লীগ।

এদিকে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী কার্যক্রমের জন্য গণভবন নয় ‘সুধাসদনকে’ ব্যবহার করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ইতোমধ্যে সুধাসদনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে।

জানা গেছে, নির্বাচনী কাজে সরকারি সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করবেন না প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবন ব্যবহার করবেন না আওয়ামী লীগ সভাপতি। আগামী ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত দলের যাবতীয় নির্বাচনী কার্যক্রম পরিচালনা করবেন ধানমন্ডি ৫ নম্বরে নিজস্ব বাসভবন ‘সুধাসদন’ থেকে। এখান থেকে দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ, নীতিনির্ধারণী বৈঠক এবং ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে জেলা নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন তিনি।

নির্বাচনী কার্যক্রম সমন্বয় এবং নেতাকর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করতে বৃহস্পতিবার (১৩ ডিসেম্বর) থেকে নিয়মিত ‘সুধাসদনে’ বসবেন তিনি। ইতিমধ্যে যাবতীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। পুরো ভবনকে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করে নতুনভাবে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। তৈরি হয়েছে বিশাল একটি ভিডিও কনফারেন্স রুম।

এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান বার্তা২৪কে বলেন, ‘নির্বাচনকালীন সময়ে সরকারি স্থাপনা ও সুযোগ সুবিধা নির্বাচনী আচরণ বিধির পরিপন্থী হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদ নির্বাচন কার্যক্রম তদারকির জন্য সুধাসদনকে ব্যবহার করবেন। তিনি এখান থেকে ভিডিও কনফারেন্সে অংশ নেবেন। নেতাকর্মীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।’

আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারণী পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে জানা গেছে, টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন ও ফাতেহা পাঠের মাধ্যমে নির্বাচনী প্রচার শুরু করবে ক্ষমতাসীন দল। দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের একটি দল বুধবার (১২ ডিসেম্বর) সেখানে যাবেন। বিকেলে টুঙ্গিপাড়া এবং কোটালীপাড়ায় পৃথক দুটি নির্বাচনী জনসভায় ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী। উন্নয়নের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে নৌকায় ভোট চাইবেন বঙ্গবন্ধুকন্যা।

টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়ায় পৃথক দুটি জনসভায় যোগ দেয়ার পর টুঙ্গিপাড়ায় নিজ বাড়িতে রাত্রিযাপন করবেন শেখ হাসিনা। পরদিন বৃহস্পতিবার (১৩ ডিসেম্বর) সড়কপথে মাওয়া হয়ে ঢাকায় ফিরবেন তিনি। ঢাকায় ফেরার পথে ফরিদপুরে দুটি এবং মুন্সীগঞ্জে একটি পথসভায় যোগ দিতে পারেন শেখ হাসিনা।

জান গেছে, এবার ২০টি জেলায় নির্বাচনী জনসভা এবং পথসভায় অংশ নিচ্ছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী। জেলাগুলোর মধ্যে রয়েছে- সিলেট, মৌলভীবাজার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ফেনী, কুমিল্লা, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, চট্টগ্রাম, রংপুর, জয়পুরহাট, বগুড়া, নড়াইল, যশোর, বাগেরহাট, টাঙ্গাইল, সিরাজগঞ্জ, রাজশাহী ও নাটোরসহ আরও বেশ কয়েকটি জেলা।

নির্বাচনী প্রচারণায় সরকারি কোনো সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করা হবে না বলে প্রধানমন্ত্রী সড়কপথেই টুঙ্গিপাড়ায় যাবেন এবং সড়কপথেই ফিরবেন।

এদিকে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রচারণার অংশ হিসেবে আওয়ামী লীগের জেষ্ঠ্য নেতাদের সমন্বয়ে আট বিভাগের জন্য আটটি টিম গঠন করা হয়েছে। ওই টিমে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা জেলায় জেলায় নৌকার পক্ষে প্রচারণায় অংশ নেবেন। আর কেন্দ্রীয়ভাবে কাজগুলোর সমন্বয়ের দায়িত্বে রয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

অপরদিকে, নির্বাচনী কাজে বিশেষ দায়িত্ব পালন করবেন এবার মনোনয়ন বঞ্চিত চার হেভিওয়েট নেতা যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক ও আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম।

দলীয় সূত্র জানায়, যেসব নেতা দলের মনোনয়ন পাননি তারা প্রত্যেকেই একাধিক জেলা ও নির্বাচনী এলাকায় সফর করবেন। আর যেসব নেতা মনোনয়ন পেয়েছেন তারা নিজ জেলা ও পাশ্ববর্তী জেলায় নৌকার পক্ষে ভোট প্রচারণায় অংশ নেবেন বলে জানা গেছে।

এ প্রসঙ্গে আবদুর রহমান বলেন, ‘নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিতে আট বিভাগের জন্য আটটি টিমের খসড়া তালিকা করা হয়েছে। দলীয় সভাপতি তালিকা চূড়ান্ত করবেন। বৃহস্পতিবার থেকে নৌকায় ভোট চাইতে কেন্দ্রীয় নেতাদের আটটি টিম আট বিভাগের জেলা-উপজেলা চষে বেড়াবেন।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর