নেত্রকোনা-৩: প্রচারণায় নৌকা তুঙ্গে, নীরব ধানের শীষ

বিবিধ, নির্বাচন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-31 17:32:04

নেত্রকোনা-৩ (আটপাড়া-কেন্দুয়া) আসনে নৌকার প্রচারণা এখন তুঙ্গে। তবে প্রতীক বরাদ্দের আট দিন পেরিয়ে গেলেও প্রচার-প্রচারণার ক্ষেত্রে অনেকটাই নীরব রয়েছে নৌকার প্রধান প্রতিপক্ষ ধানের শীষ। এছাড়া এ আসনে অন্য দলের প্রার্থীদের প্রচারণাও চোখে পড়ছে না বলে জানান ভোটাররা।

জেলা রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আসনটিতে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ছয়জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

তারা হলেন- আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, বিএনপি মনোনীত প্রার্থী দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও কেন্দুয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি রফিকুল ইসলাম হিলালী, জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক জসিম উদ্দিন ভূঁইয়া, কমিউনিস্ট পার্টি মনোনীত প্রার্থী কমরেড আনোয়ার হোসেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থী জাকির হোসেন ও ইসলামী ঐক্যজোট মনোনীত প্রার্থী এহতেশাম সারোয়ার।

আসনটিতে ছয়জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও মূল লড়াই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে নৌকা ও ধানের শীষ প্রতীকের মধ্যে। তবে নৌকার প্রার্থী দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে উৎসব আমেজের মাধ্যমে প্রচারণা অব্যাহত রাখলেও একেবারেই নীরব ধানের শীষের প্রার্থীসহ দলটির নেতাকর্মীরা। নৌকার প্রার্থী অসীম কুমার উকিল এবারই প্রথমবারের মতো দলীয় মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচনে লড়ছেন বলে জানা গেছে।

এ আসনে আওয়ামী লীগের চব্বিশজন প্রার্থী দলীয় মনোনয়ন চাইলেও শেষে নৌকার টিকিট দেওয়া হয় নব্বইয়ের স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম নেতা ও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অসীম কুমার উকিলকে।

এতে মনোনয়ন বঞ্চিত অন্য সকল প্রার্থীরা বিরাগ না হয়ে অসীম কুমার উকিলকে সমর্থন দিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে নৌকার বিজয়ের লক্ষে মাঠে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া প্রার্থী অসীম উকিলের স্ত্রী যুব মহিলা লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক এমপি অধ্যাপক অপু উকিলও স্বামীর পক্ষে দিন-রাত নির্বাচনী এলাকায় কোমর বেঁধে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।

অপরদিকে বিএনপি প্রার্থী রফিকুল ইসলাম হিলালী প্রতীক বরাদ্দের পর দু-তিন দিন এলাকায় অবস্থান করে চুপি চুপি প্রচারণা চালানোর চেষ্টা করলেও শেষ পর্যন্ত আর রক্ষা পাননি। আওয়ামী লীগের মিছিলে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ ও গুলি বর্ষণের অভিযোগে বিশেষ ক্ষমতা আইন ও বিস্ফোরক মামলার আসামি হয়ে তিনি এলাকা ছাড়া হন বলে জানা যায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ইতোমধ্যে কেন্দুয়া ও আটপাড়া থানায় প্রার্থীসহ বিএনপির সহস্রাধিক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে ছয়টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এসব মামলার কারণে দলটির নেতাকর্মীরা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। তবে গত মঙ্গলবার প্রার্থী রফিকুল ইসলাম হিলালীসহ বেশ কিছু নেতাকর্মী উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন দলটির নেতারা।

কেন্দুয়া উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান ভূঁইয়া মজনু জানান, বিএনপির পক্ষে গণজোয়ার দেখে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আতঙ্কিত। তাই তারা বিএনপিকে প্রচার-প্রচারণার বাইরে রাখতে একের পর এক মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক গায়েবি মামলা দায়ের করে হয়রানি করছে। এছাড়া বিএনপির প্রচার মাইক ভেঙে ফেলা, পোস্টার ছিঁড়ে ফেলাসহ নেতাকর্মীদের প্রচারণায় নামতে বাধা দেওয়া হচ্ছে বলে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন তিনি।

এদিকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী জসিম উদ্দিন ভূঁইয়া দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে সম্প্রতি কেন্দুয়া পৌর শহরে মতবিনিময় সভা করলেও কোনো প্রচারণায় তারা নেই। তবে কেন্দুয়া পৌর শহরের বেশ কয়েক জায়গায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থী জাকির হোসেনের পোস্টার দেখা গেলেও প্রার্থীকে প্রচারণায় দেখছেন না বলে জানান ভোটাররা। এছাড়া প্রচারণার মাঠে আলোচনায় নেই ঐক্যজোট প্রার্থী এহতেশাম সারোয়ারও।

এ সম্পর্কিত আরও খবর