সাতক্ষীরা-২: উজ্জীবিত নৌকা, কোণঠাসা ধানের শীষ

বিবিধ, নির্বাচন

ডিস্ট্রিক করেসপন্ডেন্ট, সাতক্ষীরা, বার্তা২৪.কম | 2023-08-30 16:48:12

নির্বাচনী হাওয়ায় সাতক্ষীরা-২ (সদর) আসনে বেজে উঠেছে ভোটের বাদ্য। প্রচারে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন প্রার্থীরা। প্রার্থীদের পদচারণায় মুখরিত হতে শুরু করেছে প্রত্যন্ত অঞ্চল।

আর প্রচার-প্রচারণায় উজ্জীবিত আওয়ামী লীগ প্রার্থী। কিন্তু কোণঠাসা হয়ে মাঠে নেই বিএনপির মনোনীত ধানের শীষের প্রার্থী। নৌকা, লাঙ্গল ও হাতপাখা প্রতীকের ব্যানার, পোস্টার দেখা গেলেও দেখা নেই ধানের শীষের। মাইকিংয়ের ক্ষেত্রেও একই অবস্থা।

৩৮টি মামলা নিয়ে বর্তমানে কারাগারে আছেন সাতক্ষীরা সদর আসনের ধানের শীষের প্রার্থী জামায়াতের সাবেক জেলা আমির মুহাম্মদ আব্দুল খালেক। প্রতীক বরাদ্দ পাবার পর তার পক্ষে কয়েকদিন প্রচার প্রচারণা চললেও এখন তা আর দেখা যাচ্ছে না। তবে কৌশলী হয়ে গোপনে প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছে বলে জানা গেছে।

এদিকে আসনটি পুনরায় ফিরে পেতে পুরোনো দ্বন্দ্ব ভুলে অওয়ামী লীগের বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মোস্তাক আহমেদ রবি সঙ্গে এক হয়ে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় কাজ করছে জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ। উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সাধারণ ভোটারদের মন আকৃষ্ট করার চেষ্টা চালছে।

আসনটির অন্যান্য প্রার্থীরা হলেন- জাতীয় পার্টির শেখ মাতলুব হোসেন লিয়ন, নিত্যানন্দ সরকার (বাম গণতান্ত্রিক জোট), জুলফিকার রহমান (ন্যাশনাল পিপলস পার্টি) ও মুফতি রবিউল ইসলাম (ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন)।

নির্বাচন বিশ্লেষকদের মতে, স্বাধীনতা পরবর্তী এ আসনটি বরাবরই জামায়াতের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত ছিল। পরবর্তীতে জাতীয় পার্টি আসনটি দখল করে নেয়। ২০১৪ সালে দশম সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে বর্তমান সংসদ সদস্য ও মুক্তিযোদ্ধা মীর মোস্তাক আহমেদ রবি এমপি হিসেবে জয়ী হয়েছিলেন। ওই সময় জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দর সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন তিনি। পরবর্তীতে রবি একাদশ সংসদ নির্বাচনের মনোনয়ন পাওয়ার পর আবার সবাই এক হয়ে নির্বাচনী মাঠে কাজ করছেন।

জেলা নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক আনিসুর রহিম বলেন, ‘মহাজোটগতভাবে বর্তমান সংসদ সদস্য মীর মোস্তাক আহমেদ রবিকে মনোনয়ন দেওয়া হলেও জাতীয় পার্টি প্রার্থী দেওয়ায় বেশ ক্ষতির সম্মুখিন হতে হবে মহাজোটের প্রার্থীকে। কারণ এ আসনটি জামায়াতের ঘাঁটি। আর সেখানে জামায়াতের হয়ে ধানের শীষে নির্বাচন করছে খালেক মন্ডল। তিনি বেশ শক্ত প্রার্থী। তবে জেলা আওয়ামী লীগের দীর্ঘদিনের দ্বন্দ্ব আপাতত দৃষ্টিতে মিমাংশা হলেও সেটা বাস্তবে দেখতে চায় সাতক্ষীরাবাসী।’

জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক হারুন আর রশিদ বলেন, ‘জেলা আওয়ামী লীগের মধ্যে কোনো দ্বন্দ্ব নেই। শুধুমাত্র ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। সেটা মীমাংশা হয়ে গেছে। ভোটের মাঠে আমরা সবাই এক হয়ে কাজ করছি। আমাদের মধ্যে কোনো বিভেদ নেই।’
মহাজোটের প্রার্থীকে জেতাতে সবাই মরিয়া হয়ে কাজ করছে বলেও জানান তিনি।

জেলা জমায়াতের প্রচার সম্পাদক আজিজুর রহমান বলেন, ‘আমাদের প্রার্থীকে মাঠে নামতে দেওয়া হচ্ছে না। প্রচার চালাতেও বাঁধা দেওয়া হচ্ছে। তাহলে আমরা কিভাবে নির্বাচন করবো।’

সাতক্ষীরা-২ (সদর) আসনটি ১৪ টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত। এ আসনটিতে মোট ভোটার ৩ লাখ ৫৬ হাজার ১শত ৮৪জন। এ আসনটিতে এবার পুরুষ ভোটার বেড়েছে ২১ হাজার ২ জন। নারী ভোটার বেড়েছে ২০ হাজার ৯শত ৬৫ জন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর