রমেশ একশ, মির্জা ফখরুল শতভাগ

বিবিধ, নির্বাচন

সেরাজুল ইসলাম সিরাজ ও নাহিদ রেজা | 2023-07-19 06:26:58

ঠাকুরগাঁও থেকে: ঠাকুরগাঁও শহরের পা দিয়ে মনটা ভরে গেলো। জমজমাট নির্বাচনী প্রচারণা বলতে যা বুঝায়, তার সবটাই জেলা সদরে বিদ্যমান। ঠাসাঠাসি করে ঝুলছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির দুই হেভিওয়েট প্রার্থীর পোস্টার-ব্যানার।

শহরের প্রাণকেন্দ্র চৌরাস্তা মোড়ে সূর্যের আলো মাটি ভেদ করতে পারছে না দুই প্রার্থীর পোস্টার-ব্যানারের কারণে। কেউ কারও থেকে কম নয়। একজনকে একশ’ নম্বর দিলে অন্যজনকে দিতে হবে শতভাগ। গায়ে গায়ে লাগিয়ে ব্যানার ঝুলছে দুই প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বি দলের প্রার্থীর। কয়েকদিন ধরে দেশের উত্তরের জেলাগুলো চক্করে আর কোথাও এমন দৃশ্য চোখে পড়েনি।

আবার দুই দলের হেভিওয়েট প্রার্থী হওয়ায় সাধারণ ভোটারদের মধ্যেও বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা গেছে। এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়েছেন দলটির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম প্রেসিডিয়ামের সদস্য রমেশ চন্দ্র সেন। একাধিক দফায় তিনি এই আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছেন। জায়গা করে নিয়েছেন মন্ত্রিসভাতেও।

তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বি বিএনপির প্রার্থী দলটির খোদ মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। দু’জনের বাড়িই উত্তরের সীমান্ত ঘেঁষা এই জেলা সদরে। আওয়ামী লীগের প্রার্থী একাধিক দফায় নির্বাচিত হলেও মির্জা ফখরুল ইসলাম জিতেছেন মাত্র একবার ২০০১ সালে।

সদর উপজেলা নিয়ে গঠিত ঠাকুরগাঁও-১ আসনে রয়েছে আওয়ামী লীগের বিশাল ভোট ব্যাংক। সঙ্গে ১ লাখ ২০ হাজার সংখ্যালঘু ভোটার আওয়ামী লীগের নিয়ামক শক্তি হিসেবে কাজ করে থাকে। আবার মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এলাকার মানুষের কাছে রাজনীতিবিদের তুলনায় শিক্ষক হিসেবে অধিক পরিচিত। ভদ্র ও সজ্জন হিসেবে জানেন এলাকার লোকজন।

যেই জিতুক এখানে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের সম্ভাবনা দেখছেন ভোটাররা। তারা মনে করছেন বিগত সময়ে যেই যখন জিতেছেন বিপুল ভোটের ব্যবধানে জিতেছেন। যেমন ২০০৮ সালে মির্জা ফখরুলকে প্রায় ৫৭ হাজার ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেছিলেন রমেশ চন্দ্র। আবার ২০০১ সালে রমেশ চন্দ্রকে ৩৮ হাজার ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেছিলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ওই নির্বাচনে ফখরুল পেয়েছিলেন ১ লাখ ৩৪ হাজার ভোট আর রমেশ চন্দ্র পেয়েছিলেন ৯৬ হাজার ভোট।

এবার তেমনটা নাও হতে পারে। তবে কেউ কেউ বিএনপির প্রার্থীকে এগিয়ে রাখতে চাইছেন আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে। যার শুরুটা হয়েছে বিগত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের সময়ে। তখন গোপনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর বিপক্ষে কাজ করার অভিযোগ রয়েছে আওয়ামী লীগের এই সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে।

সেই চিড় এখনও পুরোপুরি সেরে ওঠেনি। যে কারণে নির্বাচনী ডামাডোলে দলে বিশাল একটি অংশ নিষ্ক্রিয় রয়েছেন। আর এতেই কপাল খুলতে পারে বিএনপি মহাসচিবের।

আওয়ামী লীগ প্রার্থী রমেশ চন্দ্র সেন বার্তা২৪.কমকে বলেছেন, আমরা জোরলোভাবে নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চালিয়ে যাচ্ছি। মানুষ উন্নয়ন চায়। তারা আওয়ামী লীগকে ভোট দেবে।

জয়ের বিষয়ে কতটুকু আশাবাদি এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, এটা আমি কেমন করে বলবো। এটা কোনো প্রার্থী বলতে পারে! এটা বলবে জনগণ।

তবে বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে। শহরে তেমন সমস্যা না হলেও শহরের বাইরে বিভিন্ন গ্রামে তাদের ক্যাম্পেইনে বাঁধা দেওয়া হচ্ছে। অনেককে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর