শেষ মুহূর্তে রাজশাহীজুড়ে জমজমাট প্রচারণা

বিবিধ, নির্বাচন

ইলিয়াস আরাফাত, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, রাজশাহী, বার্তা২৪.কম | 2023-08-26 05:57:52

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে প্রচারণার শেষ দিন আজ (২৭ ডিসেম্বর)। শেষ মুহূর্তে রাজশাহী মহানগর ও জেলার প্রতিটি জায়গায় জমজমাট প্রচারণা চলছে। মূলত ভোটারদের মন জয় করতে শেষ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন প্রার্থীরা। ছোট-বড় জনসভা থেকে শুরু করে মাইকের স্লোগানে মুখরিত এলাকা। তবে শেষ সময়ের প্রচারণায় নির্বাচনী মাঠে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা অনেকখানি এগিয়ে গেছে।

রাজশাহী-১ (তানোর-গোদাগাড়ী) আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী ওমর ফারুক চৌধুরী ও বিএনপির প্রার্থী আমিনুল হকের জমজমাট প্রচারণা চলছে। প্রচারের শুরুর দিকে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সমানভাবে শুরু করলেও দিন যত গড়াতে থাকে ততই নৌকার প্রচারের পাল্লা ভারী হতে থাকে।

এ বিষয়ে বিএনপির প্রার্থী ব্যারিস্টার আমিনুল হকের অভিযোগ, তাদের নেতা–কর্মীদের ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে।

আওয়ামী লীগের প্রার্থী রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, বর্তমান সাংসদ ওমর ফারুক চৌধুরী জানান, প্রচারে তারা বিএনপির চেয়ে অনেক এগিয়ে। বিএনপির প্রার্থী আমিনুল হক তো গত ১০ বছর মাঠে ছিলেন না।

নেতাদের ভয়ভীতি দেখানো ও পোস্টার ছেঁড়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি জানান, বিএনপি হচ্ছে অভিযোগের দল। মিথ্যা কথা বলতে বলতে তাদের অভ্যাস হয়ে গেছে।

এই আসনে অন্য প্রার্থীরা হলেন- ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. আ. মান্নান ও বাসদের আলফাজ হোসেন।

রাজশাহী-২ আসনে (রাজশাহী সিটি করপোরেশন এলাকা) মহাজোটের প্রার্থী বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা আর বিএনপি প্রার্থী রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিনু। বিএনপির কিছু অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও এই আসনে জমজমাট প্রচার চলছে। ফজলে হোসেন গত ১০ বছরের উন্নয়ন নিয়ে কথা বলছেন। মিজানুর রহমানও তার সময়ের উন্নয়নের ফিরিস্তি তুলে ধরে ভোটের শেষ মুহূর্তের প্রচার চালাচ্ছেন।

রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বর্তমান সাংসদ আয়েন উদ্দিন ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী রাজশাহী মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শফিকুল হক। এখানেও শেষ মুহূর্তের প্রচারণা জমজমাট। এ আসনে প্রচারণায় বিএনপির প্রার্থীর থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী অনেক এগিয়ে।

আওয়ামী লীগের প্রার্থী আয়েন উদ্দীন জানান, বিএনপির প্রার্থী রাজশাহী শহরের মানুষ। আর তিনি মোহনপুরের ছেলে। এ জন্য লোকজন স্থানীয় প্রার্থীকে রেখে বহিরাগত কাউকে ভোট দেবে না। তাই বিএনপি এখানে কোনো লোক খুঁজে পাচ্ছে না।

রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী এনামুল হক আর বিএনপির প্রার্থী আবু হেনা। এই আসনেও জমজমাট প্রচার-প্রচারণা চলছে। বৃহস্পতিবার বাগমারা এলাকায় নির্বাচনের প্রচারণার শেষ অংশ হিসেবে বিশাল জনসভার আয়োজন করেছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক।

আওয়ামী লীগের প্রার্থী এনামুল হক জানান, বাগমারায় বিএনপির প্রার্থীকে না করে দিয়েছে ভোটাররা। আবু হেনার পক্ষে পোস্টার লাগানোর লোক নেই। এখন বাইরে থেকে লোক ভাড়া করে এনে পোস্টার লাগাতে চান তিনি।

রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসনে এবার আওয়ামী লীগের নতুন মুখ মনসুর রহমান। সাংসদ আবদুল ওয়াদুদকে ঘিরে দলের মধ্যে যে বিভক্তি তৈরি হয়েছিল, নতুন প্রার্থী হওয়ায় তা মিটে গেছে। অপর দিকে বিএনপি এই আসনে প্রার্থী বিড়ম্বনায় পড়েছে। বিএনপির সাবেক সাংসদ নাদিম মোস্তফা ঋণখেলাপি ও তথ্য গোপন করার অভিযোগে বাছাইয়ে বাদ পড়েছিলেন। এরই মধ্যে নজরুল ইসলামকে এই আসনে চূড়ান্ত প্রার্থী বলে ঘোষণা দেয় বিএনপি। এরপর উচ্চ আদালত থেকে নাদিম মোস্তফা আপিল করে তার প্রার্থিতা ফিরে পেয়ে ৯ ডিসেম্বর বিকেলে বিএনপির চূড়ান্ত প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দেন।

এদিকে নজরুল ইসলামের পক্ষ থেকে রিটার্নিং কর্মকর্তাকে বিবাদী করে তার প্রার্থিতা ফিরে পাওয়ার জন্য হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১৭ ডিসেম্বর নজরুল ইসলাম তার প্রার্থিতা ফিরে পান। আগে নাদিম মোস্তফা প্রার্থী হিসেবে ব্যাপক গণসংযোগ করছিলেন। এরপর থেকে নজরুল ইসলাম সেই গণসংযোগ শুরু করেছেন। তবে ততদিনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ডা. মনসুর রহমান অনেক এগিয়ে গেছেন। শেষ মুহূর্তের প্রচারণায় তাই বেশ এগিয়ে আওয়ামী লীগ।

রাজশাহী-৬ (বাঘা-চারঘাট) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হচ্ছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। এখানে বিএনপির কোনো প্রার্থী নেই। বিএনপির প্রার্থী মো. আবু সাঈদ চাঁদের প্রার্থিতা বাতিল হয়েছে। এই আসনে শেষ মুহূর্তে আওয়ামী লীগ একচেটিয়া ভাবে এগিয়ে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর