ময়মনসিংহের ১১ আসনে কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে আ.লীগ প্রার্থিরা

, নির্বাচন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ময়মনসিংহ | 2023-12-16 03:14:16

ময়মনসিংহে ১১টি আসনের মধ্যে ৭টিতে আসনে চ্যালেঞ্জের মুখে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থিরা। তবে চারটি আসনে সুবিধাজনক অবস্থানে তারা। বাকী ৭টি আসনে শেষ পর্যন্ত যদি স্বতন্ত্র প্রার্থিরা নির্বাচনী মাঠে থাকে তাহলে নির্বাচন কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

ময়মনসিংহ-১ (হালুয়াঘাট-ধোবাউড়া) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বর্তমান সাংসদ জুয়েল আরেং। এ আসনে জুয়েল আরেং এর বিরুদ্ধে প্রার্থী হয়েছেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মাহমুদুল হক সায়েম।। এই দুইজনের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।এ আসনে মোট বৈধ প্রার্থীর সংখ্যা ৭ জন।

ময়মনসিংহ-২ (ফুলপুর-তারাকান্দা) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ। এ আসনে প্রার্থী হয়েছেন বিএনপির সাবেক এমপি শাহ শহীদ সারোয়ার। তবে এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ অনেক জনপ্রিয় তাই এ আসনে তেমন কোনো চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে না। এই আসনে মোট বৈধ প্রার্থীর সংখ্যা ৯ জন।

ময়মনসিংহ-৩ (গৌরীপুর) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নিলুফার আনজুম পপি তার বিরুদ্ধে প্রার্থী হয়েছেন বর্তমান এমপি নাজিম উদ্দীন আহমেদ এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সোমনাথ সাহা। এই আসনে মোট বৈধ প্রার্থীর সংখ্যা ১৩ জন।

ময়মনসিংহ-৪ (সদর) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহিত উর রহমান শান্ত। এ আসনে জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আমিনুল হক শামীম স্বতন্ত্র প্রার্থী। এছাড়াও স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছে বিএনপি সাবেক সংসদ সদস্য দেলোয়ার হোসেন খান দুলু।এই আসনে মোট বৈধ প্রার্থীর সংখ্যা ১২ জন।

ময়মনসিংহ-৫ (মুক্তাগাছা) এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই আকন্দ তার বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য বদর উদ্দিন আহমেদ এবং কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি নজরুল ইসলাম। আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই আকন্দ অনেক জনপ্রিয় হওয়ায় সহজেই বিজয়ী হবে। তবে এ আসনটি জোটের কারণে আওয়ামী লীগ জাতীয় পার্টির সাবেক এমপি সালাহ উদ্দিন আহমেদ মুক্তিকে ছেড়ে দেওয়ার গুঞ্জন রয়েছে । এই আসনে মোট বৈধ প্রার্থীর সংখ্যা ৭ জন।

ময়মনসিংহ-৬ (ফুলবাড়িয়া) এ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী একবারের গণপরিষদ সদস্য ও পাঁচবারের এমপি মোসলেম উদ্দিন। আপিল করে মনোনয়ন পত্রের বৈধতা পেয়েছেন বর্তমান এমপির মেয়ে সেলিমা বেগম সালমা।এছাড়াও রয়েছে জাসদের সৈয়দ শফিকুল ইসলাম মিন্টু। ধারণা করা হচ্ছে প্রবীণ বর্তমান সংসদ সদস্য এ বার ও ব্যাপক ভোটে বিজয়ী হবেন।এ আসনে মোট বৈধ প্রার্থীর সংখ্যা ৭ জন।

ময়মনসিংহ-৭ (ত্রিশাল) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বর্তমান এমপি হাফেজ রুহুল আমীন মাদানী আবার ও মনোনয়ন পেয়েছেন। পৌর মেয়রের পদ থেকে পদত্যাগ করে নৌকার বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এবিএম আনিসুজ্জামান এবং জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ত্রিশাল আওয়ামী লীগের সদস্য আমিনুল হক শামীম। এই আসনে ত্রিমুখী লড়াই হবে। এই আসনে মোট বৈধ প্রার্থীর সংখ্যা ৭ জন।

ময়মনসিংহ-৮ (ঈশ্বরগঞ্জ) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাবেক এমপি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো আব্দুছ ছাত্তার। এ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মাহমুদ হাসান সুমন ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান বদরুল আলম প্রদীপ।

তবে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর প্রধান বাঁধা মাহমুদ হাসান সুমন। তবে গুঞ্জন রয়েছে জোটের কারণে আওয়ামী লীগ এই আসনটি জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য বর্তমান সংসদ ফখরুল ইমামকে ছেড়ে দেওয়া হতে পারে । এই আসনে মোট বৈধ প্রার্থীর সংখ্যা ৫ জন।

ময়মনসিংহ-৯ (নান্দাইল) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মেজর জেনারেল (অব.)আব্দুস সালাম তিনি ১৯৯৬ ও ২০০৮ সালে এ আসনটিতে এমপি ছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে ২০১৪ সাল থেকে টানা দুইবারের এমপি আনোয়ারুল আবেদিন খান তুহিন স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন।যদি স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান এমপি আনোয়ারুল আবেদিন খান তুহিনের আপিলে

আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আব্দুস সালাম মনোনয়ন বৈধতা হারিয়েছেন। যদি ও আপিল করার সুযোগ রয়েছে। এই আসনে মোট বৈধ প্রার্থীর সংখ্যা ৬ জন।

ময়মনসিংহ-১০ (গফরগাঁও) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে আবার মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য ফাহমী গোলন্দাজ বাবেল। তার বিরুদ্ধে জাতীয় পার্টির নাজমুল ইসলাম গণতন্ত্র পার্টি দ্বীন ইসলাম, ও জাকের পার্টি মোহম্মদ আনোয়ার হোসেন খান। তবে বর্তমান সংসদ সদস্যের জনপ্রিয়তায় অন্যান্য প্রার্থীদের জামানত বাজেয়াপ্তের শঙ্কা রয়েছে।এই আসনে মোট বৈধ প্রার্থীর সংখ্যা ৪ জন।

ময়মনসিংহ-১১ (ভালুকা) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী কাজীম উদ্দিম আহমেদ ধনু। এ আসনে নৌকা বিরুদ্ধে প্রার্থী হয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এম এ ওয়াহেদ। ধারণা করা হচ্ছে নৌকার প্রার্থীর সঙ্গে মূল লড়াই হবে এম এ ওয়াহেদের সাথে। এই আসনে মোট বৈধ প্রার্থীর সংখ্যা ৭ জন।

ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এহতেশামুল আলম বলেন- উপজেলা আওয়ামী লীগকে বলা হয়েছে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সাথে সমঝোতা করতে। মৌখিকভাবে বলা হয়েছে চিঠি ও দেওয়া হয়েছে এবং নির্বাচন উৎসবমুখর ও অর্থবহ করতে স্বতন্ত্র প্রার্থী থাকলেও সমস্যা নেই।

এ সম্পর্কিত আরও খবর