বিএনপির নাশকতা চেষ্টা মামলার আসামিকে দেখা গেল দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বরগুনা–১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর মঞ্চে। বক্তব্য রাখলেন, নৌকার মার্কার পক্ষে ভোটও চাইলেন তিনি!
রোববার (২৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় সদর উপজেলার গৌরিচন্না ইউনিয়নের গৌরিচন্না মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে শম্ভুর জনসভা হয়। সেখানে বক্তব্য দেন সদর উপজেলার বদরখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মতিউর রহমান রাজা। তার বিরুদ্ধেই পুলিশের মামলা রয়েছে।
ওই জনসভায় বক্তব্যে মতিউর রহমান সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক স্বপন শরীফের সমালোচনা করেন। সেই সঙ্গে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে ভোট দিতে ভোটারদের প্রতি আহ্বান জানান। বক্তব্যে বদরখালী ইউনিয়ন থেকে সর্বোচ্চ ভোট নৌকায় দেওয়া হবে, নয়তো চেয়ারম্যান পদ থেকে তিনি অব্যাহতি নেবেন এমন অঙ্গীকারও করেন মতিউর রহমান।
বরগুনা সদর থানা সূত্রে জানা গেছে, গত নভেম্বরে বিস্ফোরক দ্রব্য ব্যবহার করে নাশকতা চেষ্টার অভিযোগে বরগুনা জেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের শতাধিক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে সদর থানায় মামলা করে পুলিশ। মামলা নং জিআর ৩৫৪ / ২৩।
ওই মামলায় মতিউর রহমান রাজাকেও আসামি করা হয়েছে। মামলার বাদী বরগুনার সদর থানার এসআই (নিরস্ত্র) মো. আবু হানিফ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। আবু হানিফ জানান, বরগুনা সদর থানার এসআই নুরুজ্জামান মামলাটি তদন্ত করছেন।
মতিউর রহমান রাজা গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সদরের বরদখালী ইউনিয়ন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তিনি জেলা বিএনপির (হালিম–নজরুল কমিটি) কমিটির সদস্য ছিলেন। এছাড়া বরগুনা জেলা শ্রমিক দলের সভাপতি প্রার্থী ছিলেন। জেলা বিএনপির একটি দায়িত্বশীল সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
এ বিষয়ে জানতে বদরখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মতিউর রহমান রাজার মোবাইল ফোন নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। তার বিষয়ে বদরখালী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান স্বপন শরীফ বলেন, আমি নৌকার প্রার্থী ছিলাম। আমি যাতে নির্বাচনে জয়লাভ করতে না পারি সেজন্য এমপি ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু বিএনপির মতিউর রহমান রাজাকে স্বতন্ত্র প্রার্থী করেন। তার প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় আমাকে হারিয়ে দেওয়া হয়েছে। সরকার পতন আন্দোলনে যারা জড়িত সেই বিএনপি নেতাদের এখন নিজের স্বার্থে মঞ্চে উঠিয়েছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু।
এ ব্যাপারে বরগুনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. আবদুল হালিম বলেন, মতিউর রহমান রাজা মামলার পলাতক আসামি। আমরা তার ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট তথ্য পেলে যে কোনো সময়ে গ্রেফতার করব।
বরগুনা–১ আসনের এমপি ও আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর মোবাইল ফোন নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
তবে বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত আব্বাস হোসেন মন্টু মোল্লা বলেন, জনগণের চাপে রাজা আমাদের জনসভায় এসেছেন এবং বক্তব্য রেখেছেন। তবে তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দেননি।
বিএনপির নাশকতা চেষ্টা মামলার আসামিকে মঞ্চে তোলার প্রসঙ্গে মন্টু মোল্লা বলেন, আমাদের এখন ভোট দরকার।