নৌকার জন্য মরিয়া নড়াইলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা

বিবিধ, নির্বাচন

শরিফুল ইসলাম, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, নড়াইল, বার্তা২৪.কম | 2023-08-29 05:54:14

একাদশ সংসদ নির্বাচনের রেশ কাটতে না কাটতেই বইতে শুরু করেছে উপজেলা নির্বাচনের আগাম হাওয়া। উপজেলা নির্বাচনকে সামনে রেখে নৌকার সমর্থন পেতে মরিয়া হয়ে পড়েছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা। ইতোমধ্যে চেয়ারম্যান ভাইস-চেয়ারম্যান পদে বিভিন্নস্থানে পোস্টার লাগানো হয়েছে তাদের। মনোনয়নের জন্য স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে ধরনা দিচ্ছেন প্রার্থীরা।

জানা গেছে, নড়াইল জেলা আওয়ামী লীগের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত হওয়ায় প্রার্থীরা নৌকা প্রতীক পেতেই চালাচ্ছেন তদবির। তাই গণসংযোগের পাশাপাশি প্রতীক পেতে নেতাদের কাছে ঘুরছেন। কারণ নৌকা পেলেই এখানকার বৈতরণী পার হওয়া সহজ হবে নির্বাচনে।

৩ ফেব্রুয়ারি তফসিল ঘোষণা করা হবে এবং ৮ অথবা ৯ মার্চে ভোট গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সচিব হেলাল উদ্দিন। চার বা পাঁচটি ধাপে এই নির্বাচন সম্পন্ন করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এবারই প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকে অনুষ্ঠিতব্য স্থানীয় এই নির্বাচনে অংশ নিতে ইতোমধ্যেই প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে নড়াইল জেলার স্থানীয় আওয়ামী লীগ দলীয় নেতাকর্মীরা।

দলীয় মনোনয়ন পেতে স্থানীয় সংসদ সদস্য থেকে শুরু করে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয়, জেলা ও উপজেলার শীর্ষ নেতাদের নিকট ভিড়তে শুরু করেছেন অনেকেই। সদ্য অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনের পর উপজেলা নির্বাচন নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রধান দু’দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির অবস্থান বিপরীত মেরুতে। যে কারণে জেলার তিনটি উপজেলায় একমাত্র ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য উপজেলা চেয়ারম্যান পদে প্রার্থীদের তোড়জোড় দেখা যাচ্ছে। প্রার্থীদের নানা প্রচার-প্রচারণা ও নাম আলোচিত হলেও একাদশ সংসদ নির্বাচনে ভরাডুবির কারণে বিএনপি বা ঐক্যফ্রন্টের সম্ভাব্য কোনো প্রার্থীর প্রচারণা কিংবা নাম শোনা যাচ্ছে না।

২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত সর্বশেষ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নড়াইল জেলায় আওয়ামী লীগ তিনটি উপজেলার মধ্যে কালিয়া আওয়ামী লীগের খান শামীমূর রহমান ওছি ও লোহাগড়ায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ ফয়জুল আমির লিটু জয়ী হন। সদর উপজেলায় আওয়ামী লীগের দলীয় অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে বিএনপির প্রার্থী মনিরুল ইসলাম জয়ী হন।

গত কয়েকদিন ধরে জেলার নড়াইল সদর, লোহাগড়া ও কালিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী সম্ভাব্য ৩৫ জন প্রার্থীদের প্রচারণা লক্ষ্য করা গেছে। তারা দলীয় সমর্থন আদায় করতে অনেকেই দলের ঊর্ধ্বতন মহলে দৌড়-ঝাপ শুরু করে দিয়েছেন। জোরে শোরেই বিভিন্ন এলাকায় তারা শোভাযাত্রাসহ জনসংযোগে নেমে পড়েছেন। পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজেদের পছন্দের প্রার্থীকে উপজেলা নির্বাচনে দলীয়ভাবে মনোনয়ন দেওয়ার দাবিও জানিয়ে আসছেন স্ব স্ব নেতাকর্মী ও সমর্থকরা।

নড়াইল সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে সম্ভাব্য প্রার্থীরা হলেন- জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন খান নিলু, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা শরীফ হুমায়ুন কবীর, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট অচিন চক্রবর্তী, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ওমর ফারুক জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক বাবুল সাহা, আওয়ামী লীগ নেতা ও চন্ডিবরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান ভূঁইয়া, জেলা আওয়ামী লীগ নেতা ও জেলা বাস ও মিনি বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাজী জহিরুল হক জহির, জেলা যুবলীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক ও ভিক্টোরিয়া কলেজের সাবেক ভিপি গাউসুল আযম মাসুম, জেলা পরিষদের সদস্য ও পৌর যুবলীগের সভাপতি বিপ্লব বিশ্বাস বিলো।

এদিকে, লোহাগড়া উপজেলায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শিকদার আব্দুল হান্নান রুনু, সাধারণ সম্পাদক এবং বর্তমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ ফায়জুর আমির লিটু, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মঞ্জুরুল করিম মুন, নোয়াগ্রাম ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান ফয়জুল হক রোম, কাশিপুর ইউপি চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান, নলদী ইউপি চেয়াম্যান আবুল কালাম অজাদ পাখী, ইতনা ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান শিয়ানুক রহমান, বিএম কামাল হোসেন, সাজ্জাদুল ইসলাম মুন্না ও আব্দুল্লাহ আল আজাদ সুজন এবং নবগঙ্গা কলেজের অধ্যক্ষ মোশারেফ হোসেন মোল্যার নাম শোনা যাচ্ছে।

কালিয়া উপজেলায় বর্তমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা খান শামীম রহমান ওছি, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মোল্যা ইমদাদুল হক, আওয়ামী লীগের জাতীয় পরিষদের সদস্য ইকরামুল হক টুকু, জেলা আওয়ামী লীগ নেতা ও কেন্দ্রীয় যুবলীগের সহ-সম্পাদক কাজী সরোয়ার হোসেন, কালিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এসএম হারুনার রশীদ, সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণপদ ঘোষ, জেলা পরিষদের নির্বাচিত সদস্য ও নড়াগাতী থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রায়হান ফারুকী ইমাম, কলাবাড়ীয়া ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদুল হাসান কায়েস, সালামাবাদ ইউপি চেয়ারম্যান এফ.এম শামীম আহম্মেদ, জেলা পরিষদের সদস্য হাদীউজ্জামান হাদী, বাঐশোনা ইউপি চেয়ারম্যান শাহ্ মো.ফোরকান মোল্যা, পহরডাঙ্গা ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান লাবু সিকদার, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মন্নু শেখ ও খাশিয়াল ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান ফরিদ শিকদারের নাম শোনা যাচ্ছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর