উপজেলা নির্বাচন: নিরাপত্তায় থাকবে গ্রাম পুলিশ

বিবিধ, নির্বাচন

ইসমাঈল হোসাইন রাসেল, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-31 14:33:58

আসন্ন পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অন্যান্য বাহিনীর সঙ্গে ভোটের মাঠে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে গ্রাম পুলিশ। শান্তিপূর্ণ ভোটের জন্য ইতোমধ্যে নিরাপত্তার ছক চূড়ান্ত করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ইসি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সাধারণ ও বিশেষ এলাকায় (পার্বত্য অঞ্চল, দীপাঞ্চল ও হাওর) পৃথক সংখ্যক আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করা হবে। তবে পরিস্থিতি বিচেনায় স্থানীয় ডিসি-এসপিরা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য সংখ্যা বাড়ানোর ক্ষমতা পাবেন।

জানা গেছে, সারা দেশে বর্তমানে ইউনিয়ন পরিষদের সংখ্যা ৪ হাজার ৫৭১টি। প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদে ১০ জন গ্রাম পুলিশ (১ জন দফাদর ও ৯ জন মহল্লাদার) রয়েছেন। এ হিসাবে বর্তমানে সারা দেশে গ্রাম পুলিশের সংখ্যা ৪৫ হাজার ৭১০ জন। তারা গ্রামের উন্নয়ন ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। পাশাপাশি চোর-ডাকাত-সন্ত্রাসীদের ধরতে তারা পুলিশকে সহযোগিতা করেন। উপজেলা নির্বাচনের নিরাপত্তা নিশ্চিতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করবে গ্রাম পুলিশ। ইউনিয়ন পর্যায়ে গ্রাম পুলিশের কাজের অভিজ্ঞতা উপজেলার ভোটের মাঠে কাজে লাগাতে চায় ইসি। সে আলোকে তাদের উপজেলা নির্বাচনের দায়িত্বে রাখার পরিকল্পনা করেছে ইসি।

সর্বশেষ একাদশ সংসদ নির্বাচনে সেনাবাহিনী, র‌্যাব, পুলিশ, বিজিবির পাশাপাশি ৬৪ জেলায় প্রায় ৪৫ হাজার ৭১০ জন গ্রাম পুলিশ ভোটের মাঠে দায়িত্ব পালন করেন। সাধারণত গ্রামাঞ্চলের জনসাধারণ ও তাদের মালামালের নিরাপত্তা নিশ্চিতের প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদে গ্রাম পুলিশ থাকে। মহল্লাদার ও দফাদারদের সমন্বয়ে গঠিত গ্রাম পুলিশের কাজ হচ্ছে ইউনিয়নের গ্রাম ও মহল্লায় প্রহরার ব্যবস্থা করা এবং পুলিশকে অপরাধ দমনে সাহায্য করা। সন্দেহজনক কোনো ব্যক্তি বা কোনো কারণে ইউনিয়নে শান্তি বিঘ্নিত হতে পারে এমন কোনো পরিস্থিতির বিষয়ে থানার ওসিকে মহল্লাদার ও দফাদার অবহিত করেন এবং ১৫ দিনে অন্তত একবার তার কাছে রিপোর্ট করেন। এছাড়াও কিছু কিছু ক্ষেত্রে মহল্লাদার ও দফাদাররা ম্যাজিস্ট্রেটের হুকুম ও ওয়ারেন্ট ছাড়াই গ্রেফতার করতে পারে। এক্ষেত্রে কেউ যদি কোনো আদালত অগ্রাহ্য অপরাধ করে বা কারো কাছে কোনো সিদেল যন্ত্র বা চোরাই মাল থাকে এবং কেউ জেলখানা থেকে পালিয়ে গ্রামে আত্মগোপন করলে। কিন্তু তাদেরকে যতদ্রুত সম্ভব থানায় সোপর্দ করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এছাড়া মহল্লাদারের আরেকটি অন্যতম প্রধান কাজ হচ্ছে জন্ম ও মৃত্যু রেজিস্ট্রারে লিপিবদ্ধ করা।

ইসির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ভোট কেন্দ্রের পাহারায় সাধারণ ভোটকেন্দ্রে দুইজন পুলিশ (অস্ত্রসহ), লাঠিসহ অঙ্গীভূত আনসার সদস্য ৯ জন (মহিলা-৩, পুরুষ-৬) ও গ্রাম পুলিশ একজন। গুরুত্বপূর্ণ ভোটকেন্দ্রে তিনজন পুলিশ (অস্ত্রসহ), লাঠিসহ অঙ্গীভূত আনসার সদস্য ৯ জন (মহিলা-৩, পুরুষ-৬) ও গ্রাম পুলিশ একজন। বিশেষ এলাকার কেন্দ্রে (পার্বত্য এলাকা, দীপাঞ্চল ও হাওর) তিনজন পুলিশ (অস্ত্রসহ), লাঠিসহ অঙ্গীভূত আনসার সদস্য ৯ জন (মহিলা-৩, পুরুষ-৬) ও গ্রাম পুলিশ একজন। আর বিশেষ এলাকার গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে চারজন পুলিশ (অস্ত্রসহ), লাঠিসহ অঙ্গীভূত আনসার সদস্য ৯ জন (মহিলা-৩, পুরুষ-৬) ও গ্রাম পুলিশ একজন মোতায়েন করা হবে। এছাড়াও র‌্যাব, বিজিবি, কোস্টগার্ড ও আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের সদস্যরা মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে টহল দেবেন।

নির্বাচন কমিশনের যুগ্ম সচিব (নির্বাচন পরিচালনা -২) ফরহাদ আহম্মদ খান বার্তা২৪.কমকে বলেন, নির্বাচনের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে সকল পদক্ষেপ নিচ্ছে ইসি। একাদশ সংসদ নির্বাচনের পর এবার সংসদ নির্বাচনেও দায়িত্ব পালন করবর গ্রাম পুলিশ। এছাড়াও অন্যান্য বাহিনীয় সদস্যরা বিগত নির্বাচনগুলোর মতই দায়িত্ব পালন করবেন। তবে ডিসি-এসপিরা পরিস্থিতি অনুযায়ী প্রয়োজনে বাড়তি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েনের ক্ষমতা পাবেন।

প্রসঙ্গত, আগামী ১০, ১৮, ২৪ ও ৩১ মার্চ চার ধাপে পঞ্চম উপজেলা পরিষদের ভোট অনুষ্ঠিত হবে। এরমধ্যে প্রথম ধাপে ৮৬ উপজেলা এবং দ্বিতীয় ধাপে ১২৪ উপজেলায় মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন প্রার্থীরা। তৃতীয় ধাপে ১২৭ উপজেলা ও চতুর্থ ধাপে ১২২ উপজেলায় ভোট হবে। পঞ্চম ধাপে বাকি উপজেলার ভোট হবে ১৮ জুন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর