‘নৌকার বিপক্ষে বিদ্রোহী প্রার্থী হবেন না’

বিবিধ, নির্বাচন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-27 00:20:27

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী ও দলের সমর্থিত কাউন্সিলর, সংরক্ষিত কাউন্সিলরদের বাইরে দলীয় কোনো প্রার্থী না থাকতে আহ্বান জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতারা। আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থীর বাইরে যে সকল আওয়ামী লীগ নেতা মনোনয়ন জমা দিয়েছেন তাদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করে দলের হয়ে কাজ করার নির্দেশনাও দিয়েছেন নেতারা। ব্যক্তি স্বার্থকে বিসর্জন দিয়ে দলের স্বার্থে কাজ করারও নির্দেশনা দেন।

বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) দুপুরে ধানমন্ডির ২৭ নম্বরে হোয়াইট হল কনভেনশন সেন্টারে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী আতিকুল ইসলাম আতিক ও দল সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থীদের নিয়ে বিশেষ বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখান থেকে কাউন্সিলরদের উদ্দেশ্যে জাতীয় নেতারা এই আহ্বান জানান।

ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমানের সভাপতিত্বে বর্ধিত সভায় বক্তব্য রাখেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক সাবেক মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা- মণ্ডলীর সদস্য তোফায়েল আহমেদ, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কর্নেল অব. ফারুক খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, সংসদ সদস্য সাদেক খান, আসলামুল হক, ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লাহ, আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী মো. আতিকুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এসএ মান্নান কচি প্রমুখ।

আওয়ামী লীগ মনোনীত কাউন্সিলর প্রার্থী ও দলীয় কর্মীরা

তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘এটা আতিকের নির্বাচন না, আতিক মেয়র হবেন, এটা আতিকের জন্য কাজ করছি না। আমরা কাজ করছি নৌকার জন্য, আমরা কাজ করছি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য। কাজ করছি দলের জন্য।’

কাজেই কাউন্সিলর পদে যাদের মনোনয়ন দিয়েছি, অনেককেই দিতে পারি নাই। দয়া করে কেউ অন্য কোনো প্রার্থী হবেন না। যদি হন মনে করবো দলের প্রতি আনুগত্য নেই। প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে মনোনয়ন বোর্ডের সকলে একমত হয়ে জনমত ও বিভিন্ন সংস্থার রিপোর্ট নিয়ে আমরা মনোনয়ন দিয়েছি। আজ থেকে ডিএনসিসি নির্বাচনের কাজ শুরু করলাম। আমরা এক ও অভিন্ন হয়ে কাজ করব।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের বক্তব্যের জবাবে তোফায়েল আহমেদ বলেন, তিনি (ফখরুল) বলেছেন নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না জেনেই আসছেন। বিএনপি অনেক কারসাজি ও ষড়যন্ত্র করবে, বিভিন্নভাবে প্রচার করবে। বিএনপি প্রতিদিন বলে যাচ্ছে নির্বাচন অবাধ এবং নিরপেক্ষ হবে না। যে নির্বাচন অবাধ এবং নিরপেক্ষ হবে না বলছেন, সেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন কেন? তিনি বলেন, এই নির্বাচন চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিতে হবে। নির্বাচন অবাধ এবং নিরপেক্ষ হবে। দক্ষতার সঙ্গে ইসি নির্বাচন পরিচালনা করবে।

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কর্নেল অব. ফারুক খান

কর্নেল অব. ফারুক খান বলেন, এই মুহূর্তে আমাদের সামনে চ্যালেঞ্জ হচ্ছে মেয়র নির্বাচন। এই নির্বাচনে তিনটি অংশ আছে একটি হচ্ছে মেয়র পদের নির্বাচন আরেকটি কাউন্সিলর আর একটি সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে নির্বাচন। এরই মধ্যে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ড বিভিন্ন আঙ্গিকে বিভিন্ন রিপোর্ট বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত দিয়েছে কে মেয়র প্রার্থী, কে কাউন্সিলর প্রার্থী ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থী। আমরা বিশ্বাস করতে চাই কোনো কাউন্সিলর প্রার্থীর বিরুদ্ধে কোনো বিদ্রোহী প্রার্থী থাকবে না। হয়তো বা আপনাদের মধ্যে থেকে কেউ কেউ আবেগের বসে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। মনে রাখতে হবে রাজনীতিতে আবেগের চেয়ে বেশি বাস্তববাদী হতে হবে। দলকে ভালোবাসতে হবে, বঙ্গবন্ধুর কথা বললে হবে না, বঙ্গবন্ধুর দলকে ভালোবাসতে হবে। নেত্রীর কথা শুধু বললে হবে না, নেত্রীর হাতকে শক্তিশালী করতে হবে। যদি কোনো ব্যক্তি নেত্রীর মনোনয়ন বোর্ডের প্রার্থীর বাইরে প্রার্থী হয় তিনি নেত্রীর হাতকে শক্তিশালী করছেন না। এদের বুঝতে হবে। আবেগ থেকে বেরিয়ে আসেন। অবশ্যই আপনাদের দলের বিভিন্ন পর্যায়ে সুযোগ দেওয়া যাবে। তাই ৯ জানুয়ারির পূর্বে দলের অন্য প্রার্থীরা প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে দলের প্রতি পূর্ণাঙ্গ সমর্থন দেবেন। তিনি প্রতিটি কেন্দ্রে কমিটি গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন।

যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ

মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীর বিজয় ছাড়া উপায় নেই। প্রতিটি নেতাকর্মীকে মাঠে নেমে কাজ করতে হবে। যে কোন মূল্যে জনগণের কাছে পৌঁছাতে হবে। দল থেকে যে সকল কাউন্সিলরদের সমর্থন দিয়েছি। আওয়ামী লীগের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে সমর্থন দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি নেতাকর্মীর দায়িত্ব হচ্ছে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীদের জয়লাভ করানো। বিকল্প নেই, আমরা দেখতে চাই না।

তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্য একটাই দলীয় সমর্থিত কাউন্সিলররা বিজয় লাভ করুক। রাজনীতি একদিনের মাঠ নয় আজ যারা পাননি কাজ করুন আগামীতে মূল্যায়িত হবেন। দল করলে নেত্রীর নির্দেশনা অনুসরণ করতে হবে, মানতে হবে। আওয়ামী লীগ করবেন আবার নিজের স্বার্থের জন্য নেত্রীর নির্দেশনা অমান্য করবেন এটা চাই না।

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, যারা দল সমর্থিত নয় তারা প্রার্থী থাকবেন না। প্রত্যাহার করবেন, বসে যাবেন। আসুন সকলে নৌকার জন্য কাজ করি। নৌকার বিপক্ষে দাঁড়িয়ে কেউ বেইমানি যেনো না করি।

এ সম্পর্কিত আরও খবর