ভারতের পশ্চিমবঙ্গের স্বনামখ্যাত নাট্যসংগঠন ‘তিলজলা ঋতু’ আয়োজিত ‘ইয়ুথ ফেস্ট ২০২১’-এর অংশ হিসেবে চলমান পাঁচ দিনব্যাপী ‘ইন্টারন্যাশনাল থিয়েটার ফেস্টিভ্যাল অনলাইন ২০২১’-এ প্রদর্শনের জন্য আমন্ত্রিত হয়েছে নাট্যসংগঠন স্বপ্নদলের দর্শকনিন্দত প্রযোজনা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘ডাকঘর’।
উৎসবে আগামী ১০ জুলাই বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় (ভারত সময় সন্ধ্যা ৭টা) ‘তিলজলা ঋতু’-এর ফেসবুক পেজ ও ইউটিউব চ্যানেল থেকে প্রদর্শিত হবে ‘ডাকঘর’ প্রযোজনাটি।
রবীন্দ্র-নাট্যদর্শনের ব্যবহারিক রূপ সৃজনে গবেষণাগার নাট্যরীতিতে নির্মিত ‘ডাকঘর’-এর নির্দেশনা দিয়েছেন জাহিদ রিপন।
এ আন্তর্জাতিক নাট্যোৎসবে ইরান, ফ্রান্স, ভারত ও বাংলাদেশের নাট্যপ্রযোজনা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে ।
‘ডাকঘর’ মূলত জীবাত্মা ও পরমাত্মার মিলনের নাটক।রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রায় সময় কবিতা, গীতি, গল্প, প্রবন্ধ, উপন্যাস বা নাটকের মতোই ‘ডাকঘর’-এরও অন্তর্সত্য- বন্ধনের বিপরীতে মুক্তির প্রত্যাশা। বালক অমলের অসুস্থতা ও তার বন্ধনমুক্ত স্বপ্নের জগতের আকাঙ্খা, রাজার চিঠির জন্য প্রতীক্ষা এবং পরিশেষে রাজপ্রতিনিধি রাজ কবিরাজের আগমনে পার্থিব সর্ববন্ধন থেকে মুক্তি- ‘ডাকঘর’ নাটকের উপজীব্য।
পুথিসর্বস্ব ও স্বার্থচিন্তা-নিয়ন্ত্রিত সংসার ও সমাজের চাপে প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ হতে বঞ্চিত হয়ে অর্থাৎ বিশ্বের অসীম আনন্দরূপের সঙ্গে যুক্ত হতে না পেরে জীবাত্মা তার স্বাভাবিক শক্তি ও সৌন্দর্য হারিয়ে ক্লিষ্ট হয়ে পড়ে। অনুরূপ রুগ্ণ-বন্দী অবস্থার বিপরীতে স্রষ্টার সৌন্দর্য-স্বরূপ উপলব্ধিতে ব্যাকুল মুক্তির আকাঙ্খা অমলকে প্রেমময় পরমাত্মা পরমযত্নে স্বীয় সান্নিধ্যে গ্রহণ করে মুক্তির শান্তি প্রদান করেন। এভাবেই যেন ‘ডাকঘর’-এ জীবাত্মা ও পরমাত্মার মিলন সংঘটিত হয়।
বৈশ্বিক মহামারি ভয়াবহ করোনা-নিয়ন্ত্রিত এ আবদ্ধকালে ‘হোম কোয়ারেনটাইন’-এর ধ্রুপদী উদাহরণ ‘ডাকঘর’ প্রযোজনা দর্শন দর্শকচেতনায় নবতর এক ব্যঞ্জনা তৈরি করবে বলে প্রত্যাশা করা যায়।
ইতোমধ্যে ‘ডাকঘর’ প্রযোজনাটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ‘বাকসা ব্রাত্য নাট্যজন’ ও তেলেঙ্গোনার ‘অভিনয় হায়দ্রাবাদ’ আয়োজিত আরও দু’টি আন্তর্জাতিক অনলাইন থিয়েটার ফেস্টিভ্যালে সফলভাবে প্রদর্শিত ও প্রশংসিত হয়েছে।