তাদের গান, গাইবেন গাঁয়ের জেলে

সুরতাল, বিনোদন

রুদ্র হক, বার্তা ২৪.কম | 2023-08-28 04:33:03

আগামী ২৬ নভেম্বর বড়পর্দায় মুক্তি পেতে যাচ্ছে রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিত পরিচালিত আলোচিত চলচ্চিত্র ‘নোনাজলের কাব্য’। চলচ্চিত্রটির জন্য দীর্ঘদিন পর সিনেমার আবহসঙ্গীত করলেন সায়ান চৌধুরী অর্ণব, গাইলেন গান। সর্বশেষ গিয়াস উদ্দিন সেলিমের পরিচালনায় ‘মনপুরা’ চলচ্চিত্রে তার সংগীতপরিচালনা দারুণ প্রশংসিত হয়েছিলো। এখনও মানুষের মুখে মুখে ফিরছে সিনেমার গানগুলো । ‘নোনা জলের কাব্য’-চলচ্চিত্রে কেমন করে ধরা দিবেন অর্ণব?

তারই নমুনা হিসেবে চলচ্চিত্রটির দু’টি গান প্রকাশিত হলো সম্প্রতি।

এ সিনেমায় অভিনয়ের পাশাপাশি অর্ণবের সংগীতায়োজনে পল্লীকবি জসিম উদ্দিনের গান ‘কী বলিবো রে আর’ কন্ঠে তুলে নিয়েছেন ফজলুর রহমান বাবু। গানটি সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে। তার পরপরই ২০ নভেম্বর মুক্তি পেলো অর্ণবের কণ্ঠে লোকগান ‘ভজোমন’

গানগুলো প্রকাশের পরপরই দারুণ সাড়া পাচ্ছেন নির্মাতা। তিনি বলেন, “অনেকদিন পর তিনি অর্ণব ভাই সিনেমায় গান করলেন। তাই, গানটি নিয়ে সবার মধ্যে একটা উত্তেজনা ছিল। প্রকাশের পর যে ধরনের ফিডব্যাক পাচ্ছি তাতে আমার নিজেরই মন ভালো হচ্ছে। অর্ণব ভাইও বেশ এক্সাইটেড ছিলেন, উনিও বেশ খুশী। অন্য গানটি পল্লীকবি জসিম উদ্দীনের গান। জসিম উদ্দীন ফাউন্ডেশনের অনুমতি নিয়ে করেছি। তারা বলেছে, ‘এটি জসিম উদ্দীনের অসম্ভব প্রিয় একটি গান ছিল, যত্ন নিয়ে করবেন।’ গানটি ফজলুর রহমান বাবু ভাইয়ের কন্ঠে অর্নব ভাই কম্পোজ করেছেন। দুজনই খুবই কমিটেড শিল্পী। আশা করি সে কথা রাখতে পেরেছি। সবাইকে শোনার আমন্ত্রণ রইলো।”

তবে, মজার ব্যাপার হলো সিনেমায় গান দু’টি ব্যাবহৃত হচ্ছে না এই তারকাশিল্পীদের কন্ঠে। সিনেমায় গানগুলো গাইছেন সিনেমার চরিত্ররা। এ দু’টো গানই গাইছেন পটুয়াখালির দুই জেলে। এ প্রসঙ্গে নির্মাতা বলেন, “আমরা আসলে, কীভাবে সিনেমা হিট করবে সেইসব ফর্মুলা মেনে সিনেমটা বানাইনি। সিনেমা একটা আর্টওয়ার্ক। এটা জেলেদের গল্প, গান যেখানে ন্যাচারালি এসেছে, সেখানে জেলেরাই গানটি গেয়েছে।”

সিনেমার আবহ সঙ্গীতেও চমক থাকবে বলে মনে করেন এ নির্মাতা। কেননা, শুটিং লোকেশন এবং অর্ণব, “আমরা যেখানে শুটিং করেছি ওখানে বিদ্যুৎ নেই। তাই পাতার শব্দ, হাওয়া এবং বাঁশির শব্দ, পানির শব্দের মতো খুব সাধারণ কিছু শব্দ নিয়ে কাজ করেছেন অর্ণব ভাই।”

এ প্রসঙ্গে অর্ণবের বক্তব্য এমন, “সিনেমায় মিউজিকের জন্য বেশি জায়গা দেয়া হয়নি। এটি একটি ভালো সিনেমার লক্ষণ। কারণ ফিল্ম মেকিং যদি ভালো হয়, সেক্ষেত্রে মিউজিকের খুব একটা বেশি প্রয়োজন নেই।”


পটুয়াখালীর প্রত্যন্ত এক চরে ১৫-২০ ঘর জেলের বসবাস। সেই জেলেপাড়ায় হঠাৎ এক ভাস্করের আগমন এবং তাকে ঘিরে গ্রামবাসীর জল্পনা কল্পনা, ভালো লাগা এবং পরিশেষে সংঘাত - এই নিয়েই 'নোনাজলের কাব্য'র গল্প। বিশ্বের বিভিন্ন নামি দামি উৎসবে প্রশংসিত চলচ্চিত্রটি সম্প্রতি জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলনেও চলচ্চিত্রটি গুরুত্বের সঙ্গে প্রদর্শিত হয়।

নোনা জলের কাব্য’- প্রযোজনা করেছেন রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিত ও ফরাসি প্রযোজক ঈলান জিরার্দ। জিরার্দ, ‘মার্চ অব দ্য পেঙ্গুইন‘, ‘গুডবাই বাফানা‘, ‘ফাইনাল পোর্ট্রেট‘-এর মতো বিখ্যাত কিছু চলচ্চিত্র প্রযোজনা করেছেন। সিনেমাটোগ্রাফি করেছেন লস অ্যাঞ্জেলসে বসবাসরত থাই শিল্পী চানানুন চতরুংগ্রোজ, তিনি ২০২০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের স্পিরিট অ্যাওয়ার্ড-এর মনোনয়ন পেয়েছিলেন।


এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ছবিটির নির্মাণ সহযোগী প্রতিষ্ঠান অমিতাভ রেজার হাফ স্টপ ডাউন। সম্পাদনা করেছেন আমেরিকার ক্রিস্টেন স্প্রাগ, রোমানিয়ার লুইজা পারভ্যু ও ভারতের শঙ্খ। শব্দ ও রঙ সম্পাদনার কাজটি হয়েছিল প্যারিসের দুটি বিখ্যাত স্টুডিওতে। ছবিটিতে মূল ভূমিকায় অভিনয় করেছেন ফজলুর রহমান বাবু, শতাব্দী ওয়াদুদ, তিতাস জিয়া, এবং তাসনোভা তামান্না। আবহ সংগীত পরিচালনা করেছেন অর্ণব।

এ সম্পর্কিত আরও খবর