জনপ্রিয় নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেছেন, ‘শিল্পকলাই যদি শিল্পের কলার চেপে ধরে তাহলে শিল্প এবং কলা দুইটারই জান যাবে’।
সম্প্রতি নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে চুক্তিভিত্তিক একজন কর্মকর্তাকে সচিবের দায়িত্ব দিয়ে ২৬ কোটি টাকা উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীর বিরুদ্ধে।
এমন খবর প্রকাশের পরপরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। এ ইস্যুতে মুখ খুললেন ফারুকীও।
ফারুকীর দাবি, তিনি সম্প্রতি মুক্তি পাওয়া তার পরিচালিত ওয়েব সিরিজ ‘লেডিজ অ্যান্ড জেন্টলমেন’ এর শুটিংয়ের জন্য আবেদন করেছিলেন। নাট্যব্যক্তিত্ব সারা যাকেরের করা আবেদন শিল্পকলা একাডেমি বাতিল করে দেয়। সে ঘটনাকে শিল্পকলার ‘মৌলবাদিতা’ বলে আখ্যায়িত করেছেন ফারুকী।
তিনি লেখেন, “লেডিজ অ্যান্ড জেন্টলমেনের শুটিং করতে চাইছিলাম শিল্পকলা অ্যাকাডেমীতে। সারা ভাবীর করা আবেদন তারা বাতিল করে দিয়েছিলেন। আমি ভাবছিলাম একটু ফ্রি হয়ে শিল্পকলার এই মৌলবাদীতা নিয়ে কিছু কথা বলবো। শিল্পকলাই যদি শিল্পের কলার চেপে ধরে তাহলে শিল্প এবং কলা দুইটারই জান যাবে। তার পর ভুলেই গেছিলাম। এটা নিয়ে আর কথা বলি নাই। আজকে খবরে দেখি শিল্পকলার ডিজির বিরুদ্ধে শতকোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ। বলা হচ্ছে, এই কাজে তাকে সাহায্য করেছে নীচের দিকের কিছু কর্মচারী।”
খবরে প্রকাশিত শিল্পকলার এমন দূর্ণীতির সঙ্গে ফারুকী মিল পেয়েছেন ‘লেডিজ অ্যান্ড জেন্টলমেন’-এর দুই চরিত্রের কথা।
“নিউজটা দেখে আমার লেডিজ অ্যান্ড জেন্টলমেনের খায়রুল সাহেব এবং মিজুর কথা মনে পড়ে গেলো। এবং মনে হইলো ঐ সময় যদি তারা আমার স্ক্রিপ্ট পড়ার সুযোগ পাইতো তাহলে তাদের ফার্স্ট রিঅ্যাকশন হইতো “ঘরের কথা পরে জানলো কেমনে?”
যাই হোক ভয়ে আছি, কবে না শোনা যায় শিল্পকলার ডিজি’র বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনের অভিযোগ। তখন না আবার ডিজি সাহেব গল্পের কপিরাইট বাবদ পয়সা চাইয়া বসেন।”
প্রায় এক যুগ ধরে জাতীয় এই প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালকের দায়িত্বে লিয়াকত আলী লাকী।
খবরে প্রকাশিত হয়, গত ৩০ জুন শিল্পকলা একাডেমির আগের সচিব নওশাদ হোসেন বদলি হলে ওইদিনই নতুন আদেশ জারি করে একাডেমির চুক্তিভিত্তিক পরিচালক সৈয়দা মাহবুবা করিমকে সচিবের দায়িত্ব দেন লাকী। তার আদেশে নতুন সচিব না আসা পর্যন্ত মাহবুবাকে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করতে বলা হয়।
দুদকে জমা হওয়া অভিযোগে বলা হয়েছে, ৩০ জুন থেকে ১৯ জুলাই পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন মাহবুবা। এ সময়ে শিল্পকলার মহাপরিচালক লাকী, সচিবের অতিরিক্ত দায়িত পাওয়া মাহবুবার মাধ্যমে প্রায় ২৬ কোটি টাকার বিভিন্ন চেকে স্বাক্ষর করান।
অর্থবছরের শেষ দিন ৩০ জুনের তারিখেই এসব স্বাক্ষর হয়। সরকারি বরাদ্দের অর্থ খরচ দেখাতেই এমন অনিয়ম দুর্নীতির আশ্রয় নেয়া হয়েছে বলে দুদকে দাখিল হওয়া অভিযোগে বলা হয়েছে।