করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পাশাপাশি নিউমোনিয়া ও শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যার কারণে এ মাসের শুরুর দিকে মুম্বাইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় লতা মঙ্গেশকরকে। বর্তমানে হাসপাতালটির আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ভারতের প্রখ্যাত এই সংগীতশিল্পী।
কিংবদন্তি এই তারকার শারীরিক অবস্থার আপডেট জানিয়ে তার ভেরিফায়েড টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে একটি পোস্ট করা হয়েছে। যেখানে লেখা হয়েছে, “লতা দিদি মুম্বাইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালের আইসিইউতেই রয়েছেন। তার চিকিৎসা চলছে। তাকে পরীক্ষামূলক ভাবে ইনভেসিভ ভেন্টিলেটরের বাইরে রাখা হয়েছে আজ (২৭ জানুয়ারি) সকালে। শারীরিক স্থিতিশীলতা দেখেই তাকে ভেন্টিলেটরের বাইরে রাখা হয়। তিনি ডক্টর প্রতীত সমদানির তত্ত্বাবধানে একটি চিকিৎসক দলের নজরদারিতে রয়েছেন। আমরা সকলের প্রার্থনা ও শুভেচ্ছাকে ধন্যবাদ জানাই।”
এদিকে, দু’দিন আগে লতা মঙ্গেশকরের পরিবারের পক্ষ থেকে ফেসবুকে একটি পোস্ট করা হয়েছে। যেখানে তারা জানিয়েছেন ৯২ বছর বয়সী এই সংগীতশিল্পীকে নিয়ে যেসব গুজব ছড়ানো হচ্ছে তাতে যেন কান না দেওয়া হয়। তারাই লতার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে সকল আপডেট দেবেন।
ভক্তদের কাছে একই অনুরোধ করেছেন রাজনীতিবীদ ও সাবেক অভিনেত্রী স্মৃতি ইরানিও।
১৯২৯ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহণ করেন লতা মঙ্গেশকর। ১৯৪২ সালে মাত্র ১৩ বছর বয়সে একজন পেশাগত কণ্ঠশিল্পী হিসেবে কাজ শুরু করেন তিনি। তারপর আর তাকে পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।
সাত দশকে সহস্রাধিক চলচ্চিত্রে গান গেয়েছেন। ভারতের ৩৬টি আঞ্চলিক ভাষা ও বিদেশি ভাষায় গান গেয়েছেন তিনি। গেয়েছেন চলচ্চিত্রের বাইরে আরও অনেক গান।
১৯৭৪ থেকে ১৯৯১ পর্যন্ত বিশ্বে সর্বাধিক গান রেকর্ড করার জন্য গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে নাম ওঠে তার। এই সময়ে তিনি ২০টি ভাষায় ২৫০০০ এর বেশি গানে কণ্ঠ দেন। কিন্তু ২০১১ সালে এ রেকর্ডটি ভেঙে দেন তারই ছোট বোন আশা ভোঁসলে।
লতা মঙ্গেশকর এ পর্যন্ত ভারতরত্ন, পদ্মবিভূষণ, পদ্মভূষণসহ অসংখ্য সম্মাননা পেয়েছেন। পেয়েছেন দাদা সাহেব ফালকে পুরস্কার, তিনবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, ফিল্মফেয়ার চারবার সেরা নারী প্লেব্যাক, ১৯৯৩ সালে আজীবন সম্মাননা এবং ১৯৯৪ ও ২০০৪ সালে দুইবার ফিল্মফেয়ার বিশেষ পুরস্কার অর্জন করেন। এছাড়া ১২ বার বেঙ্গল ফিল্ম জার্নালিস্টস’ অ্যাসোসিয়েশন পুরস্কার।