পারিবারিক প্রথা মেনে কলকাতাতে ভাসানো হল বাপ্পি লাহিড়ীর অস্থি। আউটরাম ঘাটে প্রয়াত এই সংগীতশিল্পী ও সুরকারের অস্থি বিসর্জন দিলেন তার ছেলে বাপ্পা লাহিড়ী।
মুম্বাই ছিল বাপ্পি লাহিড়ীর কর্মভূমি, কিন্তু কলকাতার সঙ্গে নাড়ির টান ডিস্কো কিংয়ের। তাই সেখানেই তার অস্থি বিসর্জন দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩ মার্চ) বাবার অস্থি নিয়ে কলকাতা শহরে পৌঁছান বাপ্পা লাহিড়ী। ছিলেন তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও।
কলকাতা বিমানবন্দরে নেমে সোজা আউটরাম ঘাটে পৌঁছায় লাহিড়ী পরিবারের সদস্যরা। এরপর গঙ্গাইতে ভাসানো হয় বাপ্পি লাহিড়ীর অস্থি। এই সম্পূর্ণ প্রক্রিয়ায় লাহিড়ী পরিবারের পাশে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে হাজির ছিলেন মন্ত্রী সুজিত বসু।
১৯৫২ সালের ১৭ নভেম্বর জলপাইগুড়িতে জন্ম বাপ্পি লাহিড়ীর। ছোটথেকেই সুরের জগতের মানুষ ছিলেন বাপ্পিদা, তার বাবা অপরেশ লাহিড়ী ছিলেন বাংলা সংগীতের অন্যতম জনপ্রিয় গায়ক। মা বাঁশরী লাহিড়ী ছিলেন শাস্ত্রীয় সংগীত শিল্পী। বাপ্পি লাহিড়ী শুধু একজন সংগীত পরিচালকই ছিলেন না, প্লে-ব্যাকও করেছেন সমানতালে। পিতা-মাতার সান্নিধ্যেই তাঁর সঙ্গীতে হাতে খড়ি। তিনি বাংলার গর্ব, বাঙালির গর্ব। ১৯ বছর বয়সে দাদু (১৯৭২) নামক বাংলা চলচ্চিত্রে প্রথম কাজ করেন শিল্পী।
আশির দশকের বলিউডে উল্কা গতিতে তাঁর উত্থান। পরপর হিন্দি ছবিতে কম্পোজ করা সুর থেকে তাঁর গানে বুঁদ হয়েছিল আসমুদ্রহিমাচল। মিঠুন চক্রবর্তীর ‘ডিস্কো ডান্সার’ ছবির মিউজিক কম্পোজ করে রাতারাতি সুপারস্টারে পরিণত হয়েছিলেন বাপ্পি লাহিড়ী।
‘ডিস্কো ডান্সার’, ‘ডান্স ডান্স’, ‘হিম্মাতওয়ালা’, ‘চালতে চালতে’, ‘শারাবি’, ‘সত্যমেব জয়তে’, ‘কম্যান্ডো’, ‘শোলা অউর শাবনাম’-এর মতো ছবির সংগীত পরিচালনার দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি, ঝুলিতে রয়েছে অজস্র হিট গান। ‘অমর সঙ্গী’, ‘আশা ও ভালোবাসা’, ‘আমার তুমি’, ‘অমর প্রেম’-সহ একাধিক বাংলা ছবিরও সুর দিয়েছেন তিনি।
গত ১৬ ফেব্রুয়ারি ‘অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া (ওএসএ)’-তে আক্রান্ত হয়ে মুম্বাইয়ের একটি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ডিস্কো কিং।