ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বায়োস্কোপ (ওটিটি প্ল্যাটফর্ম, গ্রামীণফোন) এবং দীপ্ত টিভিতে ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ার হতে যাচ্ছে বহুল আলোচিত সিনেমা ‘মিশন এক্সট্রিম’ (প্রথম খণ্ড)।
২০২১ সালের ৩ ডিসেম্বর বাংলাদেশসহ যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স ও অস্ট্রেলিয়ায় একযোগে মুক্তি পেয়েছিল সিনেমাটি। পরবর্তীতে যুক্তরাজ্য, স্কটল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড এবং মালয়েশিয়াতে মুক্তি দেয়া হয় এটি। পুলিশ অ্যাকশন ধাঁচের সিনেমাটি দেশ-বিদেশে দর্শকদের কাছে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে।
প্রযোজনা সংস্থা কপ ক্রিয়েশন আরো জানায়, সিনেমাটি আগামী মাসে মধ্যপ্রাচ্যে মুক্তির সম্ভাবনা রয়েছে।
সিনেমাটি ঈদের আগের রাতে বায়োস্কোপে এবং ঈদের দিন দুপুর ২টায় দীপ্ত টিভিতে দেখা যাবে। এর মাধ্যমে দর্শকদের দীর্ঘদিনের অপেক্ষার অবসান হতে যাচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে সিনেমার প্রযোজক এবং অন্যতম পরিচালক সানী সানোয়ার বলেন, ‘দেশে যথেষ্ট পরিমাণ সিনেমাহল না থাকায় অসংখ্য দর্শক ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও সিনেমাটি দেখতে পারেনি। এছাড়াও মুক্তির সময় করোনা ভীতির কারণে অনেকেই প্রেক্ষাগৃহমুখী ছিল না। তাই এই ঈদে সিনেমাটির ওটিটি ও টিভি প্রিমিয়ার দর্শকদের ঈদ আনন্দে একটি বাড়তি সংযোজন হয়ে উঠবে।’
প্রযোজনা সংস্থা থেকে জানা যায়, শুধুমাত্র এক বছরের জন্য স্যাটেলাইট এবং ওটিটি সত্ত্ব বিক্রয়ের মাধ্যমে তারা লাভের ঘরে পৌঁছে গেছে। তারা আরো জানায়, প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির পর পরই দেশ-বিদেশে করোনার তৃতীয় ঢেউ শুরু হওয়ায় ব্যবসা বাধাগ্রস্ত হয়েছিল যা বিকল্প আয়ের উৎস থেকে তারা পুষিয়ে নিতে সামর্থ্য হয়েছে।
প্রযোজনা সংস্থা থেকে জানা যায়, ইন্টারন্যাশনাল থিয়েট্রিক্যাল সেলস থেকেই উঠে আসে মোট বিনিয়োগের ২১ শতাংশ, ওটিটি (এক বছর) ও টিভি (এক বছর) সত্ত্ব থেকে ৪৮ শতাংশ এবং বাকি ৩১ শতাংশ এসেছে দেশীয় প্রেক্ষাগৃহ ও পৃষ্ঠপোষকদের কাছ থেকে।
এ প্রসঙ্গে সানী সানোয়ার বলেন, ‘শুধুমাত্র সিনেমা হলের টিকেটের টাকা দিয়ে সিনেমায় বিনিয়োগকৃত অর্থ উঠিয়ে আনার দিন অনেক আগেই এদেশ থেকে বিলীন হয়ে গেছে। তাই আমাদের টার্গেট ছিল বিদেশের মার্কেট, ওটিটি, স্যাটেলাইট, এয়ারলাইনস, স্পন্সরশিপ ইত্যাদি বিকল্প আয়ের উৎস। এসব উৎসের কথা মাথায় রেখেই আমরা সিনেমা বানিয়েছিলাম। এবং আমরা দেরিতে হলেও অনেকটা সফল। তবে, করোনা পরিস্থিতিতে মুক্তি না দিলে আরো ভালো ফলাফল পেতাম। সিনেমা নির্মাণের পাশাপাশি আমরা সিনেমা ব্যবসাও শেখার চেষ্টা করছি, যাতে দেশীয় সিনেমার জন্য বহুমাত্রিক ব্যবসায়িক ক্ষেত্র তৈরি হয়। একটি বিশ্ব বিখ্যাত ওটিটি প্ল্যাটফর্মে ভিন্ন ভাষার সত্ত্ব বিক্রয়ের খবরও অতি দ্রুত দিতে পারবো বলে আশা করছি।’
খুব শিগগিরই ‘ব্ল্যাক ওয়ার’ (মিশন এক্সট্রিম-২) মুক্তির ঘোষণা আসতে যাচ্ছে। প্রযোজনা সংস্থার পরিকল্পনা ছিল স্যাটেলাইট ও ওটিটি-তে মিশন এক্সট্রিম-১ প্রিমিয়ারের পর ‘ব্ল্যাক ওয়ার’ (মিশন এক্সট্রিম-২) মুক্তি দেয়ার। তাই এবার ঈদে ওটিটি ও টিভিতে প্রথম পর্ব প্রিমিয়ার নিশ্চিত হওয়ায় এখন আর দ্বিতীয় পর্ব মুক্তির তারিখ ঘোষণায় কোনো বাঁধা নেই।
‘মিশন এক্সট্রিম’র কেন্দ্রীয় চরিত্রে রয়েছেন আরিফিন শুভ। সিনেমাটি অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে রয়েছেন- তাসকিন রহমান, জান্নাতুল ফেরদৌস ঐশী, সাদিয়া নাবিলা, সুমিত সেনগুপ্ত, রাইসুল ইসলাম আসাদ, ফজলুর রহমান বাবু, শতাব্দী ওয়াদুদ, মনোজ প্রামাণিক, ইরেশ যাকের, মাজনুন মিজান, সুদীপ বিশ্বাস, সৈয়দ আরেফ, রাশেদ খান অপু, দীপু ইমাম, এহসানুর রহমান, ইমরান শওদাগর প্রমুখ।
কুল প্রেজেন্টস ‘মিশন এক্সট্রিম’ সিনেমাটি পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট (সিটিটিসি)-এর কিছু শ্বাসরুদ্ধকর অভিযান থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে নির্মাণ করা হয়েছে। এর কাহিনী, চিত্রনাট্য ও সংলাপ লিখেছেন পুলিশের এন্টি টেররিজম ইউনিটের পুলিশ সুপার সানী সানোয়ার। তার সাথে যুগ্মভাবে সিনেমাটি পরিচালনা করেছে ফয়সাল আহমেদ। সহযোগী প্রযোজনায় ছিল মাইম মাল্টিমিডিয়া ও ঢাকা ডিটেকটিভ ক্লাব।