নিজের দেশ, নিজের শহর ছেড়ে নরওয়ে-তে গিয়ে থাকতে শুরু করে চ্যাটার্জি পরিবার। দেবিকা চ্যাটার্জি ও তাঁর স্বামী আর তাঁদের দুই ছেলেমেয়ে শুভ এবং সূচি-কে নিয়ে 'পরদেশ' নরওয়েতে তাঁদের নতুন সংসার পাতালেন। কিন্তু আর ৫ জন বাঙালি মায়ের মতোই অতি সাধারণ দেবিকা। স্বামী অফিস বের হয়ে গেলেও দুই সন্তানকে নিয়ে ভালোই কাটছিল দেবিকার। কিন্তু হঠাৎ-ই বিপত্তি। মায়ের কোল থেকে দুই সন্তানকে তুলে নিয়ে গেল ওঁরা।
অভিযোগ, দেবিকা ও তাঁর স্বামী নাকি তাঁদের সন্তানদের ছেলেমেয়েদের ঠিকমত দেখাশোনা করকে পারছেন না। বাচ্চাদের নিজের কাছে নিয়ে ঘুমান, হাতে করে খাবার খাওয়ান, নজর না লাগে সেজন্য মাথায় কাজলের টিকা! সাংস্কৃতিক এই বৈষম্য দেখেই নরওয়ে সরকারের প্রতিনিধিদের মনে হয় শিশুদের দেখাশোনা ঠিক মতো করতে পারছে না চট্টোপাধ্যায় পরিবার।
বৃহস্পতিবার মুক্তি পাওয়া 'মিসেস চ্যাটার্জি ভার্সেস নরওয়ে'-এর ট্রেলারে মায়ের বুক থেকে সন্তানদের কেড়ে নেওয়ার এমনই এক হৃদয় বিদারক গল্প উঠে এসেছে। সেখানে দেখা গিয়েছে, কীভাবে মাতৃত্ব ও ছেলেমেয়েদের নিয়ে মা দেবিকা চট্টোপাধ্যায়ের আবেগকেই মানসিক ভারসাম্যহীনতার নাম দেওয়া হয়। আর ১৮ বছর পর্যন্ত তাঁর সন্তানদের তাঁর থেকে সম্পূর্ণভাবে কেড়ে নেওয়া হয়।
দেবিকা জানতে পারলেন সবই আসলে ব্যবসা! যত শিশুদের ফস্টার সিস্টেমে ওঁরা দিতে পারবেন, ততই টাকা পাবেন, তাই কিছুলোকজন এটা নিয়ে ব্যবসা শুরু করেছেন। আর এরপরেই গোটা দেশের বিরুদ্ধে গিয়ে লড়াই করলেন দেবকি চট্টোপাধ্যায়। তাঁর মাতৃত্বই তাঁকে এই লড়াইয়ে এগিয়ে দিল। ভারত ও নরওয়ে দুই দেশের আদালতের দ্বারস্থ হলেন দেবিকা, তবে সেটা তাঁর স্বামীর সমর্থন ছাড়াই। দেবিকার স্বামী শুধুই নরওয়ের নাগরিকত্ব পাওয়া নিয়ে উদ্বিগ্ন। তবে তাতে সায় দিচ্ছে দেবিকার মত মায়ের মন। দেবিকা এই লড়াইয়ে সফল হবেন কিনা, তাঁর দুই সন্তানকে ফিরে পাবেন কিনা, তার উত্র মিলবে আগামী ১৭ মার্চ…।
পরিচালিক অসীমা ছিব্বরের ছবি 'মিসেস চ্যাটার্জি ভার্সেস নরওয়ে'-এর গল্প সত্য়ি ঘটনা অবলম্বনে। আসলে এই ছবির গল্প লেখা হয়েছে কলকাতার অনুরূপ ও সাগরিকা ভট্টাচার্যের জীবনে ঘটে যাওয়া বাস্তব ঘটনা থেকে। একদিন কলকাতার বাসিন্দা সাগরিকা ভট্টাচার্যের সঙ্গেও নরওয়েতে একই ঘটনা ঘটেছিল। ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছিল তাঁর দুই সন্তান অভিজ্ঞান ও ঐশ্বর্যকে। সেই গল্পই রানি মুখোপাধ্যায় ও অনির্বাণ ভট্টাচার্যের এই ছবিতে উঠে আসবে। ছবির ট্রেলারে উঠে এসেছে সেই আবেগঘন, হৃদয়বিদারক ঘটনা।