চিত্রনায়ক রিয়াজের বিপরীতে ‘বকুল ফুলের মালা’ সিনেমার মাধ্যমে অভিনয়যাত্রা শুরু তানজিকা আমিনের। তবে ছোটপর্দায় অভিনয় করে পেয়েছেন তারকাখ্যাতি। হালে ওটিটিতে অভিষেক হয়ে ক্যারিয়ারে এসেছে নতুন মাত্রা। সম্প্রতি চরকিতে মুক্তি পেয়েছে তার ওয়েব সিরিজ ‘কালপুরুষ’। সমসাময়িক বিষয় নিয়ে বার্তা২৪.কমের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মাসিদ রণ
‘কালপুরুষ’ মুক্তি পেয়েছে কয়েক দিন হলো। অল্প সময়ে সাড়া কেমন পাচ্ছেন?
এক কথায় বলতে গেলে ‘কালপুরুষ’-এর সাড়ায় আমি সন্তুষ্ট। আর একটু ব্যাখ্যা করে বলতে গেলে, আমাদের দর্শক মূলত রোমান্টিক কিংবা থ্রিলার ধাচের গল্পই বেশি দেখে থাকেন। সেদিক দিয়ে ‘কালপুরুষ’ তাদের কাছে নতুন একটি জনরা। এটির গল্প মূলত টাইম ট্রাভেল নিয়ে। সায়েন্স ফিকশনের দেশি একটি স্বাদ রয়েছে। ফলে গড়পড়তা সাড়া আশাই করিনি।
তবে এটিও জানতাম যে, সিরিজটি যেহেতু সুনির্মিত, এর গল্পটি নিটোল, একইসঙ্গে চঞ্চল চৌধুরী, এফ এস নাঈম, জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, ইমতিয়াজ বর্ষণ, সুষমা সরকারসহ গুণী শিল্পীরা অভিনয় করেছেন, ফলে কোন দর্শক যদি নতুন কিছু দেখতে চান তাদের কাছে উপভোগ্য হবে। তাছাড়া একটা কথা বলতে চাই, দর্শক যা যা দেখতে চাইবে আমরা শুধু তাই তাই বানাবো এটা কিন্তু ঠিক না। শিল্পীর দায়িত্ব রয়েছে দর্শকের রুচি তৈরী করার। একটু রিস্ক নিয়ে যদি নতুন কিছু না করা হয়, তাহলে দর্শক আজীবন একই রুচির মধ্যেই আবর্তিত থাকবেন। সেদিক থেকে ‘কালপুরুষ’ দর্শকের রুচিতে ভিন্নতা আনার কাজ করবে বলে আমার বিশ্বাস।
‘কালপুরুষ’-এ আপনি কি ধরনের চরিত্রে অভিনয় করেছেন?
মুশকিল হলো- চরিত্র নিয়ে বেশি বললেই গল্প বেরিয়ে আসবে! এটুকু বলতে পারি, আমি খুবই সাদামাটা একটি চরিত্র করেছি। এখানে পোশাক-আশাক, সাজ-সজ্জার কোন বালাই ছিল না। তবে চরিত্রটিতে অভিনয়ের সুযোগ ছিল। নির্মাতা (সালজার রহমান) বুঝেশুনে কাজ করেছেন। তিনি জানতেন ঠিক কি ধরনের পারফরমেন্স চান আমার কাছে। ফলে অভিনয়টা করার ভালো সুযোগ ছিল। ফিল্ম সিন্ডিকেটের সঙ্গে প্রথম কাজ করলাম। অভিজ্ঞতা খুব ভালো। আশা করব তাদের সঙ্গে আরও ভালো ভালো কাজ হবে আগামীতে।
‘মহানগর ২’ ওয়েব সিরিজ দিয়ে আপনার ওটিটিতে কাজের শুরু। সিরিজটিতে আপনার অভিনয় দারুণ প্রশংসা কুড়ায়। এরপর আপনার যতোটা কাজের সুযোগ পাওয়ার কথা ছিল তা কি পেয়েছেন?
না, সেটা আমি পাইনি। আমাদের পাশের দেশেও কোন শিল্পী যদি ভালো কাজ করে সবার নজর কাড়তে সক্ষম হয়, তাহলে তার আর কাজ নিয়ে চিন্তা করতে হয় না। মেধাবী মানুষরা তাকে কাজের সুযোগ দেন। প্ল্যাটফর্মগুলো তাকে নিয়ে কাজ করতে আগ্রহ প্রকাশ করে। কিন্তু আমার ক্ষেত্রে সেটি দেখিনি। ‘মহানগর ২’ ছিল ওয়েব প্ল্যাটফর্ম হইচই-এর কাজ। সাধারণ দর্শক থেকে শুরু করে আমার সহকর্মীরা ‘মহানগর ২’-এ আমার অভিনয় পছন্দ করেছেন। তাই আশা করেছিলাম হইচই-এর সঙ্গে আরও কাজ হবে। কিন্তু এরপর তারা আমাকে আর কোনো কাজের প্রস্তাব দেননি। তবে এটা ঠিক যে, ‘মহানগর ২’-এ আমার অভিনয় দেখেই চরকি থেকে আমাকে ‘কালপুরুষ’-এর প্রস্তাব দেওয়া হয়। চরকির সঙ্গে এটাই আমার প্রথম কাজ। তাদের সঙ্গেও আরও অনেক কাজ করতে চাই।
চলচ্চিত্র দিয়ে আপনার পথচলা শুরু। সে পথ আর মাড়ালেন না কেন?
আসলে আমি যখন সিনেমা শুরু করি তখন তথাকথিত বানিজ্যিক ঘরানার ছবি বেশি হতো। তারমধ্যে ‘বকুল ফুলের মালা’ ছবিটা একটু আলাদা ছিল বলেই কাজ করতে রাজী হয়েছিলাম। পরে যেসব ছবির প্রস্তাব পেয়েছিলাম তারমধ্যে একটার গল্পও আমার মনমতো পাইনি বলে আর ছবি করা হয়নি। তবে এখন সিনেমার অঙ্গন অনেক বদলে গেছে। এখন বরং সিনেমায় আমাদের মতো মানসিকতার অভিনয়শিল্পীর কাজের ক্ষেত্র বেশি। তাই আমি আশাবাদী হয়তো শিগগিরই আমাকে আবার সিনেমায় পাওয়া যাবে।
আমাদের এখানে নারী তারকাদের ওপর প্রযোজকরা ভরসা করতে পারেন না। ফলে নারীকেন্দ্রিক কাজ সেভাবে হয়ও না। তবে বাঁধনকে নিয়ে নির্মিত হয়েছে ‘এষা মার্ডার’ ছবিটি। তিনি প্রযোজনাতেও সাহস দেখাচ্ছেন। বিষয়টি কিভাবে দেখেন?
আমার তো নারীদের এমন জয়যাত্রার গল্প শুনলে খুব গর্ব হয়। আমিও চাই এ ধরনের কাজ করতে। যদি কখনো সামর্থ হয়, আমিও চাইবো আমার প্রাণের কাছের কোন গল্প নিজের মতো করে বানিয়ে দর্শককে দেখাতে।