ভালোবাসা ও অশ্রুসিক্ত নয়নে বুলবুলকে বিদায়

সুরতাল, বিনোদন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-30 06:45:51

মুক্তিযোদ্ধা, কিংবদন্তী গীতিকার, সুরকার ও সংগীত পরিচালক আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলকে শ্রদ্ধা, ভালোবাসা ও অশ্রুসিক্ত নয়নে বিদায় জানিয়েছেন দেশের সর্বস্তরের মানুষ।

বুধাবার (২৩ জানুয়ারি) সকাল পৌনে ১১টায় তার মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নিয়ে আসলে সৃষ্টি হয় এক আবেগাপ্লুত দৃশ্যের। মরদেহ আসার আগে থেকেই ভিড় জমে যায় শহীদ মিনারের এলাকা। কেউ কাঁদছেন, কেউবা ফুল হাতে দাঁড়িয়ে রয়েছেন।

প্রথমেই রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে দেওয়া হয় সর্বোচ্চ সম্মান গার্ড অব অনার। পরে মরদেহ শহীদ মিনারের পাদদেশে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় অশ্রুসিক্ত নয়নে পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলেন পরিবারের সদস্যরা।

রাষ্ট্রপতির পক্ষ থেকে তার সহকারী সচিব কাজী ইফতেখারুল শ্রদ্ধা জানান। আওয়ামী লীগের পক্ষে শ্রদ্ধা জানান দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ। পরে ঢাবি ছাত্রদের পক্ষে ছাত্রলীগ, বাংলা একাডেমি, বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে ভিসি ড. আখতারুজ্জামান, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, বিভিন্ন গণমাধ্যমসহ অসংখ্য সংগঠন ও ব্যক্তিরা শ্রদ্ধা জানান।

সংগীত, চলচ্চিত্র, রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক, সংস্কৃতি জগতের মানুষদের পাশাপাশি সর্বস্তরের মানুষ তাকে শ্রদ্ধা ও বিদায় জানান।

শ্রদ্ধা জানানোর পর ঢাকা বিশ্বববিদ্যালয়ের ভিসি ড. আখতারুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল অনন্য সাধারণ মানুষ। তিনি শুধু শুরের জগতেই অনবদ্য হয়েছেন তা না, প্রকৃত অর্থেই সংগীতজ্ঞ। তার সৃষ্টি, তার অনবদ্য গান ও সুর মানুষের অন্তরে ছোঁয়া দেয়।’

সংগীত শিল্পী সামিনা চৌধুরী বলেন, ‘মানুষ হিসেবে তিনি কেমন ছিলেন, তা আমরা সবাই জানি। তিনি আমাদেরকে যা দিয়ে গেছেন, তা আমরা কখনই ভুলবো না।

চলচ্চিত্রকার, গীতিকার গাজি মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘বুলবুলের মতো ছেলেদের মৃত্যু হয় না। তারা শুধু ক্ষণিকের জন্য দেহ ত্যাগ করে। কিন্তু তাদের স্মৃতিময় অধ্যায় সর্বাবস্থায় দেশের মাটি ও মানুষের কাছে ভালোবাসায় থাকবে।’

নাট্যব্যক্তিত্ব মামুনুর রশিদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা একজন পরিপূর্ণ মানুষকে হারালাম। মাত্র ৬৩ বছর বয়সে সে চলে গেল। এত অল্প বসয়ে তার মরদেহ বহন করতে হবে তা ভাবিনি। এই দুঃখ অনেক দিন আমাকে স্মৃতিগ্রস্ত করে রাখবে।’

সংগীত শিল্পী কুমার বিশ্বজিৎ বলেন, ‘আমরা একজন মহিরুহী, সংগীতের মহাজনকে হারিয়েছি। আমাদের এই শূন্যতা কোনো জনমে পূরণ হবে কিনা জানি না। এই ক্ষণজন্মা মানুষগুলো প্রতিদিন, প্রতিবছর বা যুগে যুগে আসবে কিনা সন্দেহ।’

সংগীতশিল্পী সালমা কান্নাভরা কণ্ঠে সাংবাদিকদের সামনে যেন কিছুই বলতে পারলেন না। বিনয়ের সঙ্গে বিদায় নেন সাংবাদিকদের কাছ থেকে।

শ্রদ্ধা শেষে বুলবুলের মরদেহ নেওয়া হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে। সেখানে প্রথম জানাজা শেষে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনে (বিএফডিসি) নেওয়া হয় তার মরদেহ। সেখানে দ্বিতীয় জানাজা শেষ করে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে চির নিদ্রায় শায়িত হন বুলবুল।

এ সম্পর্কিত আরও খবর