টিভি নাটকের অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেত্রী তানজিন তিশা হাজির ওয়েব ফিল্ম নিয়ে। ‘পয়জন’ নামের ছবিটি পরিচালনা করেছেন সমদ্দার। ছবিটিতে তিশার বিপরীতে আছেন আবু হুরায়রা তানভীর। এই সিনেমা ও ঈদের কাজ নিয়ে বার্তা২৪.কমের সঙ্গে কথা বলেছেন তিশা। লিখেছেন মাসিদ রণ
বাস্তবেও আপনি একজন নায়িকা, ‘পয়জন’ ওয়েব ফিল্মেও একজন নায়িকার চরিত্রে অভিনয় করেছেন। চরিত্রটি আপনার সঙ্গে কতোটা মিল রয়েছে?
একটি গল্প তৈরি করতে গেলে লেখক বাস্তব অনেককিছু থেকেই ইন্সপায়ারড হন। তার মানে এই নয় যে গল্পগুলো হুবহু বাস্তবের সঙ্গে মিল রয়েছে। যেমন ‘পয়জন’ ওয়েব ফিল্মে আমি চিত্রনায়িকা রূপা মির্জা। তিনি একজন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেত্রী। আর বাস্তবে আমিও একজন নায়িকা, তবে আমি তো নাটকের মেয়ে। ফলে চলচ্চিত্র অভিনেত্রীর চরিত্র ফুটিয়ে তুলতে গিয়ে আমাকে অনেক স্ট্যাডি করতে হয়েছে। এখন দর্শক দেখার পর বুঝে নিক তাদের কাছে চরিত্রটি কতোখানি বাস্তব আর কতোখানি ফিকশন মনে হয়েছে। তবে আমি ব্যক্তিগত অভিমতের জায়গা থেকে বলব, এই চরিত্রের সঙ্গে বাস্তবের কোন নায়িকার এ টু জেড মিল নেই।
‘পয়জন’ সিনেমাটিতে কী কোনো বক্তব্য দিতে চান?
আমার কাছে মনে হয়, যে কোনো কিছু অতিরিক্ত মানেই পয়জন। আমি যদি কাউকে ভালোবাসি এবং সেটি অনেক বেশি হয়ে যায় সেটিও পয়জন হতে পারে। আবার আমি যদি কাউকে অতিরিক্ত মাত্রায় ঘৃণা করি সেটিও পয়জন হতে পারে। মোটকথা আমি ঠিক ভুল যাই করি, তা যদি অতিরিক্ত হয়ে যায় সেটা পয়জন হতে পারে। আমরা এই বক্তব্যই দিতে চেয়েছি ছবিটির মাধ্যমে। আমার সিনেমার প্রথম পোস্টারটিতে দেখবেন, সিনেমার নায়িকার পাশে একটা শুটিং সেটে পুরো ইউনিট রয়েছে। পোস্টারেই কিন্তু বোঝা যাচ্ছে যে এতে কিছু টুইস্ট রয়েছে। আর পুরো ছবিটি এমন আরও অনেক টুইস্টে ভরা। সবাইকে দেখার আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।
ঈদে আর কি কি কাজ আসছে?
‘পয়জন’ তো ঈদ উপলক্ষেই দীপ্ত প্লেতে মুক্তি পেয়েছে। এই প্ল্যাটফর্মের প্রথম কাজ ছিলো ‘সাহসিকা’। যেটার প্রধান চরিত্রে আমিই কাজ করেছিলাম। সে সময় আমাকে বেশকিছু গল্প শোনানো হয়। তখন ‘পয়জন’-এর গল্পটি শুনে সেটিই আগে করতে চেয়েছিলাম। অবশেষে দীপ্ত আমাকেই সেই কাজটি করার সুযোগ করে দিয়েছে। ফলে বুঝতেই পারছেন এটা আমার জন্য কতোটা স্পেশ্যাল একটি কাজ। এই ছবিটিই আমার এবারের ঈদের মেইন ফোকাস। ছবিটি নিয়ে আমি, আমার পরিচালক, পুরো টিম ও দর্শক- সবাই খুব এক্সাইটেড। কারণ পয়জন আমার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে ব্যতিক্রম কাজ। এই চরিত্রটি আমাকে সবচেয়ে বেশি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছিলো। সাধারনত আমাকে আমার দর্শক রোমান্টিক নাটক কিংবা মিষ্টি মেয়ের চরিত্রে দেখেছে। তবে তারা সবসময় চাইতো আমি যেন ভিন্ন ভিন্ন চরিত্রে নিজেকে মেলে ধরি। পয়জন-এ সেই সুযোগটা পেয়েছি। ভবিষ্যতে এর চেয়ে ব্যতিক্রম কিছু দেখাতে পারবো কিনা জানি না। তবে আমি চেষ্টা করবো। পুরো ক্যারিয়ারে এবারই প্রথম ঈদে এতো কম কাজ করেছি শুধুমাত্র ‘পয়জন’ ছবিটির কাজ ও রিসার্চের জন্য। এই ছবির বাইরে আমার অভিনীত মাত্র ৪-৫টি নাটক দেখতে পাবে দর্শক।
‘পয়জন’-এর নির্মাতা সঞ্জয় সমদ্দার এরইমধ্যে কলকাতার সুপারস্টার জিৎকে নিয়ে ‘মানুষ’ নামে একটি সিনেমা করেছেন। তার সঙ্গে আপনাকে বড়পর্দার কাজে দেখা যাওয়ার সম্ভাবনা আছে কী?
আমার তো বড়পর্দায় কাজ করার স্বপ্ন অনেক আগে থেকেই। তবে সঠিক সময় ও সঠিক স্ক্রিপ্টের জন্য অপেক্ষা করছি। এবার আমি নির্মাতার প্রসঙ্গে। সঞ্জয় সমদ্দার নিঃসন্দেহে একজন গুণী নির্মাতা। টিভিতে তিনি দারুণ কিছু কাজ উপহার দিয়েছেন। কলকাতার সিনেমা ‘মানুষ’-এর প্রসংশাও শুনেছি বেশ। তাছাড়া ‘পয়জন’-এ তার সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে আমার চমৎকার অভিজ্ঞতা হয়েছে। তিনি আগে থেকেই ক্লিয়ার ছিলেন যে আমার চরিত্রকে তিনি কিভাবে পর্দায় দেখাতে চান। যার ফলে আমার কাজ করাটা খুব আনন্দদায়ক জার্নি ছিল। গত সোমবার ছবিটির প্রিমিয়ার শো হয়েছে স্টার সিনেপ্লেক্সে। বড়পর্দায় নিজেকে এবারই প্রথম দেখলাম। তাতে মনে হয়েছে, আমাকে যেভাবে নির্মাতা তুলে ধরেছেন, তাতে তার সঙ্গে আরও বড় কোন প্রজেক্ট আসলে দ্বিতীয়বার ভাববো না।