চরকি অরিজিনাল সিরিজ ‘পেট কাটা ষ’ নির্মাণ করে দারুণ সাড়া ফেলেন এ সময়ের মেধাবী নির্মাতা নুহাশ হুমায়ূন। গ্রাম বাংলায় প্রচলিত দেশি ভূতের গল্প নিয়ে সিরিজটি নির্মাণ করেছিলেন নুহাশ। এবার সেই সিরিজের দ্বিতীয় কিস্তি নিয়ে হাজির হচ্ছেন এই নির্মাতা। সবচেয়ে আকর্ষনীয় বিষয় হলো, সিরিজটির গল্প লিখেছেন নুহাশের মা কবি গুলতেকিন খান!
প্রথমবারের মতো ওয়েব সিরিজের গল্প লিখলেন গুলতেকিন। শৈশবে নুহাশ তারা বাবা হুমায়ূন আহমেদকে (প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক) খুব একটা কাছে পাননি, ফলে মা’ই ছিলেন তার জীবনের সবচেয়ে ভরসার জায়গা। মায়ের কাছেই বাংলা, ইংরেজি পড়ে, অঙ্ক কষে শৈশব কেটেছে তার। বহু বছর পর সেই হোমওয়ার্কের স্মৃতিকাতর দিনে ফিরেছেন মা ও ছেলে। আবারও হোমওয়ার্ক করতে বসেছেন তারা। দুজন মিলে হিসাব কষে গল্প লিখেছেন।
মা ও ছেলে মিলে ‘পেট কাটা ষ’ সিরিজের দ্বিতীয় মৌসুমের চারটি গল্পের মধ্যে তিনটি গল্প লিখেছেন। এই কাজ নয়, নুহাশের প্রতিটি চিত্রনাট্যের সঙ্গেই মিশে আছেন গুলতেকিন খান। কীভাবে? নুহাশ বললেন, ‘যখনই কোনো চিত্রনাট্য লিখি, সেটা প্রিন্ট করে মা খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পড়েন। চিত্রনাট্যের ভালো-মন্দ নিয়ে আমরা আলোচনা করি। আমার চিত্রনাট্যের সঙ্গে মা ভীষণভাবে জড়িয়ে থাকেন।’ নুহাশ আরও বলেন, ‘‘সৃজনশীল ক্ষেত্রে কাজ করলে অনেককে পরিবার বুঝতে চায় না। কিন্তু আমার পরিবার শুধু বুঝছেই না, আমার সঙ্গে কাজও করছে। এটা আমার জন্য গর্বের ব্যাপার, আমি ভীষণ সৌভাগ্যবান।’
চরকির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেদওয়ান রনি গণমাধ্যমকে জানান, ‘পেট কাটা ষ’ সিরিজের দ্বিতীয় মৌসুমের দৃশ্যধারণ শেষের পথে। এ বছরের শেষের দিকে সিরিজটি মুক্তির পরিকল্পনা রয়েছে। আগের মৌসুমের তুলনায় এই মৌসুমের চিত্রনাট্য ভীষণ পরিণত। বিশেষ করে গুলতেকিন ম্যামের (খান) ইনপুট সিরিজটাকে অনেক সমৃদ্ধ করেছে।
গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের ওটিটি প্ল্যাটফর্ম হুলুতে মুক্তি পেয়েছে নুহাশের স্বল্পদৈর্ঘ্য ‘ফরেনারস অনলি’। এ বছর ‘পেট কাটা ষ’ ছাড়াও একাধিক আন্তর্জাতিক কাজ করেছেন তিনি। নির্মাতা নুহাশকে নিয়ে গুলতেকিন খান বললেন, ‘ও যখন যেটা করে, খুব মনোযোগ আর নিষ্ঠার সঙ্গে করে। মা হিসেবে বলছি না, দর্শক হিসেবে বলছি, নুহাশের নির্মাণ আমার খুব ভালো লাগে।’
প্রথমবার কোনো সিরিজের গল্প লেখার অভিজ্ঞতা নিয়ে গুলতেকিন বলেন, ‘‘এটা আমার জন্য অদ্ভুত সুন্দর একটি অভিজ্ঞতা ছিল। প্রথমে ভয় পেয়েছিলাম। কিন্তু নুহাশ যখন বলল সে পছন্দ করেছে, তখন মনে হলো, আমাকে খুশি করার জন্য ও ‘ভালো’ বলবে না। গল্পটা ভালো না হলে ও বলত, ‘এখানে একটু ভালো করতে হবে।’ দুজন মিলে গল্পটা লিখেছি।’’