‘চলচ্চিত্র সংস্কার রোডম্যাপ ২০২৪’ সকল স্তরের চলচ্চিত্রকর্মীদের দ্বারা তৈরি চলচ্চিত্র বিষয়ক একটি প্লাটফর্ম। এর যাত্রা শুরু হয় জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঠিক পরপর। গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সম্ভাবনাময় বাংলাদেশে চলচ্চিত্র মাধ্যমের সংস্কার ও উন্নয়নের জন্য চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টরা যা যা পরিবর্তন চান তা একটি গবেষণার মাধ্যমে একত্রিত করে ‘বুকলেট’ আকারে প্রকাশ করা হয়েছে।
আজ বিকেলে চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরে (ডিএফপি) সেমিনার হলে এক এই প্রকাশনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন প্রখ্যতা নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, নুরুল আলম আতিক, রুবাইয়াত হোসেন, প্রযোজক এহসানুল হকসহ বিভিন্ন পদভুক্ত চলচ্চিত্রকর্মী, চলচ্চিত্র শিক্ষক, আইনজীবী, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের তথ্য, প্রচারণা ও সংস্কৃতিবিষয়ক প্রতিনিধিগণ এবং সাংবাদিকবৃন্দ।
‘চলচ্চিত্র সংস্কার রোডম্যাপ ২০২৪’ শিরোনামের গবেষণাটির যাত্রা শুরু হয় গত আগস্ট মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে। অনলাইন ও অফলাইনে চলচ্চিত্রের সকল ক্ষেত্রের অংশীজনের মতামত, দাবি ও চাওয়া একত্রিত করে ‘রোডম্যাপ’ তৈরীর কাজটি অগ্রসর হয়। মতামত প্রদান কার্যক্রম চলে শতাধিক চলচ্চিত্রকর্মীর সক্রিয় উপস্থিতিতে। গবেষণাটিকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যায় প্রায় চল্লিশজন স্বেচ্ছাসেবী। এছাড়াও চলচ্চিত্র মাধ্যমে কর্মরত শ্রমজীবীদের অধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের জন্য গৃহীত উদ্যোগ - প্রস্তাবিত ‘ফেডারেল ইউনিয়ন অফ মিডিয়া প্রফেশনালস’ও একইসাথে কাজ করে চলেছে সংস্কারের এই যাত্রায়। চলচ্চিত্র শিক্ষা ব্যবস্থার সার্বিক দিক নিয়ে এই উদ্যোগের সাথে যুক্ত ছিলো বিসিটিআইসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের চলচ্চিত্র বিভাগের বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা। দীর্ঘ দুই মাস ধরে প্রাপ্ত রিসার্চ ডাটার উপর ভিত্তি করে তৈরী করা রোডম্যাপটি সকলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে।
গবেষণাপত্রটিতে বাকস্বাধীনতা পরিপন্থী আইন সংস্কার, চলচ্চিত্র শিক্ষা ও অনুদান ব্যবস্থার পরিবর্তন, স্বায়ত্তশাসিত ফিল্ম কাউন্সিল ও ফিল্ম কমিশন গঠন, দেশীয় চলচ্চিত্রকে আন্তর্জাতিকভাবে বাণিজ্যিকীকরণসহ আরও নানা বিষয়ে বিস্তারিত দিকনির্দেশনা রয়েছে।
গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে তৈরি হওয়া অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রিফর্ম বা সংস্কারকে অন্যতম প্রধান দায়িত্ব হিসেবে গ্রহণ করেছে। বিভিন্ন সেক্টরের অংশীজনদের কাছ থেকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শুরু থেকেই সংস্কারের প্রস্তাব চেয়ে আসছেন। চলচ্চিত্রকর্মীদেরও দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা একটি কাক্সিক্ষত সংস্কার। তাই বিভিন্ন জনরার চলচ্চিত্র ও অডিও ভিজ্যুয়াল মাধ্যমে কাজ করা চলচ্চিত্রকর্মীরা একত্রিত হয়ে একটি রোডম্যাপ তৈরীর কাজে অংশ নেন। এই রোডম্যাপ তৈরির জন্য গবেষণার মাধ্যমে উঠে এসেছে চলচ্চিত্রকর্মীদের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা এবং চলচ্চিত্রশিল্পের জন্য পেশাদারী একটি রূপরেখা।
দেশের সার্বিক চলচ্চিত্রের উন্নয়নের জন্য এবং যে কোন চলচ্চিত্র বিষয়ক উদ্যোগ গ্রহণের জন্য এই প্রকাশনাটি চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট মানুষের চাওয়াকে যেমন প্রকাশ করবে, তেমনি চলচ্চিত্র শিল্পের উন্নয়নে কাজ করতে চাওয়া যেকোন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান এবং সরকারকে দিক নির্দেশনা পেতেও সহযোগিতা করবে বলে আশাবাদ ব্যস্ত করেছেন সংশ্লিষ্টরা।