শোবিজ তারকাদের সংসার টেকে না, মিডিয়ার মেয়েরা ভালো না, ছেলেদের চরিত্র খারাপ- এমন কতো কথাই শোনা যায় চারপাশে। ভালো-মন্দ মিলিয়েই তো সমাজ। সব ক্ষেত্রেই ভালো-মন্দ মিলেমিশে থাকে। সবাই যে এক নয়, সে কথা ক’জন ভাবেন।
তেমনি শোবিজের এক দম্পতি প্রখ্যাত সঙ্গীতপরিচালক মইনুল ইসলাম খান ও জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী কনকচাঁপা। আজ এই দম্পতির সংসার জীবন ৪০ বছরে পদার্পণ করলো।
বিশেষ এই দিনে শিল্পী কনকচাঁপা তার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে দিয়েছেন দীর্ঘ এক আবেগঘন পোস্ট। তিনি লিখেছেন, ‘‘৪০ বছর পার হয়ে গেছে বিশ্বাসই হয় না, কারণ আমার বয়স মাত্র ২৬! অংক মিলাতে গিয়ে কেমন আবেগাপ্লুত হয়ে যাই। জীবন অনেক ছোট বলেই হয়তো সুন্দর। তবে আজ যদি উনি একটা গোলাপ দিতেন তবে আমি পৃথিবীর সব সুখী মানুষের চেয়েও সুখী হতাম। কিন্তু তিনি এগুলো পারেনই না। আমি বুঝে গেছি অনেক আগেই। এগুলো ধর্তব্যের বিষয় নয়, আসলেই আমি তার উপর খুবই সন্তুষ্ট। আমি দ্ব্যার্থহীন কণ্ঠে বলতে চাই, ‘একজন স্ত্রীর জীবন এভাবে গুছিয়ে দিতে পারে যে মানুষ তিনি পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম স্বামীদের একজন।’
আপনারা আমাদের বাকি জীবনের জন্য দোয়া করবেন এবং দোয়া করবেন দুইজন যেন একই সাথে চলে যাই কারণ একটা দিনও কেউ কাউকে ছেড়ে থাকতে পারবো না, পারবো না, পারবোই না। কেউ কারো শুন্যতা মেনে নেয়া সম্ভব না। আপনারা আমাদের জন্য দোয়া করবেন। আপনাদের দাম্পত্য জীবনের জন্য ও ফিরতি দোয়া। ফি আমানিল্লাহ।’
তবে কনকচাঁপার স্ট্যাটাস এখানেই শেষ হয়নি। গত বছরের একটি মিষ্টি স্মৃতি শেয়ার করে তিনি লিখেছেন, ‘আমি সবসময়ই বিশ্বাস করি আল্লাহ যা করেন মঙ্গলের জন্য করেন। তার পরিকল্পনার চিত্রকল্প আগে থেকে বোঝার ক্ষমতা আমাদের আছে? গত বছর ৫-১২-২৩ তারিখে আমার একটা স্ট্যাটাস মেমোরিতে পড়ে আমার জীবনসঙ্গী ইমোশনাল হয়ে গেলেন এবং আমি ঘুম থেকে উঠার আগেই শুনছি উনি আমার মাকে বলছেন, আপনার যাকে যাকে দাওয়াত দিতে ইচ্ছে করে আপনি দেন। রত্নাপাকেও একই কথা বলছেন এবং বলছেন কনকের বিয়েতে যারা ছিল তাদের সবাইকে দাওয়াত দেন।’
তারকা শিল্পী আরও লেখেন, ‘আমি ঘুমিয়ে ঘুমিয়েই প্রমাদ গুনছি যে এবার তো ৩৯ বছর হবে! এবার কেন! আয়োজন বড় করে হলে হবে ৪০ বছরের সময়ে! আমি তাড়াতাড়ি জেগে উঠে প্রতিবাদ জানাতেই উনি বললেন যে না, আগামী বছর কি হবে আমি জানি না, এই বছরই আমি এই আয়োজন করবো।’
কনকচাঁপার কলম থামে না, ‘যে বাড়িতে তোমার আমার বিয়ে হয়েছে, যে যে মেহমান এসেছিল তাদের উপস্থিতিতেই করবো, এটাই ফাইনাল। একদিনের নোটিশে তিনি আয়োজন শুরু করলেন। এতো তড়িৎ গতিতে আয়োজন করার কাজে তিনি সিদ্ধহস্ত আলহামদুলিল্লাহ। রত্নাপা খুব চেষ্টা করলেন আমাকে গাঁয়ে-হলুদ দেয়ার জন্য, আমি খুবই লজ্জা পেয়ে অনেক কষ্ট করে তা প্রত্যাখ্যান করলাম। তারপর খুবই অল্প সময়ের মাঝে উনি বিরাট আয়োজন করলেন সেই বাড়িতে যে বাড়ি থেকে আমি আমার এই সংসার শুরু করেছিলাম।’
‘তো যেটা বলছিলাম যে, গত বছর এই আয়োজন না করলে এ বছর আমি ঠিকই বায়না ধরতাম। কিন্তু ফারিয়া থাকতো অস্ট্রেলিয়া আর এবার আমি রাজনৈতিক কাজ শুরু করেছি, এখন আমার আর কোন দিকেই মনোযোগ নাই, থাকার কথাও না। তো ৪০-এর আয়োজন ৩৯-এ হয়ে খুবই ভালো হয়েছে অর্থাৎ আল্লাহ যা করেন তা ভালোর জন্যই করেন। আমরা তা পরে বুঝি।’
প্রসঙ্গত, কনকচাঁপা বিগত কয়েক বছর ধরে গানে খুব একটা সরব নয়। অল্প বিস্তর কনসার্ট-এ গেয়েছেন। তবে তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ সরব। তার লেখার হাত খুব ভালো। তবে সম্প্রতি ফেসবুক পেজে তার রান্নার ভিডিওগুলো নেটিজেনরা দারুণ পছন্দ করছে।