দেশবরেণ্য সংগীতশিল্পী সুবীর নন্দীর শারীরিক অবস্থা সংকটাপন্ন। সিঙ্গাপুরে নেওয়ার পর তিনবার হার্ট অ্যাটাক করেছেন তিনি। এছাড়া ঢাকায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও একবার হার্ট অ্যাটাক হয়েছিল তার। সব মিলিয়ে সুবীর নন্দীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছে। জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে লড়ছেন তিনি!
সুবীর নন্দীর চিকিৎসার বিষয়টি সমন্বয় করেছেন শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের সমন্বয়ক সামন্ত লাল সেন। তিনি সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছেন।
সুবীর নন্দীর শারীরিক অবস্থার কথা জানিয়ে তিনি বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘তার অবস্থা ভালো না, খুবই ক্রিটিক্যাল অবস্থায় আছে। শরীরের মাল্টিপল অরগান ফেইলিওর হয়েছে। সবদিক দিয়েই অবস্থাটা খুবই খারাপ। সিঙ্গাপুরের চিকিৎসকরা তাদের সর্বোচ্চ চেষ্টাটা করছেন। যেহেতু অনেক অরগানই ফেইল করছে, বলা মুশকিল কখন কি হয়।’
গত ১৪ এপ্রিল রাতে সিলেট থেকে ঢাকায় ফেরার পথে ট্রেনে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন সুবীর নন্দী। এরপরই তাকে ঢাকার সিএমএইচে নেওয়া হয়। সিএমএইচের জরুরি বিভাগে থাকাকালীন হার্ট অ্যাটাক করেন তিনি। পরে তাকে লাইফ সাপোর্ট দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য গত ৩০ এপ্রিল সিঙ্গাপুর নেওয়া হয় একুশে পদকপ্রাপ্ত এই শিল্পীকে। সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের এমআইসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি।
১৯৫৩ সালের ১৯ নভেম্বর হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং উপজেলার নন্দীপাড়ায় সুবীর নন্দীর জন্ম। তিনি সিলেট বেতারে প্রথম গান করেন ১৯৬৭ সালে। এরপর ঢাকা রেডিওতে সুযোগ পান ১৯৭০ সালে। রেডিওতে তার প্রথম গান ‘যদি কেউ ধূপ জ্বেলে দেয়’।
বেতার থেকে টেলিভিশন, তারপর চলচ্চিত্রে গান গেয়েছেন সুবীর নন্দী। ১৯৮১ সালে তার প্রথম একক অ্যালবাম ‘সুবীর নন্দীর গান’ প্রকাশিত হয়। চলচ্চিত্রে তিনি প্রথম গান করেন ১৯৭৬ সালে ‘সূর্যগ্রহণ’ চলচ্চিত্রে। ১৯৭৮ সালে মুক্তি পায় আজিজুর রহমানের ছবি ‘অশিক্ষিত’। এ সিনেমায় সাবিনা ইয়াসমিন আর সুবীর নন্দীর কণ্ঠে ‘মাস্টার সাব আমি নাম দস্তখত শিখতে চাই’ গানটি তুমুল জনপ্রিয়তা পায়।
সুবীর নন্দী ৪০ বছরের দীর্ঘ ক্যারিয়ারে আড়াই হাজারেরও বেশি গান গেয়েছেন। স্বীকৃতি হিসেবে পাঁচবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন।